ভারতে যাতায়াত বেড়েছে, বাড়েনি যাত্রীসেবা

আজিজুল হক, বেনাপোল
প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১০: ০৯

বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সড়কপথে ভারতে যাওয়া বেড়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, পদ্মা সেতু চালুর পর এ পথে যাত্রীদের যাতায়াত বেড়েছে। এতে বেড়েছে রাজস্ব আদায়। তবে বাড়েনি কাঙ্ক্ষিত সেবা।

স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, বেনাপোল সড়কপথে ২০২৩ সালে ভারতে গেছেন ১১ লাখ ৮১ হাজার ৮ পাসপোর্টধারী যাত্রী। ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ১০ লাখ ৬১ হাজার ৮৪৮। এক বছরে যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ১৬০। এ সময় ভ্রমণ কর বাবদ বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে ১০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। ভারত সরকারের ভিসা ফি বাবদও আয় হয়েছে প্রায় একই পরিমাণ অর্থ।

বেনাপোল আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের তত্ত্বাবধায়ক নাহিদুজ্জামান বলেন, বেনাপোল বন্দর থেকে কলকাতার দূরত্ব ৮৪ কিলোমিটার। যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় এ রুট দুই দেশের যাত্রীদের পছন্দের। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এ পথে যাত্রীদের যাতায়াত আরও বেড়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৬ থেকে ৭ হাজার পাসপোর্টধারী যাতায়াত করে থাকেন। এর অধিকাংশ ভ্রমণ করেন ভারতে চিকিৎসাসেবা নিতে।

যাত্রীর ভোগান্তি যাত্রী বাড়লেও এই বন্দরে সেবা বাড়েনি। সঙ্গে রয়েছে দালালদের হয়রানি। সূত্র বলছে, বাংলাদেশ অংশে যাত্রীছাউনি ও ভারত ইমিগ্রেশনে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ কমছে না। আবার ইমিগ্রেশনের জন্য সীমান্তে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে অসুস্থ হয়ে যাত্রীদের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। গত নভেম্বরে লাইনে দাঁড়িয়ে ভারতীয় এক নাগরিকও মারা গেছেন। 

বেনাপোলে ট্রাভেল এজেন্সি চালান উজ্জ্বল বিশ্বাস। তিনি বলেন, যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে তবে ভারত ইমিগ্রেশনে জনবল না বাড়ায় সীমান্ত অতিক্রম করতে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা কেটে যায়।

গতকাল শনিবার সকালে এই পথে ভারতে যাওয়ার পথে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেন ঢাকার মগবাজার এলাকার পাসপোর্টধারী যাত্রী আব্দুর রহিম। তিনি জানান, চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছেন। পদ্মা সেতুর কল্যাণে দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার মধ্যে বাস পৌঁছাচ্ছে বেনাপোল বন্দরে। আর বন্দর খুলছে সকাল সাড়ে ৬টায়। বন্দরে যাত্রীছাউনি না থাকায় প্রচণ্ড শীতের মধ্যে পরিবার নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে সময় পার করতে হচ্ছে। দালালরাও হয়রানি করেন।

এ প্রসঙ্গে নাহিদুজ্জামান বলেন, যাত্রীসেবা বাড়াতে কাজ করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে যাত্রীছাউনি ও বন্দরের প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের পরিধি বাড়াতে জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে।

এদিকে বন্দরের এমন কার্যক্রমে খুশি নন ব্যবসায়ীরাও। তাঁদেরও অভিযোগ, বন্দর কর্তৃপক্ষ ঠিকঠাক সেবা দেয় না। এ প্রসঙ্গে বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, প্রতিবছর ভ্রমণ খাতে বাংলাদেশ সরকারের প্রায় ১০০ কেটি। ভিসা ফি বাবদ ভারত সরকারের আয়ও প্রায় একই পরিমাণ। এই পথে যাত্রীদের যাতায়াত বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত সেবা বাড়েনি। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত