Ajker Patrika

দই দিয়ে যায় চেনা

মো. রিয়াদ হোসাইন, কালীগঞ্জ (গাজীপুর)
দই দিয়ে যায় চেনা

কালীগঞ্জের একটি গ্রামীণ বাজারের নাম টেকমানিকপুর। কথিত আছে, এখানে মানুষের সকাল শুরু হয় দই দিয়ে। দইয়ের সুনাম এতটাই বিস্তৃত যে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং রাজধানী ঢাকার বহু জায়গা থেকে প্রতিদিন মানুষ এসে ভিড় করে ছোট্ট এ বাজারে!

প্রায় দুই যুগ ধরে একই স্বাদের দই তৈরি করে যাচ্ছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব আমান সরকার। স্বাদের কোনো ঘাটতি নেই, নেই কৃত্রিম কোনো মিশ্রণ।আর কাচের গ্লাসে পরিবেশন হয় বলে গুণগত মানও থাকে অটুট। শুধু এসব বৈশিষ্ট্যের কারণেই বাজারের ছোট্ট দোচালা টিনের ঘর, আঁটসাঁট জায়গাটিই এখন এ বাজারের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

জানা গেছে, দইঘরে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১২০ কেজি দই বিক্রি হয়। তবে উৎসব হলে বিক্রি বেড়ে যায় দ্বিগুণ। এ দইয়ের বিশেষত্ব হলো, এখানে কাচের গ্লাসে দই বিক্রি হয়। শুধু পার্সেল নেওয়ার জন্য প্লাস্টিকের ওয়ানটাইম গ্লাসে দই পাওয়া যায়। চাইলে মাটির তৈরি পাতিলেও দই পাবেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় কোনো বাড়িতে বিয়ে বা অন্য কোনো আয়োজনে দইয়ের প্রয়োজন হলে ভরসার জায়গা আমান সরকারের এ দইঘর। তিনি নিজেই যে শুধু দই বিক্রি করেন তা-ই নয়, তাঁকে দেখে অনেকে দইয়ের ব্যবসা করে ভাগ্য বদল করেছেন—এমন উদাহরণও রয়েছে।

কথা হয় স্থানীয় দুই ইজিবাইকচালক হানিফ হোসেন ও আজিজুর রহমানের সঙ্গে। তাঁরা জানান, প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গার মানুষ এখানে দই খেতে আসেন। তাঁরা সেই ছোটবেলা থেকে এ দই খাচ্ছেন। এর স্বাদের তেমন কোনো পার্থক্য হয়নি বলেই তাঁদের মত।

ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে বেসরকারি এক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন স্বপন ইসলাম। তিনি জানান, সাপ্তাহিক ছুটিতে বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। প্রথমে বিল বেলাইয়ে সারা দিন সময় কাটিয়ে এখন টেকমানিকপুরের দইঘরের কথা শুনে এসেছেন দইয়ের স্বাদ নিতে। তিনি খুশি এ দই খেয়ে।

কথা হয় আমান সরকারের সঙ্গে। তিনি জানান, তাঁর দইয়ের ব্যবসা শুরু সেই ১৯৯৭ সালের দিকে। প্রথমে ক্ষুদ্র পরিসরে দই তৈরি করে বিক্রি করতে শুরু করেন। দেখে দেখে দই বানানো শেখেন তিনি। তাই নিজের সবটা উজাড় করে দিয়েই বানানোর চেষ্টা করতেন। বিদ্যা যা শিখেছিলেন তার অপব্যবহার করবেন না বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। ফলে সুনাম ছড়িয়ে পড়তে খুব বেশি সময় লাগেনি। প্রায় ২৪ বছর সততা, নিষ্ঠা আর ভালোবাসা দিয়ে এই খ্যাতিকে ধরে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন আমান সরকার।

তেঁতুল কাঠের লাকড়ি দিয়ে এক টানা ছয় ঘণ্টা দুধ আর চিনি জ্বাল দেওয়ার পর সেই দুধ ঠান্ডা করে দই বানান আমান সরকার। এখানে এক পাতিল দইয়ের মূল্য ২৫০ টাকা আর প্রতি গ্লাস দইয়ের দাম ২৫ টাকা।

রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে রেলগেট বেড়িবাঁধ হয়ে উলুখোলা বাজার। সেখান থেকে টেকমানিকপুর বাজার পর্যন্ত ইজিবাইকে যাওয়া যায়। পথে রয়েছে সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য আর মনোরম পরিবেশ। সময় করে চলে গেলে সুস্বাদু দই আর মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ দুটোই পাওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত