Ajker Patrika

পদ বাঁচাতে রায় জাল, দুদকে ধরা

মারুফ কিবরিয়া, ঢাকা
পদ বাঁচাতে রায় জাল, দুদকে ধরা

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক মামলায় বছরপাঁচেক আগে সাজাপ্রাপ্ত হলেও সেই রায়ের কপি জাল করে ধরা খেয়েছেন একটি ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক দুই নেতা। সমিতির পদ ধরে রাখতে রায় জালিয়াতিতে জড়ানো দুই ব্যক্তি হলেন বনানী সুপার মার্কেট কাম হাউজিং কমপ্লেক্স ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক দুই নেতা আবদুল বাতেন নকী ও মাহমুদ হাসান আজাদ। দুদক সূত্রে জানা গেছে, রায় জালিয়াতির নতুন মামলায় নকী ও আজাদ ছাড়াও আসামি করা হচ্ছে বনানী সুপার মার্কেটের কার পার্কিং স্থানের সাবেক ব্যবস্থাপক এ এইচ এম তারেককে।

সূত্রমতে, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগেও মামলা করা হবে নকী ও আজাদের বিরুদ্ধে।

বনানী সুপার মার্কেটের কার পার্কিং ইজারায় দুর্নীতির মামলায় সাবেক মেয়র ও প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকাসহ চার আসামিকে ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন বনানী সুপার মার্কেট কাম হাউজিং কমপ্লেক্স ব্যবসায়ী সমিতির তৎকালীন সভাপতি আবদুল বাতেন নকী ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান আজাদ এবং মার্কেটের পার্কিং ব্যবস্থাপক এ এইচ এম তারেক। ওই সময় খোকা বিদেশে অবস্থান করলেনও নকী, আজাদ ও তারেক জামিনে ছিলেন।

দুদক সূত্রে জানা যায়, ডিএনসিসি বনানী সুপার মার্কেটের পার্কিং ইজারা ও ভাড়া-সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগে ২০১৫ সালে শাহবাগ থানায় ওই মামলাটি করা হয়েছিল।

সূত্রমতে, বনানী সুপার মার্কেট কাম হাউজিং কমপ্লেক্স ব্যবসায়ী সমিতি ২০০১ সাল থেকে সমবায় সমিতির আইন অনুযায়ী নিবন্ধিত হয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে বছরের পর বছর সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক পদে বহাল ছিলেন নকী ও আজাদ। দুদকের মামলায় রায় হওয়ার দুই মাস আগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে নির্বাচন ছাড়াই ফের সভাপতি ও সম্পাদক পদে আসীন হন ওই দুই নেতা। এর মধ্যে দুর্নীতি মামলার রায় দেন বিশেষ জজ আদালত। আইন অনুযায়ী সাজাপ্রাপ্ত কেউ নিবন্ধিত কোনো সমিতির সদস্য পদে থাকতে পারেন না। তবে নকী-আজাদ পদ বাঁচাতে কৌশলে নিজেদের খালাস দেখিয়ে রায়ের একটি কপি সমবায় অধিদপ্তরে উপস্থাপন করেন। কিন্তু ওই সমিতির সাধারণ সদস্যরা সমবায় অধিদপ্তরে অভিযোগ করেন, নকী ও আজাদ যে রায় জমা দিয়েছেন, তা জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজন করা। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা জেলা সমবায় কার্যালয় ২০২০ সালের ৫ মার্চ সালিসি-মোকদ্দমা করে। দুই পক্ষের শুনানির পর রায় জালিয়াতির প্রমাণ মেলে।

জানা যায়, ঢাকা বিভাগীয় সমবায় কার্যালয় বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য দুদকের দ্বারস্থ হয়। অনুসন্ধান শেষে দুদকও জালিয়াতির প্রমাণ পায়। এরই মধ্যে কমিশনের এক সভায় রায় জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়। দুদকের উপপরিচালক আবু সাঈদ অনুসন্ধানের দায়িত্ব পালন করেছেন।

দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, মামলায় সাজা হওয়ার পর তিন আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন। তারপরই নিজেদের পদ বাঁচাতে জালিয়াতির আশ্রয় নেন তাঁরা।

এ বিষয়ে দুদকের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, দুদকের আইন অনুযায়ী মামলা হলে সেটি তদন্ত পর্যায়ে যায়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রতিবেদন জমা দিলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে কমিশন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাহমুদ হাসান আজাদ বলেন, বিচারাধীন বিষয়ে কথা না বলাই ভালো।

আবদুল বাতেন নকী বলেন, ‘আট মাস জেল খেটে জামিন পেয়েছি। বিচারাধীন কোনো মামলা নিয়ে কথা বলতে চাই না।’ রায় জালিয়াতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কোর্টের রায় জাল করা যায়? আমি এসব কিছু জানি না। দুদক যদি কিছু প্রমাণ পায়, সেটা তাদের বিষয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

বগুড়ায় ইফতারের পর ডেকে নিয়ে যুবককে হত্যা

অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন জামায়াতের আমির

সেনাসদস্যকে এক গাড়ি ধাক্কা দেয়, আরেক গাড়ি পিষে যায়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত