কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম?

রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২২, ০৬: ৪২
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২২, ১৩: ৫১

নরসিংদীর রায়পুরায় ভেলুয়ারচর উচ্চবিদ্যালয়ের কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষায় স্বজনপ্রীতি ও অর্থ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

১৭ জুলাই বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নৈশপ্রহরী ও আয়া পদের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মিতু আক্তার নামের এক চাকরিপ্রার্থী ১৭ জুলাই জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর পরীক্ষায় স্বজনপ্রীতি ও অর্থ-বাণিজ্যে হয়েছে দাবি করে লিখিত অভিযোগ করেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আক্তারুজ্জামান ভূঁইয়া।

ভেলুয়ারচর উচ্চবিদ্যালয়ে অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে বিদ্যালয়ের জন্য অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নৈশপ্রহরী ও আয়া পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর অফিস সহায়ক পদে ১২ জন, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ৪, নৈশপ্রহরী ৫ ও আয়া পদের জন্য ৬ জনসহ ৪টি পদে মোট ২৭ জন প্রার্থীকে বৈধ ঘোষণা করে নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র ইস্যু করে কর্তৃপক্ষ। ১৭ জুলাই নরসিংদীর ব্রাহ্মন্দী কামিনী কিশোর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে এই নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় সবাই অংশ নেন।

গত রোববার বিদ্যালয়ে কথা হয় নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে। তাঁরা জানান, পরীক্ষা বিদ্যালয়ে হওয়ার কথা ছিল। ১৪ জুলাই ফোন করে জানানো হয় নরসিংদীর ব্রাহ্মন্দী কামিনী কিশোর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে নেওয়া হবে। সেই পরীক্ষায় অফিস সহায়ক ও নৈশপ্রহরী পদের দুই পরীক্ষার্থীর হয়ে অবৈধভাবে পরীক্ষা দিয়েছেন নটর ডেম কলেজের দুই শিক্ষার্থী। অফিস সহায়ক পদে ও নৈশপ্রহরী ওই দুই প্রার্থীই নিয়োগ পেয়েছেন। অর্থের বিনিময়ে এসব অনিয়ম করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিক্ষক মো. আক্তারুজ্জামান ভূঁইয়া।

বিদ্যালয়ের দাতা পরিবারের সদস্য ও বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সদস্য আসমত আলী বলেন, ‘আমার পরিবারের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ের জন্য চার বিঘা জমি দেওয়া হয়েছে। নৈশপ্রহরী পদে আমার ছেলে আবেদন করে। আমি এ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে যাই। তিনি আমার কাছে পাঁচ-ছয় লাখ টাকা দাবি করেন। আমি ১২ জুলাই উপজেলা পরিষদের মাঠে গিয়ে তাঁকে তিন লাখ টাকা দিই। তিনি আমার ছেলের চাকরি হবে বলে নিশ্চিত করেন। কিন্তু আমার ছেলের চাকরি হয়নি। এখন পর্যন্ত আমার টাকা ফেরত দেননি। মানুষের কাছে বলছেন, কারও কাছ থেকে টাকা নেননি।’

এ নিয়ে জানতে চাইলে প্রার্থী মিতু আক্তার বলেন, ‘পরীক্ষার ফলাফলে আমাকে দ্বিতীয় এবং আমজাদ হোসেনকে প্রথম ঘোষণা করা হয়েছে। আমজাদের কোনো প্রবেশপত্র নেই। তার পরীক্ষা আরেকজন দিয়েছে। প্রধান শিক্ষক টাকার বিনিময়ে এ কাজ করেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আমার আবেদন, বিষয়টি তদন্ত করে এই পরীক্ষা বাতিল করা হোক এবং পুনরায় নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হোক।’

এ নিয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আক্তারুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনীত এই অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই অভিযোগের তীব্র নিন্দা জানাই। নিয়োগ কমিটির যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে পরীক্ষা নিয়েছে। অর্থ লেনদেনের কোনো প্রশ্নই আসে না।’

এ নিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও নিয়োগ কমিটির প্রতিনিধি সামালমগীর আলম বলেন, ‘নিয়োগ কমিটির সার্বক্ষণিক তদারকির মাধ্যমে যথাযথ নিয়ম মেনেই পরীক্ষা হয়েছে। পরীক্ষার অংশ নেওয়া প্রার্থীদের অভিভাবকেরা উপস্থিত ছিলেন। অর্থ লেনদেনের বিষয়ে আমার জানা নেই।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

ভারতের পাল্টা আক্রমণে দিশেহারা অস্ট্রেলিয়া

ঢাকা কলেজে সংঘর্ষকালে বোমা বিস্ফোরণের ছিটকে পড়েন সেনাসদস্য—ভাইরাল ভিডিওটির প্রকৃত ঘটনা

ঐশ্বরিয়ার বিচ্ছেদের খবরে মুখ খুললেন অমিতাভ

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত