Ajker Patrika

শৈলজারঞ্জন মজুমদার

সম্পাদকীয়
শৈলজারঞ্জন মজুমদার

শৈলজারঞ্জন মজুমদার ছিলেন বিশিষ্ট সংগীতজ্ঞ, রবীন্দ্রসংগীত প্রশিক্ষক, রবীন্দ্রসংগীতের স্বরলিপিকার। ১৯০০ সালের ১৯ জুলাই তিনি বাংলাদেশের নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের বাহাম গ্রামে এক জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

তিনি ১৯১৭ সালে নেত্রকোনা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯২০ সালে কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে আইএসসি, ১৯২২ সালে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বিএসসি এবং ১৯২৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে এমএসসিতে প্রথম শ্রেণিতে পাস করেন। এরপর তাঁর বাবার ইচ্ছায় ১৯২৭ সালে আইনও পাস করেন।

৮-৯ বছর বয়সে পাঠশালায় পড়ার সময় ঠাকুরমার কাছে সংগীতের হাতেখড়ি হয় তাঁর। শৈশবে নানা ধারার গান যা শুনতেন, তা-ই গাওয়ার চেষ্টা করতেন তিনি। ১৯২১ সালে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে বর্ষামঙ্গল অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথের নিজ কণ্ঠে গান ও আবৃত্তি শুনে তিনি অভিভূত হন। আর এভাবেই শৈলজা আসক্ত হয়ে পড়েন রবীন্দ্রসংগীতের প্রতি।

১৯৩২ সালে তিনি শান্তিনিকেতনে রসায়নের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এখানে এসে রবীন্দ্রনাথের গানের ভান্ডারি দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে নিয়মিত সংগীত শিখতে শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে দিনেন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতন ছেড়ে যাওয়ার পর রবীন্দ্রনাথ নিজেই তাঁকে সংগীত শেখানোর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

১৯৩৪ সালে শৈলজারঞ্জন প্রথম ‘মম মন উপবনে’ সংগীতটির স্বরলিপি তৈরি করেন এবং তা ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় প্রকাশ করে কবির বিশেষ প্রশংসা অর্জন করেন। ১৯৩৬ সালে তিনি কবিগুরুর বিখ্যাত নৃত্যনাট্য ‘চিত্রাঙ্গদা’ এবং ১৯৩৮ সালে ‘চণ্ডালিকা’র স্বরলিপি প্রকাশ করেন। এভাবে তিনি যখন রবীন্দ্রসংগীতের সারবস্তু অনুধাবন করে এগিয়ে চললেন সামনের দিকে, ঠিক তখন ১৯৩৯ সালে রবীন্দ্রনাথ তাঁকে বিশ্বভারতীর সংগীত ভবনের অধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত করেন।

এরপর সেখান থেকে অবসরের পর তিনি কলকাতায় ‘সুরঙ্গমা’ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। কলকাতার নামীদামি রবীন্দ্রসংগীতশিল্পীরা যুক্ত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে। ভারত-বাংলাদেশের অনেক রবীন্দ্রসংগীত প্রতিভার সৃষ্টি হয়েছিল তাঁর হাত ধরে।

১৯৯২ সালের ২৪ মে কলকাতার সল্টলেকে শৈলজারঞ্জন মজুমদার প্রয়াত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত