আনিসুল ইসলাম নাঈম
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল (ইইই) বিভাগ থেকে ২০১৭ সালে অর্জন করেন স্নাতক ডিগ্রি। বুয়েট থেকে পাস করার পর শুরু হয় বিসিএস দেওয়ার স্বপ্ন। বাবা জনতা ব্যাংকে চাকরি করতেন। যে কারণে সরকারি চাকরির প্রতি ঝোঁক ছিল ছোটবেলা থেকেই। কিন্তু বিসিএস দিয়ে ক্যাডার হওয়ার চিন্তা আসে বুয়েট থেকে বের হওয়ার পর। বুয়েটে পড়ে অনেকেই দেশের বাইরে চলে যান। কিন্তু তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দেশেই থাকবেন। সে ভাবনা থেকেই নিতে শুরু করেন বিসিএস প্রস্তুতি। ৪০তম বিসিএসে আবগারি ও শুল্ক ক্যাডারে অর্জন করেন প্রথম হওয়ার গৌরব। প্রথম হওয়ার অভিজ্ঞতা ও বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন মো. সাকিব হোসেন।
প্রথম হব এটা কখনোই ভাবিনি
প্রথম হওয়ার অনুভূতি সত্যিই অনেক ভালো। প্রথম যে হব, এটা কখনোই ভাবিনি। আশা ছিল ভালো কিছু হবে, প্রথম হয়ে যাব এমনটা ভাবিনি। তাই প্রথম হওয়ায় আশ্চর্য হয়েছিলাম। প্রথম হওয়ায় অনেক খুশি হয়েছি, মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া সবকিছুর জন্য।
বিসিএস একটি লম্বা জার্নি
৪০তম বিসিএসে অ্যাপ্লাই করি ২০১৮ সালে। এর মধ্যে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে চাকরি হয়ে যায়। পোস্টিং ছিল ভোলা পাওয়ার প্ল্যান্টে। শিফটিং ইনচার্জ হিসেবে অনেক দায়িত্ব থাকায় পড়াশোনা করার তেমন সুযোগ ছিল না। তাই চেষ্টা করতাম নাইট ডিউটি করার জন্য। কারণ রাতে কাজের তেমন চাপ থাকে না। রাতে কন্ট্রোল রুমে বই নিয়ে যেতাম। ডিউটির সময় সারা রাত যতটুকু সম্ভব পড়ার চেষ্টা করতাম। এ ক্ষেত্রে আমার কলিগরা আমাকে সহযোগিতা করেছেন। রিটেনের আগে আমার তেমন কিছু পড়া ছিল না। মাত্র ২৩ দিন সময় পেয়েছি। রিটেনে ইংরেজি ও ম্যাথ তেমন পড়তে পারিনি। তখন ভার্সিটির ৩৮তম বিসিএসের কয়েকজন ক্যাডার ও আমার মেন্টরদের সহযোগিতায় যতটুকু সম্ভব রিটেনের প্রস্তুতি নিই। ভাইবার সময় পোস্টিং ঢাকায় ছিল। এখানে কাজের চাপ বেশি ছিল। নিয়মিত পেপার পত্রিকা পড়ার পাশাপাশি ইংরেজি ফ্লুয়েন্সি বাড়ানোর চেষ্টা করি। তা ছাড়া সিনিয়র ভাইদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছি। বিসিএস একটি লম্বা জার্নি। পুরো জার্নিতে আমি যথাসম্ভব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আসার চেষ্টা করেছি।
প্রিলিমিনারি প্রস্তুতি
সময় বেশি থাকলে প্রিলির পাশাপাশি রিটেনের সঙ্গে যেসব বিষয়ের মিল রয়েছে, সেগুলো পড়তে হবে। যেমন বাংলা সাহিত্য, আইসিটি, বিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। আর সময় কম থাকলে বাজার থেকে ভালো মানের ডাইজেস্ট নিয়ে পড়লে হবে। পাশাপাশি বিগত বছরের পিএসসির প্রশ্নগুলোর সমাধান করা। এতে প্রশ্ন সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায়। বাংলা ২য় পত্রের জন্য নবম-দশম শ্রেণির মুনীর চৌধুরীর বই। ইংরেজি ও ম্যাথের জন্য ডাইজেস্ট ফলো করা। তা ছাড়া বাংলাদেশ বিষয়াবলির জন্য নিয়মিত পেপার পত্রিকা পড়লে বেশ কিছু জানা যায়। বর্তমানে চাকরির পরীক্ষাগুলো ফেয়ার হচ্ছে। তাই যে কেউ নিয়মিত লেখাপড়া করলে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করতে সক্ষম হবেন।
লিখিত পরীক্ষার ওপর নির্ভর করে অনেক কিছু
লিখিত পরীক্ষা ক্যাডার পাওয়ার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ লিখিত ও ভাইভার নম্বরের ওপর ভিত্তি করে ক্যাডার আসে। লিখিতে মোট ৯০০ নম্বরের পরীক্ষা হয়ে থাকে। লিখিতের ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে নম্বর বেশি তোলার সুযোগ রয়েছে, সেগুলোতে ফোকাস করতে হবে। ইংরেজিতে ভালো করার জন্য ইংরেজি পেপার পড়তে হবে। বাংলাদেশ বিষয়াবলির জন্য মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। বাংলার জন্য সাহিত্য ও গ্রামার জানতে হবে। মানসিক দক্ষতা নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে। আন্তর্জাতিকে সমসাময়িক বিষয় থেকে ও সংজ্ঞা টাইপের কিছু প্রশ্ন আসে। সংজ্ঞা টাইপের প্রশ্নের জন্য বাজারের বই ফলো করলেই হবে। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে টপিক অনুযায়ী সিলেবাস শেষ করে যেতে হবে।
বিসিএস সম্পর্কিত সর্বশেষ জানতে- এখানে ক্লিক করুন
ভাইভাতে যা জরুরি
ভাইভার ক্ষেত্রে সমসাময়িক বিষয়াবলি সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। নিয়মিত পেপার পত্রিকা পড়তে হবে। নিজ জেলা, নিজ পঠিত সাবজেক্ট, নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান সম্পর্কে জানতে হবে। ক্যাডার চয়েজের ক্ষেত্রে প্রথম দুটি ক্যাডার চাকরির বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে। ভাইভার সময় কথা বলা, বাক্য উচ্চারণ ও পরিপাটি থাকায় সতর্ক থাকতে হবে। এ ছাড়া ভাইভা বোর্ডে ইংলিশে কথা বলার ফ্লুয়েন্সি থাকলে ভালো হয়। পাশাপাশি সব সময় আত্মবিশ্বাসী ও বিনয়ী থাকতে হবে।
অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম
এই সম্পর্কিত পড়ুন:
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল (ইইই) বিভাগ থেকে ২০১৭ সালে অর্জন করেন স্নাতক ডিগ্রি। বুয়েট থেকে পাস করার পর শুরু হয় বিসিএস দেওয়ার স্বপ্ন। বাবা জনতা ব্যাংকে চাকরি করতেন। যে কারণে সরকারি চাকরির প্রতি ঝোঁক ছিল ছোটবেলা থেকেই। কিন্তু বিসিএস দিয়ে ক্যাডার হওয়ার চিন্তা আসে বুয়েট থেকে বের হওয়ার পর। বুয়েটে পড়ে অনেকেই দেশের বাইরে চলে যান। কিন্তু তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দেশেই থাকবেন। সে ভাবনা থেকেই নিতে শুরু করেন বিসিএস প্রস্তুতি। ৪০তম বিসিএসে আবগারি ও শুল্ক ক্যাডারে অর্জন করেন প্রথম হওয়ার গৌরব। প্রথম হওয়ার অভিজ্ঞতা ও বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন মো. সাকিব হোসেন।
প্রথম হব এটা কখনোই ভাবিনি
প্রথম হওয়ার অনুভূতি সত্যিই অনেক ভালো। প্রথম যে হব, এটা কখনোই ভাবিনি। আশা ছিল ভালো কিছু হবে, প্রথম হয়ে যাব এমনটা ভাবিনি। তাই প্রথম হওয়ায় আশ্চর্য হয়েছিলাম। প্রথম হওয়ায় অনেক খুশি হয়েছি, মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া সবকিছুর জন্য।
বিসিএস একটি লম্বা জার্নি
৪০তম বিসিএসে অ্যাপ্লাই করি ২০১৮ সালে। এর মধ্যে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে চাকরি হয়ে যায়। পোস্টিং ছিল ভোলা পাওয়ার প্ল্যান্টে। শিফটিং ইনচার্জ হিসেবে অনেক দায়িত্ব থাকায় পড়াশোনা করার তেমন সুযোগ ছিল না। তাই চেষ্টা করতাম নাইট ডিউটি করার জন্য। কারণ রাতে কাজের তেমন চাপ থাকে না। রাতে কন্ট্রোল রুমে বই নিয়ে যেতাম। ডিউটির সময় সারা রাত যতটুকু সম্ভব পড়ার চেষ্টা করতাম। এ ক্ষেত্রে আমার কলিগরা আমাকে সহযোগিতা করেছেন। রিটেনের আগে আমার তেমন কিছু পড়া ছিল না। মাত্র ২৩ দিন সময় পেয়েছি। রিটেনে ইংরেজি ও ম্যাথ তেমন পড়তে পারিনি। তখন ভার্সিটির ৩৮তম বিসিএসের কয়েকজন ক্যাডার ও আমার মেন্টরদের সহযোগিতায় যতটুকু সম্ভব রিটেনের প্রস্তুতি নিই। ভাইবার সময় পোস্টিং ঢাকায় ছিল। এখানে কাজের চাপ বেশি ছিল। নিয়মিত পেপার পত্রিকা পড়ার পাশাপাশি ইংরেজি ফ্লুয়েন্সি বাড়ানোর চেষ্টা করি। তা ছাড়া সিনিয়র ভাইদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছি। বিসিএস একটি লম্বা জার্নি। পুরো জার্নিতে আমি যথাসম্ভব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আসার চেষ্টা করেছি।
প্রিলিমিনারি প্রস্তুতি
সময় বেশি থাকলে প্রিলির পাশাপাশি রিটেনের সঙ্গে যেসব বিষয়ের মিল রয়েছে, সেগুলো পড়তে হবে। যেমন বাংলা সাহিত্য, আইসিটি, বিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। আর সময় কম থাকলে বাজার থেকে ভালো মানের ডাইজেস্ট নিয়ে পড়লে হবে। পাশাপাশি বিগত বছরের পিএসসির প্রশ্নগুলোর সমাধান করা। এতে প্রশ্ন সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায়। বাংলা ২য় পত্রের জন্য নবম-দশম শ্রেণির মুনীর চৌধুরীর বই। ইংরেজি ও ম্যাথের জন্য ডাইজেস্ট ফলো করা। তা ছাড়া বাংলাদেশ বিষয়াবলির জন্য নিয়মিত পেপার পত্রিকা পড়লে বেশ কিছু জানা যায়। বর্তমানে চাকরির পরীক্ষাগুলো ফেয়ার হচ্ছে। তাই যে কেউ নিয়মিত লেখাপড়া করলে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করতে সক্ষম হবেন।
লিখিত পরীক্ষার ওপর নির্ভর করে অনেক কিছু
লিখিত পরীক্ষা ক্যাডার পাওয়ার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ লিখিত ও ভাইভার নম্বরের ওপর ভিত্তি করে ক্যাডার আসে। লিখিতে মোট ৯০০ নম্বরের পরীক্ষা হয়ে থাকে। লিখিতের ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে নম্বর বেশি তোলার সুযোগ রয়েছে, সেগুলোতে ফোকাস করতে হবে। ইংরেজিতে ভালো করার জন্য ইংরেজি পেপার পড়তে হবে। বাংলাদেশ বিষয়াবলির জন্য মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। বাংলার জন্য সাহিত্য ও গ্রামার জানতে হবে। মানসিক দক্ষতা নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে। আন্তর্জাতিকে সমসাময়িক বিষয় থেকে ও সংজ্ঞা টাইপের কিছু প্রশ্ন আসে। সংজ্ঞা টাইপের প্রশ্নের জন্য বাজারের বই ফলো করলেই হবে। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে টপিক অনুযায়ী সিলেবাস শেষ করে যেতে হবে।
বিসিএস সম্পর্কিত সর্বশেষ জানতে- এখানে ক্লিক করুন
ভাইভাতে যা জরুরি
ভাইভার ক্ষেত্রে সমসাময়িক বিষয়াবলি সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। নিয়মিত পেপার পত্রিকা পড়তে হবে। নিজ জেলা, নিজ পঠিত সাবজেক্ট, নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান সম্পর্কে জানতে হবে। ক্যাডার চয়েজের ক্ষেত্রে প্রথম দুটি ক্যাডার চাকরির বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে। ভাইভার সময় কথা বলা, বাক্য উচ্চারণ ও পরিপাটি থাকায় সতর্ক থাকতে হবে। এ ছাড়া ভাইভা বোর্ডে ইংলিশে কথা বলার ফ্লুয়েন্সি থাকলে ভালো হয়। পাশাপাশি সব সময় আত্মবিশ্বাসী ও বিনয়ী থাকতে হবে।
অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম
এই সম্পর্কিত পড়ুন:
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১৯ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে