Ajker Patrika

চার খুঁটিতেই থামল কাজ

বদরুল ইসলাম মাসুদ, বান্দরবান
চার খুঁটিতেই থামল কাজ

পর্যটকদের নিরাপদে পারাপারের জন‍্য বান্দরবান সদরের শৈলপ্রপাতে একটি ঝুলন্ত সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু পরিকল্পনা ছাড়া থোক বরাদ্দ দিয়ে কাজ শুরু করায় চারটি খুঁটি স্থাপনের পরই কাজ থেমে গেছে।

জানা গেছে, তিন লাখ টাকা বরাদ্দে সেতুটির নির্মাণ শুরু করলেও মাত্র চারটি খুঁটি (পিলার) নির্মাণের পর কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। সেতুটি নির্মাণে অন্তত ছয় লাখ টাকা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবান-চিম্বুক সড়কের আট কিলোমিটার এলাকায় জেলা প্রশাসন পরিচালিত পর্যটনকেন্দ্র শৈলপ্রপাতে ‘সৌন্দর্য বর্ধন ও ঝুলন্ত সেতু’ নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয় পিআইও কার্যালয়। সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) পরামর্শে প্রকল্পটি নেওয়া হয়।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সদর পিআইও কার্যালয়ের মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩০ ফুট দীর্ঘ ও ৭ ফুট উচ্চতায় ঝুলন্ত সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা এই কাজ ১৫ অক্টোবর থেকে বন্ধ রয়েছে। উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় শৈলপ্রপাত হওয়ায় পিআইসির সভাপতি হন ওই ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য লাল হাই বম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ৩ লাখ টাকায় ১১ ফুট উচ্চতার আরসিসি পিলারের ওপর ৩০ ফুট দীর্ঘ ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ প্রায় অসম্ভব।

এদিকে ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তাঁরা বলেন, সেতু হলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট হবে। এ ছাড়া শৈলপ্রপাত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বম জনগোষ্ঠীর পানি সংগ্রহ, গোসল ও হাঁড়িপাতিল ধোয়ার স্থান। তারা, বিশেষ করে নারীরা সেখানে গোসল ও হাঁড়িপাতিল ধোয়ার কাজ করেন। ওপরে ঝুলন্ত সেতু হলে পর্যটকদের কারণে নারীদের গোসলসহ অন্য কাজেও বিঘ্ন ঘটবে এবং তাঁরা যৌন হয়রানির শিকার হবেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, শৈলপ্রপাতের ঝরনার অংশের এপার-ওপারে দুটি করে চারটি আরসিসি পিলার স্থাপন করা হয়েছে। কিছুদিন ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানান সেখানকার বাসিন্দা ও ব‍্যবসায়ীরা। বরাদ্দের তিন লাখের এক লাখ টাকার বেশি শুধু চারটি পিলার তুলতেই খরচ হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ বাকি টাকায় সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।

ইউপি সদস্য ও পিআইসির সভাপতি লাল হাই বম বলেন, কাজ শুরু হয়েছে। জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় বরাদ্দ টাকা দিয়ে কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তবে পিলার নির্মাণের পর তা শুকানোর জন‍্য কাজ বন্ধ রয়েছে।

সদর উপজেলা পিআইও মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তাঁর দায়িত্ব নেওয়ার আগেই প্রকল্প নেওয়া হয়। তাঁর দায়িত্ব পালনের সময়ে ঝুলন্ত সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। তবে তিনি স্বীকার করেন, বরাদ্দ তিন লাখ টাকায় ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ সম্ভব নয়। বর্তমানে নির্মাণসামগ্রী ও শ্রমিকের পারিশ্রমিক বেড়ে যাওয়ায় ব‍্যয় বরাদ্দের পরিমাণ অন্তত দ্বিগুণ করা দরকার। বর্তমানে চারটি পিলার নির্মাণেই এক লাখ টাকার বেশি ব‍্যয় হয়েছে।

ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ করা হলে শৈলপ্রপাতের সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হবে কি না—এমন প্রশ্নে পিআইও বলেন, ঝুলন্ত সেতু হলে পর্যটকেরা ঝুঁকিপূর্ণ অংশ নিরাপদে পার হতে পারবে। সেখানে দাঁড়িয়ে সৌন্দর্য উপভোগ ও ছবি তোলার সুযোগ হবে। তবে বরাদ্দ তিন লাখ টাকা বাড়ানো না হলে ঝুলন্ত সেতুর বদলে এটি হয়তো পর্যটকদের দাঁড়ানোর স্থান বানানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

রাজধানীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে ইরানের দুই নাগরিককে মারধর

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ: ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা, নিষিদ্ধের দাবি শিক্ষার্থীদের

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে পন্টিংয়ের আরেকটি রেকর্ড ভাঙলেন কোহলি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত