Ajker Patrika

ঘরে বন্যার পানি, বাঁধে আশ্রয়

গঙ্গাচড়া প্রতিনিধি
ঘরে বন্যার পানি, বাঁধে আশ্রয়

‘হামারগুলার মনে হয় এইবার পানিত ডুবি মরা লাগবে। হামার কষ্ট সরকার দেখে না। যখনে একনা আবাদ-সুবাদ করি ঘুরিয়ে দাঁড়ার চেষ্টা করি, তখনে হামাক সর্বস্বান্ত করে দেয় সর্বনাশা তিস্তা।’ গতকাল শুক্রবার আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন বন্যার পানিতে বন্দী হয়ে পড়া গঙ্গাচড়ার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের বাগেরহাট গ্রামের জামেলা খাতুন।

গত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতের ফলে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে উপজেলায় জামেলার মতো পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। লক্ষ্মীটারীর পাশাপাশি তলিয়ে গেছে নোহালী, আলমবিদিতর, কোলকোন্দ ইউনিয়নসহ অনেক এলাকা।

গতকাল শুক্রবার তিস্তাপাড়ের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, বাড়িতে পানি ওঠায় অনেকে রাস্তার ধারে পলিথিনের ছাউনি বানিয়ে তাতে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ ঠাঁই নিয়েছেন বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ও আত্মীয়ের বাড়িতে। নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটসহ খাদ্যের সমস্যা দেখা দিয়েছে।

কোলকোন্দ ইউনিয়নের চর বিনিবিনা গ্রামের বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে। ফলে তাঁরা উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে তাঁদের চাল, ডাল, ভুট্টাসহ সবকিছু পানিতে ভিজে গেছে। এখন পর্যন্ত কোনো ভাত মুখে যায়নি। দোকান থেকে রুটি কিনে বউ-বাচ্চা নিয়ে খেয়ে আছেন।
লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলি গ্রামের গৃহবধূ লাইলি বেগম বলেন, ‘হামরা পানিত যদি ডুবি মরি যাই তবুও কারও মায়া হবার নেয়। প্রতি বছর এভাবে হামার ঘরবাড়ি পানিত ডুবি যায়, নদীত ভাসে নিয়া যায়। তবুও কারও কোনো একনা মায়া হয় না। হামারগুলার যদি টাকা-পয়সা থাকি হয়, তা হলে কি হামরাগুলা এটে কোনা নদীর ধারত পরি থাকি? হামারগুলার একটাই দাবি, সরকার যদি নদীটা বান্দি দেয় তাহইলে হামরাগুলা ছোঁওয়া-পোয়া নিয়া চর বাড়িত আবাদ-সুবাদ করি খাইনো হয়।’

কথা হলে কোলকোন্দ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ আজকের পত্রিকাকে জানান, তাঁর ইউনিয়নের তিস্তা পাড়ের প্রায় ১০০ পরিবার পানিবন্দী। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

আলমবিদিতর ইউপি চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেন সুজন মোবাইল ফোনে জানান, তাঁর ইউনিয়নেও প্রায় ১০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নে প্রায় ২৫০ পরিবার পানিতে আটকে আছে বলে চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল হাদি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এরশাদ উদ্দিন জানান, তিস্তার পানি বৃদ্ধির কারণে বন্দী হয়ে পড়া পরিবারগুলোর বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। যারা ঝুঁকিতে রয়েছেন, দ্রুত তাঁদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হবে। উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন দাবি করেন, পানিবন্দী পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

পাগল বেশে রাস্তায় মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা কন্টেন্ট ক্রিয়েটর সম্পর্কে যা জানা গেল

প্রধান উপদেষ্টার নতুন বিশেষ সহকারী কে এই আনিসুজ্জামান চৌধুরী

সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে জাতিসংঘের ফলকার তুর্কের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল আইএসপিআর

হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত