Ajker Patrika

মা ও মেয়েকে নির্যাতন গ্রামছাড়া পরিবার

বদরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ মে ২০২২, ১৭: ০০
মা ও মেয়েকে নির্যাতন গ্রামছাড়া পরিবার

বদরগঞ্জে অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে মা ও মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

উপজেলার কুতুবপুর বালুয়াপাড়া গ্রামে গত বুধবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে পরিবারটি গ্রামছাড়া।

অভিযোগ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় এক তরুণী ভ্যানে করে বদরগঞ্জ শহরে যাচ্ছিলেন। পথে এলাকার চার যুবক ভ্যানের এক যাত্রীসহ ওই তরুণীকে তুলে নিয়ে পরিত্যক্ত বাড়িতে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। মেয়েটি চিৎকার দিলে যুবকেরা তাঁকে চরিত্রহীন অপবাদ দিয়ে আমগাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। সঙ্গে ভ্যানের অপরিচিত যাত্রীকেও বাঁধা হয়। পরে তাঁরা প্রচার চালান, তরুণী এই ছেলের সঙ্গে দেহ ব্যবসার উদ্দেশ্যে শহরে যাচ্ছিলেন। এ কথা শুনে মেয়েটির ওপর শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধারে তাঁর মা এগিয়ে আসলে তাঁকেও গাছে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়। এ সময় মেয়েটির বাবা সেখানে গেলে তাঁকেও লাঠি দিয়ে পেটানো হয়।

তরুণী অভিযোগ করেন, ওই দিন রাত ৯টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গাছের সঙ্গে বেঁধে তাঁদের লাঠি দিয়ে পিটিয়েছেন গ্রামপুলিশ জান্নাতের নেতৃত্বে এলাকার ১৫ থেকে ২০ জন। পরে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এসে তাঁদের উদ্ধার করে বদরগঞ্জ শহরে তাঁর ভাইয়ের বাসায় রেখে আসেন।

তরুণী বলেন, ‘এলাকার লোটাস, নুরুজ্জামান, মিল্টন ও বাটুল মিথ্যা অপবাদ দিয়ে পিটিয়েছেন। জখম স্থানগুলোর ছবি তুলে পুলিশকে দিয়েছি। কিন্তু পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। নির্যাতনকারীরা সোমবার সকালে ইউপি সদস্য আকমলকে সঙ্গে নিয়ে আবার গাছে বেঁধে মারার হুমকি দিয়েছেন।’

মেয়েটির মা বলেন, ‘মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার মেয়েকে রাস্তা থেকে ধরে এনে মারধর করেছেন। মেয়েকে উদ্ধার করতে গেলে তাঁরা আমাকেও গাছে বেঁধে মারধর করে গ্রামছাড়া করেন। পরে থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু গ্রামপুলিশ জড়িত থাকায় দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ।’

মারধরের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে গ্রামপুলিশ জান্নাত বলেন, ‘এলাকার মানুষ ফোন করে আমাকে ঘটনাস্থলে ডেকে নেন। মানুষের রোষানল থেকে ওই তরুণীকে রক্ষা করতে তাঁকে জুতা দিয়ে দুই-চারটি মাইর দিয়েছি।’

মেয়েটির পরিবারকে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ইউপি সদস্য আকমল হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানতাম না। থানায় অভিযোগ হওয়ার পর জেনেছি। তাই মেয়েটিকে আপস করার কথা বলেছি।’

যোগাযোগ করা হলে কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাক আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, ‘খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে ওই তরুণীসহ তাঁর পরিবারকে উদ্ধার করে তরুণীর ভাইয়ের বাসায় রেখে আসি। মেয়েটি চরিত্রহীন। কিন্তু গ্রামের মানুষ তাঁকে পিটিয়ে ঠিক করেনি।’

এ ঘটনায় ছয় দিনেও ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান আপস করেছিলেন। তাই ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যদি তরুণীর পরিবার চান তাহলে আজই থানায় মামলা নথিভুক্ত করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিলুপ্তের সিদ্ধান্ত হয়নি, নাহিদের মন্তব্যের জবাবে উমামা

আ.লীগ নেতার গ্রেপ্তার নিয়ে রাজশাহীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত