শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে চিন্তিত অভিভাবক ও শিক্ষকেরা

বদরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ০৮: ৩৩
আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৪: ৫০

করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন বদরগঞ্জের অভিভাবক ও শিক্ষকেরা। তাঁরা মনে করছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে অপূরণীয় ক্ষতি হবে শিক্ষার্থীদের। অনেক শিক্ষার্থী বাল্যবিবাহের শিকার হবে।

উপজেলার শাহাপুর গ্রামের চকলেট ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের তিন সন্তান স্কুলে পড়ে। স্কুল খোলা থাকলে তারা সকাল ও সন্ধ্যায় বাড়িতে পড়তে বসে। বন্ধ থাকলে তাঁরা বই হাতে নেয় না। গেল করোনায় টানা দেড় বছর স্কুল বন্ধের সময়টাতে কখনো বই হাতে নেয়নি। সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বাবা শফিকুল ইসলাম চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘মুইও মূর্খ (অশিক্ষিত), মোর স্ত্রীও মূর্খ। স্কুলোত মাস্টারেরা যেটা পড়া দেয়, ছইলেরা বানান করে বাড়িত সেটাই পড়ে। কিন্তু সরকার করোনায় আবার ১৫ দিন স্কুল বন্ধ দিল। করোনা বেশি হলে বন্ধ আরও বাড়তে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সব জায়গায় মানুষ গিজ গিজ করছে। কারও মুখোত মাস্ক নাই। কোথাও স্বাস্থ্যবিধি নাই। খালি স্কুলোতই সমস্যা।’

এমদাদুল হক নামে আরেক অভিভাবক বলেন, ‘স্কুল খোলা থাকলে সন্তানদের বাড়িতে লেখাপড়ার চাপ থাকে। করোনায় স্কুল বন্ধ থাকায় সন্তানদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে।’

ঘাটাবিল শহীদ স্মৃতি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান আলী বলেন, ‘গেল করোনার মতো এবারও টানা স্কুল বন্ধ থাকলে স্কুলে আর শিক্ষার্থীই পাওয়া যাবে না। স্কুল বন্ধ থাকায় অনেক অভিভাবকের মাথার বোঝা হয়েছিল মেয়েরা। এ কারণে অল্পে বয়সে বিয়ে দিয়েছেন।’

শাহজাহান নামে এক শিক্ষক জানান, দেড় বছরে তাঁর বিদ্যালয়ের প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়েছে। তাঁরা স্কুল ছেড়ে স্বামীর সংসার করছে।’

করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থীর বাল্যবিবাহের কথা জানান রাধানগর পাঠানপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন, মাদারগঞ্জ সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোকছেদুল হক ও আফতাবগঞ্জ দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল আহাদ সরকার।

মোকছেদুল হক বলেন, ‘ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়েছে। তাঁরা স্কুল ছেড়ে স্বামীর ঘরে গেছে। কেউ কেউ মাও হয়েছে।’ আশরাফগঞ্জ দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক খাদেমুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুল বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী ইটভাটা, হোটেল, রেস্তোরাঁয় কাজ করছে। নগদ টাকার লোভে স্কুলে আর ফিরছে না তারা।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত