রুবায়েত হোসেন, খুবি
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে খুলনার গল্লামারি ছিল এক আতঙ্কের নাম। শহরের অদূরে এই জায়গা ছিল বেশ নির্জন, তখন এটি ছিল রেডিও পাকিস্তানের খুলনা কেন্দ্র। পাকিস্তানি বাহিনীর কিছু সদস্য কেন্দ্রটির নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। নির্জনতা ও পাশে বয়ে চলা নদীর কারণেই এই স্থানকে গণহত্যা ও বধ্যভূমির জন্য বেছে নেওয়া হয়।
নিরীহ বাঙালিদের ধরে এনে বেতার ভবনে আটকে রাখা হতো। নির্যাতনের জন্য ভবনের পেছনের একটি দোচালা ঘর ও সামনের চত্বর ব্যবহার করা হতো। মৃত্যু নিশ্চিত হলে লাশগুলো ফেলে দেওয়া হতো সামনে বয়ে যাওয়া নদীতে এবং নির্জন জায়গাটিতে। প্রথম দিকে বাঙালিদের ধরে এনে নির্যাতন শেষে গুলি করা হতো, কিন্তু পরে পাকিস্তানি বাহিনী গুলি খরচ না করে গলা কেটে হত্যা করত। এই বধ্যভূমির স্থানেই পরে প্রতিষ্ঠিত হয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রকাশিত একটি গ্রন্থ থেকে জানা যায়, ১৭ ডিসেম্বর খুলনা শহর মুক্ত হওয়ার পর স্বজনহারা মানুষ ছুটে আসে গল্লামারি বধ্যভূমিতে আপনজনদের লাশ খুঁজে পেতে। এ বধ্যভূমির তখনকার অবস্থার একটি চিত্র তুলে ধরেছেন একাত্তরের বধ্যভূমি ও গণকবর গ্রন্থের লেখক সুকুমার বিশ্বাস। তিনি লিখেছেন, ‘ছবি তুলবার জন্য গল্লামারির অভ্যন্তরে ধানখেতে ঢুকে দেখলাম এক নৃশংস দৃশ্য। একাধিক লাশ পড়ে আছে সেদিকে। একটি কুকুর খাচ্ছে আর দূরে অপর একটি লাশের পাশে আরও একটি কুকুর বসে হাঁপাচ্ছে। মনে হয় মানুষ খেয়ে তার উদর অতিমাত্রায় পরিপূর্ণ।’
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম প্রশাসনিক ভবন তথা শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভবনটি ছিল একতলা বেতারকেন্দ্র। আর ক্যাম্পাসের অনিকেত প্রান্তরজুড়ে ছিল বিশাল এক রেডিও টাওয়ার। এ বেতারকেন্দ্রটি ছিল একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর অন্যতম ভয়াবহ টর্চার সেল। এই ভবনটি থেকে চালানো হতো তৎকালীন বেতার কার্যক্রম। যুদ্ধকালীন এই রেডিও স্টেশন ছিল একটি নির্যাতন ও গণহত্যা কেন্দ্র।
১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষে ৪টি ডিসিপ্লিনে ৮০ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে এ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের সূচনা হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্র-ছাত্রী প্রায় সাত হাজার এবং ডিসিপ্লিন ২৯ টি। একাত্তরে গল্লামারি বধ্যভূমিতে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসররা ঠিক কত লোককে হত্যা করেছে তার সঠিক কোন পরিসংখ্যান জানা যায়নি। এ নিয়ে উল্লেখ করার মতো কোন গবেষণা হয়েছে বলে জানা যায়নি। তবে অমল কুমার গাইনের লেখা ‘গণহত্যা-বধ্যভূমি ও গণকবর জরিপ: খুলনা জেলা’ বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, `গল্লামারিতে প্রায় প্রতিদিন গণহত্যা চালানো হতো। সে হিসেবে এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এখানে কমপক্ষে ২৫০টি গণহত্যা হয়েছে। কয় হাজার মানুষকে এখানে হত্যা করা হয়েছে তা না জানলেও আনুমানিক সে সংখ্যা ১০ হাজারের কম হবে না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাটি ছিল একাত্তরের বধ্যভূমি। এটা দেশের অন্যতম বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃত। এখানকার এই বধ্যভূমির স্মৃতি, নিদর্শন এখনো যা টিকে আছে তা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা আজ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ঐতিহাসিক দায়িত্ব হিসেবে অর্পিত হয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, অনাগত দিনের জন্য তা সংরক্ষণ করতেই হবে। আশা করছি খুব অল্পদিনের মধ্যে আমরা এই বধ্যভূমির নিদর্শন সংরক্ষণে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারব।’
উপাচার্য আরও বলেন, সম্প্রতি সিন্ডিকেট সদস্য, ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য সিন্ডিকেট সদস্যসহ আমি এই স্থানটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের সহযোগিতা নিয়ে এই টর্চার সেলের টিনশেড ভবনটি সংরক্ষণসহ উন্নয়নের বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই স্থানটির নাম হবে ‘গল্লামারি বধ্যভূমি স্মৃতি জাদুঘর, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়’।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে খুলনার গল্লামারি ছিল এক আতঙ্কের নাম। শহরের অদূরে এই জায়গা ছিল বেশ নির্জন, তখন এটি ছিল রেডিও পাকিস্তানের খুলনা কেন্দ্র। পাকিস্তানি বাহিনীর কিছু সদস্য কেন্দ্রটির নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। নির্জনতা ও পাশে বয়ে চলা নদীর কারণেই এই স্থানকে গণহত্যা ও বধ্যভূমির জন্য বেছে নেওয়া হয়।
নিরীহ বাঙালিদের ধরে এনে বেতার ভবনে আটকে রাখা হতো। নির্যাতনের জন্য ভবনের পেছনের একটি দোচালা ঘর ও সামনের চত্বর ব্যবহার করা হতো। মৃত্যু নিশ্চিত হলে লাশগুলো ফেলে দেওয়া হতো সামনে বয়ে যাওয়া নদীতে এবং নির্জন জায়গাটিতে। প্রথম দিকে বাঙালিদের ধরে এনে নির্যাতন শেষে গুলি করা হতো, কিন্তু পরে পাকিস্তানি বাহিনী গুলি খরচ না করে গলা কেটে হত্যা করত। এই বধ্যভূমির স্থানেই পরে প্রতিষ্ঠিত হয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রকাশিত একটি গ্রন্থ থেকে জানা যায়, ১৭ ডিসেম্বর খুলনা শহর মুক্ত হওয়ার পর স্বজনহারা মানুষ ছুটে আসে গল্লামারি বধ্যভূমিতে আপনজনদের লাশ খুঁজে পেতে। এ বধ্যভূমির তখনকার অবস্থার একটি চিত্র তুলে ধরেছেন একাত্তরের বধ্যভূমি ও গণকবর গ্রন্থের লেখক সুকুমার বিশ্বাস। তিনি লিখেছেন, ‘ছবি তুলবার জন্য গল্লামারির অভ্যন্তরে ধানখেতে ঢুকে দেখলাম এক নৃশংস দৃশ্য। একাধিক লাশ পড়ে আছে সেদিকে। একটি কুকুর খাচ্ছে আর দূরে অপর একটি লাশের পাশে আরও একটি কুকুর বসে হাঁপাচ্ছে। মনে হয় মানুষ খেয়ে তার উদর অতিমাত্রায় পরিপূর্ণ।’
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম প্রশাসনিক ভবন তথা শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভবনটি ছিল একতলা বেতারকেন্দ্র। আর ক্যাম্পাসের অনিকেত প্রান্তরজুড়ে ছিল বিশাল এক রেডিও টাওয়ার। এ বেতারকেন্দ্রটি ছিল একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর অন্যতম ভয়াবহ টর্চার সেল। এই ভবনটি থেকে চালানো হতো তৎকালীন বেতার কার্যক্রম। যুদ্ধকালীন এই রেডিও স্টেশন ছিল একটি নির্যাতন ও গণহত্যা কেন্দ্র।
১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষে ৪টি ডিসিপ্লিনে ৮০ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে এ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের সূচনা হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্র-ছাত্রী প্রায় সাত হাজার এবং ডিসিপ্লিন ২৯ টি। একাত্তরে গল্লামারি বধ্যভূমিতে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসররা ঠিক কত লোককে হত্যা করেছে তার সঠিক কোন পরিসংখ্যান জানা যায়নি। এ নিয়ে উল্লেখ করার মতো কোন গবেষণা হয়েছে বলে জানা যায়নি। তবে অমল কুমার গাইনের লেখা ‘গণহত্যা-বধ্যভূমি ও গণকবর জরিপ: খুলনা জেলা’ বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, `গল্লামারিতে প্রায় প্রতিদিন গণহত্যা চালানো হতো। সে হিসেবে এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এখানে কমপক্ষে ২৫০টি গণহত্যা হয়েছে। কয় হাজার মানুষকে এখানে হত্যা করা হয়েছে তা না জানলেও আনুমানিক সে সংখ্যা ১০ হাজারের কম হবে না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাটি ছিল একাত্তরের বধ্যভূমি। এটা দেশের অন্যতম বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃত। এখানকার এই বধ্যভূমির স্মৃতি, নিদর্শন এখনো যা টিকে আছে তা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা আজ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ঐতিহাসিক দায়িত্ব হিসেবে অর্পিত হয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, অনাগত দিনের জন্য তা সংরক্ষণ করতেই হবে। আশা করছি খুব অল্পদিনের মধ্যে আমরা এই বধ্যভূমির নিদর্শন সংরক্ষণে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারব।’
উপাচার্য আরও বলেন, সম্প্রতি সিন্ডিকেট সদস্য, ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য সিন্ডিকেট সদস্যসহ আমি এই স্থানটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের সহযোগিতা নিয়ে এই টর্চার সেলের টিনশেড ভবনটি সংরক্ষণসহ উন্নয়নের বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই স্থানটির নাম হবে ‘গল্লামারি বধ্যভূমি স্মৃতি জাদুঘর, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়’।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৪ দিন আগে