দেশের অনেক ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া অনেক স্থানে চলছে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের প্রচার। তবে তফসিল ঘোষণা না হলেও ফুলপুরে সরগরম হয়ে উঠেছে রাজনীতি। নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে, এই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে উপজেলার ১০টি ইউপিতে আওয়ামী লীগের অসংখ্য প্রার্থী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। দলীয় মনোনয়ন না পেলে তাঁদের অনেকেই বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন।

স্থানীয় ভোটার ও নেতা–কর্মীরা জানিয়েছেন, প্রতিটি ইউপিতে তিন থেকে আটজন গণসংযোগ করছেন। প্রতিটি ইউপিতে একাধিক প্রার্থী থাকায় অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠছে। এতে দলে অস্বস্তি দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বওলা ইউপিতে আওয়ামী লীগের সাতজন চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে গণসংযোগ, মিটিং, মিছিল ও সমাবেশ করছেন। তাঁদের অনেকেই বলছেন, দলের মনোনয়ন পেতে কাজ করছেন। তবে মনোনয়ন না পেলে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচন করবেন।

ইউনিয়ন যুবলীগের এক নেতা বলেন, তিনি দলীয় প্রতীক নৌকার মনোনয়ন চাইবেন। না পেলে বিদ্রোহী হিসেবেই নির্বাচনে লড়বেন। একই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘আশা করি দল আমাকে মনোনয়ন দেবে। না পেলে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করব। বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করলেও ভোটারদের সমর্থন পাবেন বলে দাবি করেন তিনি।

বালিয়া ইউনিয়নের এক নেতা বলেন, তিনি মানুষের জন্য অনেক দিন ধরে কাজ করছেন। নিজেকে যোগ্য প্রার্থী দাবি করে তিনি বলেন, দলের মনোনয়ন পাওয়ার কথা রয়েছে। যদি দলীয় মনোনয়ন না পান তবুও নির্বাচন করবেন বলে নিশ্চিত করেন তিনি।

রূপসী ইউনিয়নে প্রচারণা চালানো আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘দলীয় মনোনয়ন পেতে কাজ করছি। মনোনয়ন না পেলেও নির্বাচন করব।’ ভোটাররা তাঁকে চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চান বলে দাবি করেন তিনি।

এ দিকে রূপসী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, দলীয় ব্যানারে নয় তিনি বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) হিসেবে নির্বাচন করবেন। এলাকায় সাধ্যমতো উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন জানিয়ে ভোটাররা নির্বাচিত করবেন বলে দাবি করেন তিনি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার অন্যান্য ইউপিতেও রয়েছে একাধিক প্রার্থী। তাঁরাও দলীয় মনোনয়ন না পেলে বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে ফুলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের জেষ্ঠ্য যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন,, আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী দল। নির্বাচনের মাধ্যমে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। তাই যারা সৎ, যোগ্য, ত্যাগী এবং দলের জন্য হিতকর-এমন ব্যক্তিদেরই দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে সুপারিশ করা হবে বলে তিনি জানান।

বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, চেষ্টা করা হবে প্রতিটি ইউপিতে একক প্রার্থী দেওয়ার। যারা দলের বাইরে গিয়ে প্রার্থী হবেন, তাঁদের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সৈয়দা আশুরা আখতার খাতুন বলে, ফুলপুরে তফসিল ঘোষণা না হলেও সব প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। উপজেলার ১০টি ইউপির ১০৩টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।