খাল সংস্কার না হলে ডুববে নগরী

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ২৫
Thumbnail image

শুকনো মৌসুমের মধ্যে অসমাপ্ত খালগুলো সংস্কারকাজ শেষ করতে না পারলে আগামী বর্ষায় চট্টগ্রাম নগরী ফের জলাবদ্ধতার কবলে পড়তে পারে। তাই দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর মহানগরীর জলাবদ্ধতা সংক্রান্ত অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় জোর দিয়েছেন বক্তারা।

গতকাল রোববার সকালে টাইগারপাসে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) অস্থায়ী কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে দুই বছর পর এই সভা হয়। এতে চসিকসহ চট্টগ্রাম ওয়াসা, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), বন্দর কর্তৃপক্ষ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের প্রধান এবং প্রতিনিধিরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন।

সভাপতির বক্তব্যে মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী নগরীর জলাবদ্ধতার সংকট শুকনো মৌসুমের মধ্যেই শেষ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, প্রকল্পের অধীনে ৩৬টি খালে কাজ হচ্ছে। এর মধ্যে ১৮টি খালের কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। যে খালগুলোর কাজ শেষ হয়েছে সেগুলো সম্পূর্ণভাবে পানি চলাচলের উপযোগী করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন মেয়র। বলেন, এ ছাড়া যে ২১টি খাল রয়েছে, তার প্রকৃত অবস্থা জেনে নতুন প্রকল্প নিতে হবে।

মেয়র প্রকল্পের বাইরে থাকা খাল-নালাসমূহের তালিকা চসিকে হস্তান্তর করতে সিডিএ কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান। জবাবে সিডিএ চেয়ারম্যান জহুরুল আলম দোভাষ ছোট-খাট যে ড্রেনগুলোর কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে তা চসিককে বুঝে নিতে বলেন। এ ছাড়া যেসব স্লুইসগেটের নির্মাণকাজ তাঁরা ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছেন তা পরিচালনায় দায়িত্ব নিতে চসিকের প্রতি আহ্বান জানান।

মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন সংস্থার প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহ আলী বলেন, প্রকল্পের ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। শুকনো মৌসুমের মধ্যে নগরীর ১৮-২০টি খালের কাজ পুরোপুরি শেষ হবে। সব ঝুঁকিপূর্ণ ড্রেনের ওপর স্ল্যাব স্থাপন করা হবে। দুর্ঘটনা রোধে খোলা খালগুলোর পাশে ২ ফুট উঁচু রেলিং করা হবে বলেও জানান তিনি।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান খান বলেন, কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে নগরীর ১৪টি গুরুত্বপূর্ণ খালের সংযোগ রয়েছে। এই খালগুলো দিয়ে বর্জ্য পড়ে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। বে-টার্মিনাল নির্মাণের আগে সকল সেবা সংস্থার মতামত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) শিবেন্দু খাস্তগীর বলেন, বে-টার্মিনাল নির্মাণের কারণে পানি নিষ্কাশনে যাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে।

ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম ওয়াসার পয়োনিষ্কাশন প্রকল্প ও রোড কাটিংয়ের কাজ সমন্বয় করতে একজন প্রকৌশলীকে লিয়াজোঁ করার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।

সিএমপির উপকমিশনার (ট্রাফিক) তারেক আহম্মেদ বলেন, উন্নয়নকাজের জন্য রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

বৈঠকে বলা হয়, চট্টগ্রাম ওয়াসার ড্রেনেজ মাস্টারপ্ল্যান ২০১৬ অনুযায়ী নগরীতে ৫৭টি বড় খাল রয়েছে। যেগুলোর দৈর্ঘ্য ১৬৫ কিলোমিটার। এ সবের মধ্যে সিডিএর মেগা ড্রেনেজ প্রজেক্টে ৩৬টি খাল খনন করা হচ্ছে। এর দৈর্ঘ্য ৯৭ কিলোমিটার। এগুলো থেকে ৯ দশমিক ৫ লাখ ঘনমিটার মাটি তোলা করা হয়েছে। বাকি ২১টি খালের দৈর্ঘ্য ২১ কিলোমিটার। এ গুলো থেকে ৪ দশমিক ৭ লাখ ঘনমিটার মাটি তোলা হয়েছে।

নালা পরিষ্কারের তথ্য তুলে ধরে সভায় জানানো হয়, চট্টগ্রাম ওয়াসা ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যান ২০১৬ অনুযায়ী নগরীতে নালা আছে ৫০০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৩০২ কিলোমিটার নালা সিডিএ মেগা ড্রেনেজ প্রজেক্টের আওতায়। বাকি ১৯৮ কিলোমিটার নালা ইতিমধ্যে পরিষ্কার করা হয়েছে।

চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সঞ্চালনায় পর্যালোচনা সভায় চসিকের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, চউক সচিব মো. আনোয়ার পাশা প্রমুখ বক্তব্য দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শপথ নিয়েই বাইডেনের নীতি বাতিল ও ১০০ নির্বাহী আদেশের ঘোষণা ট্রাম্পের

আয়রন রঙের শার্ট, কালো প্যান্ট পরবে পুলিশ

বিচার বিভাগের সমস্যা তুলে ধরলেন বিচারক, আনিসুল হক বললেন ‘সমস্যা কেটে যাবে’

শাহজালাল বিমানবন্দরে চাকরি নেননি মনোজ কুমার, বিজ্ঞাপনচিত্র নিয়ে বিভ্রান্তি

সিলেটে রিসোর্টে ৮ তরুণ-তরুণীকে জোর করে বিয়ে, কিছু না করেই ফিরে এল পুলিশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত