ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের (মসিক) বিভিন্ন এলাকায় জমে থাকা পানিতে এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এতে নগরীতে মানুষের মধ্যে ডেঙ্গু সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়েছে। তবে মসিক কর্তৃপক্ষ বলছে, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ৩৩টি ওয়ার্ডে বিশেষ কর্মসূচি চালু রয়েছে। এদিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছে ৫৬ জন। আরও কয়েক দিন ডেঙ্গুর সংক্রমণ বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা।

জানা গেছে, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বলাশপুর এলাকায় জলাবদ্ধতায় দীর্ঘদিন ধরে পানিবন্দী রয়েছে অনেক পরিবার। অনেকের বাসাবাড়িসহ রাস্তাঘাটে পানি থাকায় ডেঙ্গু সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েছে। তবে সিটি করপোরেশন উড়ন্ত মশা নিধনে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

বলাশপুর এলাকার বাসিন্দা ফিরোজা বেগম বলেন, ‘সারা দেশে ডেঙ্গুর উপদ্রব বেড়েছে। আমাদের এলাকায় ছয় মাস ধরে পানি জমে আছে। ড্রেন সংস্কার না হওয়ায় ভোগান্তির মধ্যে রয়েছি। পানিবাহিত রোগ হচ্ছে অনেকের। এখন নতুন করে শঙ্কায় রয়েছি।’

লিটন হোসেন নামের একজন বলেন, জমে থাকা পানিতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সিটি করপোরেশনের কেউ কোনো খোঁজখবর নিচ্ছে না। এলাকায় মশার জন্য দিনদুপুরেও ঘরে থাকা যায় না। সন্ধ্যা হলে মশার আক্রমণ বেড়ে যায়। লিয়াকত হোসেন নামের একজন বলেন, ‘আমরা সিটি করপোরেশনে বসবাস করার পরেও নানাভাবে অবহেলিত। আমাদের দেখার কেউ নেই। কয়েক মাস ধরে পানির মধ্যে বসবাস করছি। পানি জমে থাকায় নানা রোগবালাই হচ্ছে। ডেঙ্গু আতঙ্ক আমাদের কোনোভাবেই কাটছে না।’

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু ইউনিটের ফোকাল পারসন চিকিৎসক কায়সার ইমরান সোহেল বলেন, ডেঙ্গু কমার এখনো কোনো লক্ষণ নেই। বর্তমানে ৫৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে ৪৭ জন পুরুষ। ছয়জন নারী তিনজন শিশু রয়েছে। প্রতিদিন ২০-২৫ জন রোগী ভর্তি হচ্ছে। আরও কয়েক দিন গেলে হয়তো ডেঙ্গুর প্রকোপ কমতে পারে। সবাইকে সচেতন হতে হবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনে খাদ্য ও স্যানিটেশন কর্মকর্তা দীপক কুমার মজুমদার বলেন, ‘উড়ন্ত মশা নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম শেষ হওয়ার পর সিটি করপোরেশনে বিশেষ প্রোগ্রাম চলমান রয়েছে। যদিও সিটি করপোরেশন এলাকায় ডেঙ্গু বাড়ার কোনো শঙ্কা নেই। তবু আমরা মেয়র মহোদয়ের নির্দেশে ডেঙ্গু রোধে চলমান কাজ অব্যাহত রেখেছি।

মসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এস কে দেবনাথ বলেন, ‘এ পর্যন্ত ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন এলাকায় দুজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল। তারা এখন সুস্থ আছে। ডেঙ্গু সংক্রমণ মোকাবিলায় আমরা শুরু থেকেই তৎপর ছিলাম। তাই সফলতা পাচ্ছি। প্রতিদিন আমাদের মানুষকে সচেতন করার জন্য মাইকিংয়ের পাশাপাশি প্রচারপত্র বিলি অব্যাহত রয়েছে।