১২ বছরেই ধরা পড়ল ত্রুটি

পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৮: ৩৮
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ৪১

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপরে ২০১০ সালে উদ্বোধন করা হয় তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু (শাহ আমানত সেতু)। সেতুটির আয়ুষ্কাল ১০০ বছর। তবে নির্মাণের ১২ বছরের মাথাই ধরা পড়ল ত্রুটি। গত সোমবার সেতুর ঝুঁকি চিহ্নিত করে অস্ট্রেলিয়ার বিশেষজ্ঞদের একটি দল। তাদের পরামর্শে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সেতুর দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বারে গতিরোধক (রাম্বল স্ট্রিপ) বসিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ চট্টগ্রাম বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, ‘সেতুটির আয়ুষ্কাল ১০০ বছর। তাই বলে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে না, তা কিন্তু নয়। শাহ আমানত সেতুতে উঠলে সব গাড়ির গতি বেড়ে যায়। গাড়ি ওঠার সময় একটা ধাক্কা লাগে। সেটা ঠেকাতে মূলত রাম্বল স্ট্রিপ বসানো হয়েছে। এ ছাড়া তেমন কিছু হয়নি।’

পিন্টু চাকমা আরও বলেন, ‘তেমন কোনো বড় ত্রুটির বিষয়ে আমি বলতে পারছি না। বিশেষজ্ঞদের একটি দল এসে দেখে গেছে। সেতুর দক্ষিণ অংশে এক্সপানশন জয়েন্টে কিছু ত্রুটি দেখা দিয়েছে। এখন এগুলো সারানোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তাদের পরামর্শে রাম্বল স্ট্রিপ স্থাপন করা হয়েছে।’

সূত্রে জানা গেছে, সেতুটিতে বড় ধরনের কোনো জটিলতা দেখা দিলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের আট উপজেলা, পার্বত্য জেলা বান্দরবান ও কক্সবাজারের সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হবে।

অভিযোগ রয়েছে, সেতুতে গতিরোধক বসানোর কারণে তৈরি হয়েছে নতুন ভোগান্তি। দ্রুতগতিতে আসা গাড়ি হঠাৎ ব্রেক করা যায় না। এতে বড় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। ঘটছে ছোট দুর্ঘটনা।

সরেজমিন দেখা গেছে, শাহ আমানত সেতুর দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রান্তে গতিরোধক সাদা রং দিয়ে মার্কিং করা হয়েছে। গাড়ি হঠাৎ ব্রেক করে ধীর গতিতে চলাচল করছে। তবে কিছু মোটরসাইকেল আরোহী ব্রেক না করায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যাচ্ছে। তারা চোট পাচ্ছে।

মোটরসাইকেলচালক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আগে এ রকম কোনো স্পিডব্রেকার ছিল না। হঠাৎ এমন পদক্ষেপ নেওয়ায় ভোগান্তি হচ্ছে। আমি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে গেছি। আঘাত পেয়েছি।’

বাসচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সড়ক থেকে সেতুতে ওঠার মুহূর্তে গতিরোধক দেওয়া হয়েছে। ভারী যানবাহন ব্রেক করলে সেতুতে আরও বেশি ঝুঁকি তৈরি হবে। নামার মুহূর্তে গতিরোধক দুর্ঘটনা বাড়াতে পারে।’

এ ব্যাপারে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক শফিক আহমেদ সাজীব বলেন, শাহ আমানত সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে নামার সময় যে গতিরোধক বসানো হয়েছে, তাতে সুবিধার চেয়ে দুর্ঘটনা বেশি হবে। বিশেষ করে দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে প্রতিদিন শত শত মানুষ মোটরসাইকেল চালিয়ে শহরে আসেন। এ ছাড়াও চট্টগ্রামের বাইরে থেকে ও কক্সবাজার বেড়াতে যান মোটরসাইকেল চালিয়ে। সেতুর নামার অংশে ওই গতিরোধকে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি তৈরি হয়েছে।

শাহ আমানত সেতু টোল প্লাজার পরিচালক (অপারেশন) অপূর্ব সাহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা তেমন কিছু না। সেতুতে গাড়ির ধাক্কা ঠেকাতে মূলত রাম্বল স্ট্রিপ বসানো হয়েছে। অন্য কোনো কারণ সম্পর্কে আমার জানা নেই।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত