সড়কে খুঁটি রেখেই কার্পেটিং

নোয়াখালী প্রতিনিধি
Thumbnail image

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা থেকে সোনাইমুড়ীর বজরা বাজার পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্ত ও পিচঢালাইয়ের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ছয় কিলোমিটার সড়কের মধ্যে থাকা খুঁটি অপসারণের জন্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা দেওয়া হয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে। কিন্তু প্রশস্ত করা সড়কের মাঝখানে সারি সারি বিদ্যুতের খুঁটি। ছয় কিলোমিটার সড়কে এমন অর্ধশত খুঁটি রয়েছে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে অপসারণের জন্য টাকা নিয়েও দীঘিরজান থেকে বজরা বাজার পর্যন্ত সড়কের খুঁটিগুলো সরায়নি। ফলে সেগুলো রেখেই পিচঢালাইয়ের কাজ করে সড়ক বিভাগ।

সড়কটিতে গত পাঁচ মাসে অর্ধশতাধিক ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা। বিশেষ করে শীতের সময় ঘন কুয়াশার মধ্যে এটি দিয়ে চলাচলে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

যদিও নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বলছে, ‘সড়কটির মাঝখানে ৩৯টি খুঁটি রয়েছে। সেগুলো তারা দ্রুত অপসারণ করবে।’

সম্প্রতি খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে গুরুতর আহত হন অটোরিকশাচালক মো. শাহজাহান (৫০)। তিনি সোনাইমুড়ী উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের বাসিন্দা। ২০ বছর ধরে নিজের এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন তিনি। তিন ছেলে এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর সংসার। কিন্তু হঠাৎ সড়ক দুর্ঘটনায় থেমে যায় তাঁর অটোরিকশা চালানো।

শাহজাহান বলেন, ‘বিপরীত দিক থেকে আসা অটোরিকশাকে পাশ দিতে গিয়ে সড়কের মাঝখানে থাকা খুঁটির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে উল্টে সড়কের পাশে পড়ে যাই। নিচে পড়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। জ্ঞান ফিরে দেখি মাইজদীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে। প্রায় এক সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে বাড়ি আসি। ওই দুর্ঘটনায় হাত, পা, বুকসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পাই। এখনো বুকে ব্যথা রয়ে গেছে। সেই দুর্ঘটনার পর থেকে ভয়ে অটোরিকশা চালানো বন্ধ করে দিয়েছি।’ 
শুধু শাহজাহান নন, সড়কটিতে প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আহত হচ্ছেন অনেক যাত্রী-পথচারী। যানবাহনের চালকদের তথ্যমতে, গত চার-পাঁচ মাসে শতাধিক ব্যক্তি দুর্ঘটনায় আহত হন। বিকল হচ্ছে যানবাহন।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, গাড়িতে চড়লেও আতঙ্কে থাকতে হয়। কখন এগুলোর সঙ্গে ধাক্কা লাগে। বিশেষ করে শীতে কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনা বেড়েছে কয়েক গুণ। এ পর্যন্ত দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে শতাধিক মানুষ। আর এ জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা সড়ক বিভাগ ও পল্লী বিদ্যুৎকে দায়ী করছেন।

নোয়াখালী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সৌম্য তালুকদার বলেন, ‘সেনবাগ উপজেলা থেকে সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা বাজার পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্ত করা হয়। এর মধ্যে ছয় কিলোমিটার সড়ক প্রশস্ত ও কার্পেটিংয়ের কাজ করতে গিয়ে খুঁটি অপসারণের প্রয়োজন পড়ে। কাজ শুরুর আগে আমরা এসব অপসারণের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে প্রয়োজনীয় বিল পরিশোধ করি। একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমাদের কাজ শেষ করার বাধ্যবাধকতা ছিল; কিন্তু তারা খুঁটিগুলো সরায়নি। ঠিকাদার বাধ্য হয়ে সেগুলো রেখেই কাজ শেষ করেন। আমরা পল্লী বিদ্যুতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাঁরা দ্রুত সময়ের মধ্যে সরিয়ে নেবেন বলে জানিয়েছেন।’

নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘সড়কটির মাঝখানে ৩৯টি খুঁটি রয়েছে। সড়ক প্রশস্ত করার কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়।

এগুলো সরানোর জন্য অনুমোদন পেয়ে ৩০ লাখ টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি, চলতি মাসেই এগুলো সরানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত