‘টাকার টেনশন নিয়ে তো খেলা যায় না’

আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২: ১৫
Thumbnail image

মাত্র ১৪ বছর বয়সে হয়েছিলেন জাতীয় চ্যাম্পিয়ন। স্বপ্নপূরণের সেই পথে মনন রেজা নীড় জয় করলেন ঈর্ষণীয় এক চূড়া। ফিদে মাস্টার থেকে বসলেন দেশের সর্বকনিষ্ঠ আন্তর্জাতিক মাস্টারের আসনে। দারুণ এই সাফল্যের পাশাপাশি দাবার ছোট্ট ক্যারিয়ারের গল্পটা হাঙ্গেরি থেকে আজকের পত্রিকাকে শুনিয়েছেন মনন রেজা নীড়। নারায়ণগঞ্জের এই কিশোরের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জহির উদ্দিন মিশু

প্রশ্ন: দারুণ একটা সুখবর দিলেন। আপনিই এখন দেশের সর্বকনিষ্ঠ আন্তর্জাতিক মাস্টার। এই প্রাপ্তি কেমন?
মনন রেজা নীড়: আসলে অলিম্পিয়াড শেষ করে এই টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার মূল উদ্দেশ্যই ছিল নর্ম পাওয়া। যদিও ভাবিনি, এতটা দ্রুত এটা (আন্তর্জাতিক মাস্টার) পেয়ে যাব। খবরটা শোনার পর মাকে জানাই। তিনি ভীষণ খুশি হন। আর নিজের খুশির তো সীমা নেই। দেশ থেকে অনেকের ফোন পেয়েছি। সবাই খুব আনন্দিত, বেশ প্রশংসাও করেছেন। 

প্রশ্ন: শেষটা ভালো হলে বোধ হয় আরও ভালো লাগত। যদি জিএম নর্মটা পেতেন...
নীড়: হ্যাঁ, শেষ রাউন্ডে হাঙ্গেরির একজনকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছি। কেন জানি তিনি নিশ্চিন্তে খেলেছেন, আর আমি খানিকটা চাপ অনুভব করেছিলাম। আমি কিন্তু ভালো অবস্থানে ছিলাম। একটু ভুলে ম্যাচটায় ছন্দপতন হয়। শেষ পর্যন্ত আর জেতা গেল না। তবে আমি তাঁকেও জিততে দিইনি। এটা আমার কাছে স্বস্তির। জিতে জিএমের একটা নর্ম পেলে আরও বেশি ভালো লাগত। 

প্রশ্ন: যত দূর জানি, আপনার প্রিয় খেলা ফুটবল। দাবায় এলেন কেন? 
নীড়: ছোটবেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি একটা টান ছিল। এখনো আমি ইউরোপিয়ান ম্যাচ মিস করি না। খুব একটা ব্যস্ততা বা পড়াশোনার চাপ না থাকলে টিভিতে ম্যাচ দেখতে বসে পড়ি। মেসি আমার পছন্দের ফুটবলার আর ক্লাব হিসেবে বার্সাকে ভালো লাগে। কিন্তু ফুটবলের পাশাপাশি দাবাও ভালো লাগত। বাবাকে দেখতাম বাসায় কম্পিউটারে দাবা খেলতে। এই খেলার জন্য তাঁর সময় ব্যয় ও ধৈর্য দেখে আমিও মাঝে মাঝে মুগ্ধ হতাম। এরপর একটা সময় কখন যে দাবার সঙ্গে পুরোপুরি জড়িয়ে গেলাম বুঝতে পারিনি।

প্রশ্ন: আপনি এখন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পড়াশোনার পাশাপাশি দাবার চালও চলে। একসঙ্গে দুটি বিষয় নিয়ে ভাবতে হয়, কখনো বিরক্তি আসে না? 
নীড়: মাঝেমধ্যে তো একগুঁয়েমি চলেই আসে। সে জন্য ফুটবল দেখি বা ফুটবল নিয়ে মাঠে চলে যাই। মনে হচ্ছে, দুই বছর পর আরও কঠিন সময় পার করতে হবে। তার আগে যদি গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়া যায়! কারণ, দুই বছর পর পড়াশোনার চাপটা বাড়বে। তখন দুই দিকে সমানভাবে ভালো করাও কঠিন হয়ে যাবে। সে জন্য বছরে ৮-৯টা টুর্নামেন্টে খেলতে পারলে ভালো হতো। তখন জিএমও দ্রুত পাওয়া যেত। আর খেলার মধ্যে থাকলে মোটেও খারাপ লাগে না। তা ছাড়া কেউ এই খেলাটা আমাকে জোর করে চাপিয়ে দেয়নি। নিজে থেকেই দাবায় এসেছি। তাই খুব একটা খারাপ লাগা কাজ করে না।

প্রশ্ন: বাংলাদেশে দাবা সেভাবে এখনো জনপ্রিয় নয়। আপনার কী মনে হয়, জনপ্রিয়তায় দাবাকে ফুটবল-ক্রিকেটের সারিতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব?
নীড়: অবশ্যই সম্ভব। গত কয়েক বছরে আমাদের উন্নতি ভালোই হয়েছে। সামনে যদি আমরা সরকারের সমর্থন পাই, আরও এগিয়ে যেতে পারব। আসলে দাবায় স্পন্সর খুব দরকার। আর জিএম (গ্র্যান্ডমাস্টার) হতে হলে তো আর্থিক সহযোগিতা আরও বেশি দরকার।দেখেন, আমার স্থায়ী কোনো কোচ নেই। সেভাবে কোচিং করার সুযোগও পাই না। তা ছাড়া টাকার টেনশন নিয়ে তো খেলা যায় না। এই টেনশন যদি না থাকে, নির্ভার হয়ে খেলতে পারব। এরপর একাধিক টুর্নামেন্টে অংশ নিতেও পারব, তখন এমনিতেই ভালো করা যাবে। সব মিলিয়ে স্পনসরটা খুবই জরুরি। যদি স্থায়ীভাবে কোনো স্পনসর পাওয়া যায়, তাহলে তো আরও ভালো। তখন গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়াটাও সহজ হয়ে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

টিউলিপ সিদ্দিকের পতন ঘটাতে বাংলাদেশি ও ব্রিটিশ রাজনীতির আঁতাত

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

কিশোরগঞ্জে বিএনপি নেতা হত্যা: সাবেক চেয়ারম্যানসহ গ্রেপ্তার ৪

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত