স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাই, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

অভয়নগর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২২, ০৬: ৩৮
আপডেট : ১৯ জুন ২০২২, ১২: ৩৬

যশোরের অভয়নগরে প্রাণিসম্পদ বিভাগ চিকিৎসকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ছাড়পত্র ছাড়াই উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে অবাধে গবাদিপশু জবাই করে মাংস বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। আর সাধারণ জনগণ নিয়ম কানুন না জেনেই কিনছেন মাংস। এতে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া বড় বাজার, ভাঙ্গাগেট বাজারে প্রতিদিন ১০-১২টি গরু জবাই হয়। জবাইকৃত পশুর শরীরে কোনো রোগ বালাই রয়েছে কি না এমন কোনো ধারণাই রাখেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আইন প্রয়োগের দায়িত্ব প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। কিন্তু এ ব্যাপারে তাদের কোনো তৎপরতা নেই বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা ও সাধারণ মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নওয়াপাড়া ছাড়াও চেঙ্গুটিয়া বাজার, ধোপাদি নতুন বাজার, রাজঘাট বাজার, প্রেমবাগ বাজারে গরু, ছাগল, জবাই করা হয়। তা ছাড়া হোটেলের চাহিদা পূরণ করার জন্যও গরু, ছাগল জবাই করা হয় বলে জানান হোটেল ব্যবসায়ী লিয়াকত।

উপজেলার মশরহাটি এলাকা থেকে গরুর মাংস কিনতে আসা ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আমরা তো শুধু বিশ্বাস করেই মাংস কিনছি, কোনো ভেজাল থাকলে আমাদের জানার কথা নয়। তবে সব বিষয়ে ভেটেরিনারি হাসপাতাল দেখাশোনা করলে আমাদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি কমে আসবে।’

ইসমাইল হোসেন আরও বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ ধরনের কোনো তদারকি না থাকায়, সাধারণ জনগণ মরা গবাদিপশু, নাকি রোগাক্রান্ত গবাদিপশুর মাংস খাচ্ছে তা বোঝার কোনো উপায় নেই। পাশাপাশি ধর্মীয় নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে পশুটি জবাই করা হচ্ছে কি না, সেটাও সকলের অগোচরে।’

মাংস ব্যবসায়ী ছোরাপ বলেন, ‘আমরা অনেক দিন থেকে গরুর মাংস বিক্রি করে আসছি। গরুর জবাই করার জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় না। আগে পশু হাসপাতাল থেকে খোঁজ রাখলেও এখন আর কেউ খোঁজখবর রাখেন না। মাঝে মাঝে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লোক এসে খোঁজ খবর নিত।’

এ বিষয়ে নওয়াপাড়া পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিল মোস্তফা কামাল বলেন, ‘পশু জবাই করার আগে পশুটি সুস্থ কি না, রোগাক্রান্ত কি না, পশুটি গর্ভবর্তী কি না, এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার দায়িত্ব উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বা চিকিৎসকের। স্যানিটারি ইন্সপেক্টর এর দায়িত্ব পশু জবাই এর পরবর্তীতে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে বিক্রি হচ্ছে কি না এবং ওজনের কারচুপি করছে কি না, সেটা দেখা শোনার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের।’

এ বিষয়ে জানতে নওয়াপাড়া পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর জাহিদ হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিক বার ডায়াল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

উপজেলা পশু কর্মকর্তা ডা. শংকর কুমার দে বলেন, ‘আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ জনবল না থাকায় আমরা সেই ভাবে মনিটরিং করতে পারি না। উপজেলা মিটিং এ আমি এ বিষয়টি তুলেছিলাম। আমাকে জানানো হয়েছিল পশু জবাইয়ের ওপর ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান মাঝে মাঝে পরিচালিত হবে। আর আমি নিজেও হাঁটতে বের হলে নওয়াপাড়া বড় বাজারে ঠিকভাবে পশু জবাই হচ্ছে কি না তা তদারকি করি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত