ডেঙ্গুর প্রকোপ রূপপুরে আক্রান্ত দেশি-বিদেশিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী ও ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩: ০৬

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে বাড়তে শুরু করেছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত সেখানে ৪৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদিকে পাবনার ঈশ্বরদীতে সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা নিয়েছেন ১৫০ জন ডেঙ্গু রোগী।

আক্রান্ত এসব রোগীর অধিকাংশই নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত দেশি-বিদেশি নাগরিক।

রামেক হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের বেশির ভাগই এসেছেন পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর থেকে। গত মঙ্গলবার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম রাকিবুল ইসলাম। তিনি ঈশ্বরদী উপজেলার বাসিন্দা। মাস খানেক আগে থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে কাজ করছিলেন তিনি। হাসপাতালে নেওয়ার দুই দিন পর মারা যান তিনি।
রামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালে হাসপাতালে পাবনা, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার মোট ২২ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিলেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়া তাঁদের মধ্যে ১৬ জন পাবনায় ছিলেন। ওই ১৬ জনের মধ্যে ৭ জন ছিলেন পাবনার রূপপুরেও। অন্য ৬ জনের মধ্যে ৫ জন এসেছেন ঢাকা থেকে। রাজশাহীর আরেক রোগী ঢাকা কিংবা পাবনা না গেলেও আক্রান্ত হয়েছেন।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, হাসপাতালে সব সময় ধারণক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি রোগী থাকেন। তাই হঠাৎ করে বিশেষ কোনো রোগী বেড়ে গেলে চিকিৎসা দিতে সমস্যায় পড়তে হয়। তারপরও ডেঙ্গু রোগীদের বিশেষ ব্যবস্থায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সময়মতো হাসপাতালে এলে চিকিৎসায় সমস্যা হবে না।

এদিকে পাবনার ঈশ্বরদীতে আক্রান্তের হিসাব অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। এ ছাড়া সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৫০ জন রোগী। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়াও পাবনা, রাজশাহী ও ঢাকায় ২৫ জনের অধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। আক্রান্তদের ৯০ ভাগই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মী। বাঙালি ছাড়াও আক্রান্তের তালিকায় রয়েছেন রুশ নাগরিকেরা।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ও ডেঙ্গু ইউনিটের প্রধান শফিকুল ইসলাম শামীম বলেন, বিগত বছরের তুলনায় ঈশ্বরদীতে এবার ডেঙ্গু আক্রান্তের হার উদ্বেগজনক। এ কারণে হাসপাতালে ডেঙ্গুর আলাদা ইউনিট চালু করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আক্রান্ত রোগীর অনেকে বাইরে থেকে এসেছেন। আবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর মাধ্যমে অন্য ব্যক্তির শরীরে ডেঙ্গু ছড়িয়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

রূপপুর প্রকল্পের সাইট ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুস বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন রাশিয়ান নাগরিক রয়েছেন। তাঁরা ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।  

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত