Ajker Patrika

গোখাদ্যের চড়া দাম, বৃষ্টিতে নষ্ট খড়, দুশ্চিন্তায় খামারিরা

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ মে ২০২২, ১৫: ৫৯
গোখাদ্যের চড়া দাম, বৃষ্টিতে নষ্ট খড়, দুশ্চিন্তায় খামারিরা

গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন বগুড়ার সারিয়াকান্দির খামারিরা। উপজেলার কৃষকেরা বলছেন, কয়েক দিনের বৃষ্টিতে খড় শুকাতে না পেরে পচে গেছে। অপরদিকে গাভির দুধের দামও কমে গেছে। এভাবে গোখাদ্যের দাম বাড়তে থাকলে খামার টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, খামারিদের তাঁরা বেশি করে ঘাষ চাষের পরামর্শ দিচ্ছেন।

সারিয়াকান্দির বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, ৫ দিন আগে ভুসির দাম ছিল প্রতি কেজি ৪০ টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। খুদ বিক্রি হতো ৩০ টাকা কেজি, এখন তা ৩৬ টাকা কেজি। চালের কুঁড়া আগে ছিল ১৬ টাকা কেজি, এখন ২০ টাকা। ক্যাটল ফিড ছিল ৮০০ টাকা বস্তা, এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৩০০ টাকা।

উপজেলার পারতিত পরল গ্রামের গরুর খামারি আমজাদ হোসেন জানান, ছয় বছর আগে তিনি দুটি গাভি দিয়ে তাঁর খামার শুরু করেন। এখন তাঁর খামারে সর্বমোট ১১টি গরু রয়েছে। তাঁর মধ্যে পাঁচটি গাভি এখন দুধ দিচ্ছে। পাঁচটি গাভি থেকে তিনি প্রতিদিন ৫৭ থেকে ৬০ লিটার দুধ পান।

প্রতি লিটার দুধ এখন তিনি ২৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন। প্রতি চার দিনে খামারে এক বস্তা ভুসি, এক বস্তা ফিড, চালের কুঁড়া, খুদ ও অন্যান্য খরচসহ তাঁর ১০ হাজার টাকা ব্যয় হয়।

অপরদিকে দুধ বিক্রি করে চার দিনে তাঁর আয় হয় ৫ হাজার ৭০০ থেকে সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৯৮০ টাকা। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন আমার খামারে ব্যাপকভাবে লোকসান হচ্ছে। এখন আমি খামারের গরুগুলো বিক্রি করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছি।’

উপজেলার পৌর এলাকার আন্দরবাড়ী গ্রামের খামারি বেলাল হোসেন জানান, তিনি কয়েক দিন আগে ৯ হাজার টাকার বোরো ধানের কাঁচা আঁটি কিনেছিলেন। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তাঁর অর্ধেক খড় পচে নষ্ট হয়ে গেছে।

উপজেলার নারচী ইউনিয়নের দেবেরপাড়ার খামারি আরিফুর রহমান জানান, তাঁর খামারে ৫৫টি গরু রয়েছে। এক মাস আগে তিনি প্রতি বস্তা চিকন ভুসি ১৬০০ টাকায় কিনতেন। এখন তা কিনতে হচ্ছে ২৮০০ টাকায়। আর ক্যাটল ফিড প্রতি বস্তা কিনেছেন ৮০০ টাকায়। এখন তা ক্রয় করছেন ১৩০০ টাকায়।

আরিফুর রহমান আরও বলেন, এভাবে প্রতিদিন ভুসিসহ গরুর অন্যান্য খাবারের দাম বাড়তে থাকলে খামার টেকানো মুশকিল হবে।

সারিয়াকান্দি প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, উপজেলাতে সর্বমোট ১৭৩টি বড় গরুর খামার এবং ১ হাজার ২০০টি ছাগলের খামার, ৩৫টি ভেড়া ও গাড়লের খামার এবং চরাঞ্চলে অসংখ্য ঘোড়া ও মহিষ রয়েছে। এ হিসাবে সমগ্র উপজেলায় সর্বমোট ১ লাখ ২০ হাজার গরু, ৭৩ হাজার ৫০০ ছাগল এবং ৩ হাজার মহিষ রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শাহ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নানা কারণে গবাদিপশুর খাবারের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা খামারিদের বেশি করে ঘাস চাষ করার পরামর্শ দিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত