কাপ্তাই হ্রদে কমেছে বড় জাতের মাছ

হিমেল চাকমা, রাঙামাটি
প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮: ৫৭

কাপ্তাই হ্রদে কমে আসছে কার্পসহ দেশীয় বড় জাতের মাছ আহরণ। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধে রাজস্ব আদায় হওয়া মাছের মাত্র ৮ টন ছিল বড় মাছ। অথচ ২০২২-২৩ অর্থবছরে হ্রদ থেকে কার্প জাতীয়সহ অন্য বড় মাছের পরিমাণ ছিল ৪৮ টন। মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট বলছে, এই অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে কাপ্তাই হ্রদের মাছ আরও কমে যাবে। 

১৯৬০ সালে কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে কাপ্তাই জল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হলে সৃষ্টি হয় ৭২৫ বর্গমাইলের কাপ্তাই হ্রদ। এই হ্রদ তখন মাছের ভান্ডারে পরিণত হয়। কিন্তু সেখানে এখন শুধু কাচকি ও চাপিলার আধিক্য। বর্তমানে এই দুটির ওপর নির্ভর করে রাজস্ব আদায় করছে কাপ্তাই হ্রদের মাছের ব্যবস্থাপনায় থাকা বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)। 

হ্রদে মাছ কমার বিষয়ে গবেষণাপত্রে নাব্য কমে যাওয়া, নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার ও বিএফডিসির দুর্বল ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রজনন ক্ষেত্রগুলোর কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগে এবং কিছু মানবসৃষ্ট কারণে ধ্বংস হয়েছে। 

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ইশতিয়াক হায়দার বলেন, ‘মৎস্যসম্পদ রক্ষায় এখনই একটি শক্তিশালী ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা দরকার। নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার বন্ধ নিশ্চিত করতে হবে। প্রজনন ক্ষেত্রগুলোর পুনরুদ্ধারে কাজ করতে হবে। অভয়াশ্রমের জন্য যা যা করণীয় তা করতে হবে।’ 

রাঙামাটি মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন জানিয়েছে, গত বছর প্রায় ৩ কোটি টাকায় ৫৬ টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা ছাড়া হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে হ্রদ থেকে মাছ আহরণ হয় ১৭ হাজার ৫১ টন। কার্প জাতীয়সহ অন্য বড় মাছের পরিমাণ মাত্র ৪৮ টন। চলতি অর্থবছরে এ পর্যন্ত ৭ হাজার ২৫৬ টন আহরণ করা হয়েছে, যার মাত্র ৮ টন ছিল বড় মাছ। আহরিত মাছের মধ্যে ৯৬ ভাগ কাচকি ও চাপিলা, যা থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১১ কোটি ১৩ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। 

রাঙামাটি মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক মো. আশরাফুল আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘কাচকি ও চাপিলা বেড়েছে হ্রদে। এগুলো কার্প জাতীয় মাছের খাবার খেয়ে শেষ করছে। যত দিন কাচকি ও চাপিলার আধিক্য থাকবে, তত দিন কার্প জাতীয় মাছ বৃদ্ধিতে সময় লাগবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত