বেতন বৃদ্ধির দাবি শ্রমিকদের

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২২, ০৮: ২০
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২২, ১৪: ০৩

হবিগঞ্জে বেতন বাড়ানো, শ্রমঘণ্টা কমানোসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করেছেন আরগন স্পিনিং মিলের শ্রমিকেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার দরিয়াপুরে স্পিনিং মিলের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

এ সময় উত্তেজিত শ্রমিকেরা শায়েস্তাগঞ্জ-হবিগঞ্জ সড়কে নেমে এলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে মালিকপক্ষ বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা কাজে ফেরেন।

আফজল আলী নামে এক শ্রমিক জানান, সরকার শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন সাড়ে আট হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু আরগন স্পিনিং লিমিটেড নিজেদের ইচ্ছেমতো বেতন নির্ধারণ করেছে। তারা অধিকাংশ শ্রমিককেই ৫ হাজার ২০০ টাকা বেতন দিয়ে থাকেন। আবার ৮ ঘণ্টা কাজ করানোর কথা থাকলেও ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা কাজ করান।

আফজল আলী বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা মালিকপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনায় বসলেও কোনো সমাধান আসেনি। তাই আজকে এই আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে।

ফারজানা আক্তার নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘বেতন কম দিয়ে বেশি সময় কাজ করায় আরগন স্পিনিং লিমিটেড। এমনকি শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন কর্তৃপক্ষের কাছে বেতন বাড়ানোর দাবি জানালেও তারা আমাদের কথা মূল্যায়ন করেন না।’

শ্রমিক নূর জাহান বেগম বলেন, ‘বেতন কম দেয়। আবার বেশি সময় কাজ করিয়েও ওভারটাইম টাকা দেয় না। লাঞ্চ টাইমও ঠিকভাবে দেওয়া হয় না আমাদের। কর্তৃপক্ষ পুতুলের মতো আমাদের নাচাচ্ছে। আর আমরা অসহায় হওয়ার কোনো প্রতিবাদ করছিন না।’

তিনি বলেন, কোম্পানির ভেতরে নারীদের জন্য মেস রয়েছে। সেখান থেকে বের হতে হলেও তাদের অনুমতি লাগে। আজকে যাতে শ্রমিকেরা আন্দোলনে আসতে না পারে, সে জন্য শ্রমিকদের মেসের মধ্যে আটকে রাখা হয়েছে।

আলতাব আহমেদ বলেন, ‘যে পরিমাণে কাজ করায় সে অনুযায়ী বেতন দেয় না। আমাদের লাঞ্চের সময় কিংবা নামাজের সময়ও দেয় না। আমরা চাই বেতন বাড়ানো হোক ও কাজের সময় কমানো হোক। আর বেশি সময় কাজ করালে ওভারটাইমের টাকাসহ লাঞ্চ ও নামাজের বিরতি দিতে হবে।’

প্রথম অবস্থায় আন্দোলনকারী শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে গেটের ভেতরে আন্দোলন করেন। এ সময় কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে দুপুরের তাঁরা হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন আরগন স্পিনিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গফুর রব্বানি। এ সময় তিনি শ্রমিকদের সকল দাবি মেনে নিয়ে আলোচনায় বসার আহ্বান জানালে শ্রমিকেরা তাঁদের অবরোধ তুলে নেন।

এদিকে সড়ক অবরোধের কারণে প্রায় ২ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এ সময় সড়কের দুপাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তি পোহাতে হয় ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করা মানুষদের।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গফুর রব্বানি বলেন, ‘এখানে কোনো সমস্যা হয়নি। শ্রমিকদের মধ্যে ছোট একটি ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। আলোচনার মাধ্যমে সেটি সমাধান হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত