নদীর তল দিয়ে বিদ্যুৎ গেল চরফ্যাশনের দুর্গম দ্বীপে

চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২২, ০৭: ৩২
আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২২, ১৫: ৫৫

সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বুড়াগৌরাঙ্গ এবং তেঁতুলিয়া নদীর তলদেশ দিয়ে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দুর্গম দ্বীপ ইউনিয়ন মুজিবনগর ও কুকরি-মুকরিতে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। ফলে দুটি ইউনিয়নের প্রায় ৪৪ হাজার মানুষ বিদ্যুৎ-সুবিধার আওতায় এসেছে। বিদ্যুৎ-সংযোগ চরাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন, শিক্ষা ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

এদিকে বিচ্ছিন্ন কুকরি ও মুজিবনগর ইউনিয়নে বিদ্যুৎ-সংযোগের মধ্য দিয়ে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় এল।

ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তথ্যমতে, উপজেলার চর কুকরি-মুকরি ও মুজিবনগরে ১০ এমভিএ ২টি উপকেন্দ্র নির্মাণকাজ শেষে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। বুড়াগৌড়াঙ্গ ও তেঁতুলিয়া নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে পর্যটনদ্বীপ কুকরি-মুকরি, মুজিবনগর ইউনিয়ন এবং সংলগ্ন গলাচিপা উপজেলার চর কাজল, চর বিশ্বাস ও চর বোরহান ইউনিয়নের মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের মধ্য দিয়ে কুকরি-মুকরির ২ হাজার, মুজিবনগরের ৪ হাজার, চর কাজল ও চর বিশ্বাসে ৮ হাজার এবং চর বোরহানে ৩ হাজার গ্রাহককে সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

চর কুকরির মাছ ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, ‘বিদ্যুতায়নের ফলে মাছ সংরক্ষণ ও আগাম আবহাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। আগে আমরা ডিজিটাল যোগাযোগের সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলাম। এখন বিদ্যুৎ থাকায় শহরের মানুষের মতো সব সুবিধা আমাদের হাতের মুঠোয় চলে আসছে।’

মুজিবনগরের বাসিন্দা বিউটি বেগম বলেন, ‘দুর্গম এবং বিচ্ছিন্ন এই চরে ডিশ সংযোগ, ফ্রিজ ও টিভি চালানের কথা ৫ বছর আগেও কেউ ভাবেননি। এখন বাস্তবে তা দেখা যাচ্ছে, যা চরের মানুষকে শহরের সুবিধা দিচ্ছে। রাতে বিদ্যুতের আলো গ্রামের বাড়িগুলো দেখে মনে হচ্ছে যেন কোনো শহর।’

কুকরি-মুকরি ইউপির চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন বলেন, ‘কুকরিতে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ায় এখানকার পর্যটনশিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে। প্রত্যন্ত ও দুর্গম গ্রামগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকায় বিদ্যুৎনির্ভর কৃষিকাজের বিকাশ শুরু হবে। বিশেষ করে কৃষিপণ্য উৎপাদন, হাঁস-মুরগি, গবাদিপশুর খামার ও তথ্যপ্রবাহ নির্বিঘ্ন হয়েছে।’

ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম মো. আলতাপ হোসেন বলেন, ‘চরের বাসিন্দারা দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে। অফ গ্রিড এলাকার মানুষ সহজে বিদ্যুৎ পেয়ে আনন্দিত। আর এ বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে চরের মানুষের জীবনমানের ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত