তীব্র শীত আর কুয়াশায় আয়ে টান মানুষের

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২২, ১২: ৩৭

মাগুরায় জেঁকে বসেছে শীত। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশায় জবুথবু হয়ে গেছে জনজীবন। সকালটা কুয়াশাচ্ছন্ন থাকায় দুপুরেও সূর্যের দেখা নেই। ঘন কুয়াশায় বাইরে বের হতে না পারায় দিনমজুরি পেশার মানুষেরা পড়েছেন বিপাকে।

গতকাল সোমবার মাগুরা শহরে সূর্যের দেখা মিলেছে বেলা তিনটার দিকে। ঘন কুয়াশায় স্পষ্ট ছিল না রোদের তেজ। সঙ্গে ছিল কনকনে শীত। এমন প্রতিকূল পরিবেশে রিকশা নিয়ে বের হয়েছেন সদরের পাল্লা গ্রামের রিকশাচালক মহিবুর মিয়া। তিনি বলেন, ‘সকাল আটটায় বের হইছি বাড়ি থেকে। এখন বাজে দুপুর ১২টা। ভাড়া মারছি মাত্র ৭০ টাকা। পরিবেশ ভালো না বলে ভাড়া তেমন পাই নাই। অন্য দিন এমন সময় ২০০ টাকার বেশি আয় করি। মানুষ বাড়ি থেকে বের না হলি তো বাড়ি বাজার নিয়ে যাতি হবি নানে!’

শহরের ঢাকা রোডের ভ্যানচালক নুরুল হোসেন কুয়াশায় পড়েছেন বিপদে। প্রতিদিন পাইকারি বাজার থেকে সবজির বস্তা টানার কাজ করলেও গতকালের দৃশ্যটাই ভিন্ন ছিল। তিনি বলেন, ‘পাইকারি বাজারে মানুষ নেই। খুব কম লোক এসেছে, সবজির সরবরাহও কুয়াশায় অন্য দিনের তুলনায় কম। ভাড়া এখন পর্যন্ত তেমন মেলেনি। ৮৫ টাকা দিয়ে আমার চাল কেনাও আজ হবে না।’

বেলা একটার সময়ে কুয়াশা কিছুটা কমতে থাকলেও শীতের তীব্রতায় শহরের পুরান গরম কাপড়ের দোকানে দেখা যায় ভিড়। গরম কাপড় কিনতে আসা দিনমজুর হাসু শেখ বলেন, ‘কাজের জন্য বের হইছি। সেই ফজরের আজানের সময় আইছি। কিন্তু কাজ পাচ্ছি না।

শীত আর কুয়াশায় মানুষ বের হচ্ছে না। তাই কাজ দেবে কে। কিছু টাকা ছিল একটা পুরান গরম কাপড় কিনতেছি। তয় দাম বেশি।’পোস্ট অফিসের সামনে পুরান গরম কাপড় বিক্রেতা বাবুল মোল্লা বলেন, ‘শীত বাড়তেছে। কদিন ধরে তাই গরম কাপড় কিনতি মানুষ এখানে ভিড় করতেছে। শীত যত বাড়বে তত আমাদের বেচা বাড়বে। তবে এই শীত বেশি দিন থাকবে না বলে মনে হয়।’

স্কুলশিক্ষক হাসিনা বেগম বলেন, ‘ভাগ্য ভালো যে বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ। না হলে এই তীব্র শীত ও কুয়াশায় ঠান্ডা বেঁধে যেত। স্কুলের অফিসের কাজ থাকায় যাচ্ছি। তবে রাস্তায় মানুষ কম। যাব সদর থেকে সাত কিলোমিটার দূরে এক গ্রামে। খুব বিপদে আছি শীত নিয়ে।’

মাগুরা পুরাতন বাজার এলাকার ভ্যানে ফল বিক্রেতা জাহিদুল মুন্সি বলেন, ‘কদিন ধরে সকালে কুয়াশা। আবার শীতও কম না। বিক্রি ভালো না। নতুন বছরে ছেলেরা নতুন ক্লাসে উঠবে। তাদের স্কুলের ড্রেস বানাব সেই টাকা গোছাতে পারছি না। খুব বিপদে আছি ভাই।’

মাগুরা সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ন রহমান বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষের এই শীতে যেমন ভোগান্তি চলছে তেমন কৃষকদের জন্য খারাপ সময়। কারণ, বীজতলা ঘন কুয়াশায় নষ্ট হলে ধান রোপণের সময় একটা বড় ধরনের সংকট তৈরি হতে পারে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত