মালি ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী দিয়ে চলছে চিকিৎসা

কাউখালী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৭: ১৪
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ৫৪

পিরোজপুরের কাউখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক ও লোকবল না থাকায় সেবাবঞ্চিত হচ্ছে প্রায় দেড় লাখ মানুষ। এ ছাড়া হাসপাতালে তিন যুগের বেশি সময় ধরে কোনো নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়নি। এ অবস্থায় জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়েই চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। এদিকে হাসপাতালের চিকিৎসকদের জন্য নেই কোনো কোয়ার্টার। থাকার ব্যবস্থা না থাকার ফলে চিকিৎসকেরা হাসপাতালে থাকতে চান না।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য বিভাগের ১০৫টি পদের ৩১টি পদই শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে জুনিয়র কনসালট্যান্ট সার্জারি, মেডিসিন, গাইনি, অ্যানেসথেসিয়া ও মেডিকেল কর্মকর্তার ৫টি পদ শূন্য রয়েছে। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফার্মা ও ল‍্যাবে ৪টি পদ, হিসাবরক্ষক, ভান্ডাররক্ষক, অফিস সহকারী, স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য সহকর্মী, টিএলসিএসহ মোট ১৬ পদ শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া অফিস কর্মচারী ওয়ার্ডবয় ৩ জনে ১ জন, আয়া ৩ জনে ১ জন রয়েছে। কুক পদটি শূন্য রয়েছে। এম এল এস এস ৪ জনের পরিবর্তে রয়েছে ১ জন। ঝাড়ুদারের ৫ পদের দুটিই শূন্য।

অন্যদিকে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্রগুলোতেও রয়েছে জনবলসংকট। সব মিলিয়ে উপজেলার স্বাস্থ্য বিভাগের ৭৫টি পদ শূন্য থাকায় স্বাস্থ্যসেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে জনবলসংকটের কারণে জরুরি বিভাগে ওয়ার্ডবয় দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। দেখা যায় হাসপাতালের মালি ধলু ওয়ার্ডবয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী মাছুম হোসেন তিনিও ওয়ার্ডবয়ের কাজ করছেন। জরুরি বিভাগে কোনো রোগী ভর্তি হলে তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা. সেলাই, ব্যান্ডেজসহ নানা কাজের সহযোগী হিসেবে তাঁরা কাজ করছেন।

হাসপাতালের মালি ধলু বলেন, ‘হাসপাতালে কোনো ওয়ার্ডবয় নেই। ওয়ার্ডবয় না থাকার কারণে আমাদের কাজের বাইরেও রোগীদের বাঁচানোর জন্য আমাদের জরুরি বিভাগে কাজ করতে হয়।’

হাসপাতালে বহির্বিভাগের রোগী নিবাসী ইমাম হোসেন বলেন, ‘হাসপাতালে ভবনের দুরবস্থা এবং জনবলসংকট। যার কারণে হাসপাতালে সঠিকভাবে চিকিৎসা পাওয়া যায় না। হাসপাতালে অনেক সময় পার করতে হয়।’

হাসপাতাল এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা পেয়ারু ও নয়নসহ অনেকে অভিযোগ করেন বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান প্রায়ই প্রশিক্ষণ, অফিশিয়াল কাজে ঢাকায় থাকেন। যার ফলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. খালেদা খাতুন রেখা জানান, গত শুক্রবার হাসপাতালে অসুস্থ রোগীর চিকিৎসার খোঁজ নিতে গেলে তিনিও দেখতে পান মালি ধলু তিনি নিজেই জরুরি বিভাগে সেলাই ব্যান্ডেজসহ নানা কাজ করছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে পর্যাপ্ত জনবল নেই। জনবল কম থাকায় জরুরি বিভাগে সহায়তা করার জন্য পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের কাজে লাগানো হয়। তবে প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল নিয়োগ দিলে তাঁদের হাসপাতালের কাজে ব্যবহার করা হবে না।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত