সেতুতে ট্রেন উঠলে শুরু হয় কাঁপুনি

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২২, ১২: ০৩

লালমনিরহাটে ১২৩ বছর আগে নির্মাণ করা হয় তিস্তা রেলওয়ে সেতু। মুক্তিযুদ্ধের সময় এর ৩৫ মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মেরামত করা হলেও ঝুঁকি থেকে যায়। পুরোনো এই সেতুতে ট্রেন উঠলে কাঁপুনি শুরু হয়। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে সচেতন মহল।

এদিকে ওই স্থানে নতুন রেলসেতু নির্মাণের জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেওয়া হলেও তাতে সাড়া পাননি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর।

জানা গেছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা এলাকায় ১৮৯৯ সালে নির্মিত হয় রেলসেতু। এই সেতু দিয়ে ১৪টি ট্রেন প্রতিদিন যাতায়াত করে। সেতুটিতে ১৩ স্প্যান রয়েছে। ১ হাজার ৯৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটির ৩৫ মিটার অংশ মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

স্বাধীনতার পর মেরামত করে রেল যোগাযোগ পুনরায় স্থাপন করা হয়। রেলসেতুটি ১৯৭৮ সাল থেকে সড়কসেতু হিসেবেও ব্যবহার শুরু হয়। পরে ২০১২ সালে পাশে আরেকটি সড়কসেতু হলে রেলসেতুতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়। লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার লাখ লাখ মানুষকে রেলে পাড়ি দিতে হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতু দিয়েই। লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ের তত্ত্বাবধানে থাকা রেলসেতুটি লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা এলাকায় তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত।

সেতু এলাকার বাসিন্দা মজনু সরকার জানান, ওই সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলার সময় গার্ডারের অবস্থা নড়বড়ে হয়ে যায় এবং অতিমাত্রায় কম্পন অনুভূত হয়।

গোকুন্ডা ইউনিয়নের বাসিন্দা শাহীন ইসলাম বলেন, আগে এই রেলসেতু দিয়ে ট্রেন, বাসসহ অন্য যানবাহন চলাচল করার সময় ভয় লাগত। কিন্তু পরে আলাদা সড়ক সেতু হয়ে চাপ কমলেও এখনো ওই সেতুতে ট্রেন উঠলে কাঁপুনি শুরু হয়।

গোকুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ সরকার টোটন বলেন, ‘রেলসেতুতে যেকোনো সময়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা  হওয়ায় আশঙ্কা রয়েছে। সে কারণে ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে মনে করি।’

লালমনিরহাট রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম আজকের পত্রিকাকে জানান, ঝুঁকি বিবেচনায় একই স্থানে নতুন করে একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব রেলপথ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন ও নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করা হবে।

রেলসেতু নির্মাণে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর। তিনি জানান, ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে সেতু বিভাগ ২০১২ সালে ওই রেলসেতুর পূর্ব পাশে নতুন একটি সড়কসেতু চালু করলেও রেলসেতুটি আর নতুন করে নির্মাণ বা বড় ধরনের কোনো সংস্কার হয়নি। ফলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনায় আশঙ্কা, উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা বেড়েই চলছে ওই সেতু ঘিরে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত