ড. সুব্রত বোস
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের নতুন রূপ ওমিক্রনের রেকর্ড সংক্রমণ শুরু হয়েছে। ব্রিটিশ গবেষকেরা বলছেন, ওমিক্রন করোনার আগের রূপ ডেলটা থেকে বেশি সংক্রামক হলেও অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী। ভ্যাকসিন নেওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির আশঙ্কা ডেলটা থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ কম। গত সপ্তাহে প্রকাশিত একাধিক গবেষণা বলছে, ওমিক্রন সৌভাগ্যক্রমে শ্বাসযন্ত্রে করোনার ডেলটা রূপের মতো ক্ষতি করতে পারছে না। এ কারণেই ভয়াবহতা ডেলটা থেকে অনেক কম। সংক্রমণ অনেকটাই শ্বাসতন্ত্রের ওপরের অংশ, অর্থাৎ নাক এবং গলাতেই সীমাবদ্ধ থাকছে। দুর্ভাগ্যক্রমে, শ্বাসতন্ত্রের ওপরের অংশে ভাইরাসের বংশবিস্তার অপেক্ষাকৃত সহজ। শ্বাসতন্ত্রের উপরিভাগে সংক্রমণের কারণেই ওমিক্রন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
ওমিক্রনের এই সংক্রমণের মধ্যেই আশার কথা শোনাচ্ছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং গবেষকেরা। এ বছরেই করোনাভাইরাসের প্রভাব কমে যেতে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন। বলা হচ্ছে, ‘হয়তো মহামারির শেষের শুরু’। অবশ্য এ জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং বিশ্বের সব দেশে ভ্যাকসিনের প্রয়োগ অব্যাহত রাখতে হবে। জনসংখ্যার অনুপাতে ভ্যাকসিনের সমবণ্টন অত্যন্ত জরুরি। ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের অধিকাংশ মানুষকে দ্রুত ভ্যাকসিনের আওতায় আনা দরকার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার সংক্রমণের হার দীর্ঘ সময়ের জন্য ১ শতাংশের নিচে নিয়ে আসা গেলেই আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে এর প্রভাব অনেকটাই কমে যাবে। সংক্রমণের হার ১ থাকার অর্থ হলো একজন সংক্রমিত ব্যক্তি থেকে ভাইরাসটি মাত্র আরেকজনকে সংক্রমণ করতে সক্ষম।
সংক্রমণের হার এখন বেশি হলেও বিজ্ঞানীরা আশাবাদী।
বিজ্ঞানের কল্যাণে বিশ্ব এখন ওমিক্রন বা তার থেকেও শক্তিশালী ভাইরাস মোকাবিলায় আগের থেকে অনেক বেশি অভিজ্ঞ। আমাদের হাতে রয়েছে একাধিক কার্যকরী ভ্যাকসিন, এন্টি-ভাইরাল এবং প্রদাহ-নিরাময়ী ওষুধ। ভাইরাসের নতুন রূপ শনাক্ত করার প্রযুক্তিও গত দুই বছরে বেশ অগ্রগতি লাভ করেছে। অত্যন্ত দ্রুততায় এখন আমরা ভাইরাসের নতুন রোগ শনাক্ত করতে সক্ষম। আর এ কারণেই দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রনের আবির্ভাবের পরপরই তা শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
ভ্যাকসিন তৈরিতে গড়ে সময় লাগে ১০-১৫ বছর। খরচ অধিকাংশ ক্ষেত্রে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি। ১০০টি পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন থেকে মাত্র ৬-৭টি ভ্যাকসিন কার্যকর হয়। ম্যালেরিয়ার জীবাণু শনাক্ত হয় ১৮৮০ সালে। কার্যকর ভ্যাকসিনের দেখা মিলেছে গত বছর।
চিকেন পক্সের প্রাদুর্ভাব হয় ১৯২১ সালে। ভ্যাকসিন আসে ১৯৮১ সালে। বিজ্ঞানের অগ্রগতির কল্যাণে এক নয়, একাধিক কোভিড ভ্যাকসিন তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।
যেকোনো নতুন ওষুধ বা ভ্যাকসিন তৈরির জন্য দরকার বছরের পর বছর নিরবচ্ছিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি বিজ্ঞান গবেষণা। এই গবেষণাগুলোয় সাফল্যের থেকে ব্যর্থতার পরিমাণ ঢের বেশি।
কোভিড-পূর্ববর্তী দুই দশকে বছরের পর বছর ধরে বিজ্ঞান গবেষণায় বরাদ্দ কমেছে। বিজ্ঞানীদের তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে গবেষণার বরাদ্দ পেতে হয়। একটি গবেষণা বরাদ্দের জন্য অসংখ্য আবেদন জমা পড়ে। অনেক বিজ্ঞানীর চাকরি অস্থায়ী। গবেষণা বরাদ্দ যত দিন, তত দিন চাকরি আছে। গবেষণা বরাদ্দ শেষ হলে চাকরি শেষ।
ক্যাটালিন কারিকোকে হয়তো অনেকেই চিনবেন না। ক্যাটালিনের গবেষণার জন্যই এমআরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোভিডের ভ্যাকসিন তৈরি সম্ভব হয়েছে। একাডেমিক ক্যারিয়ারের অধিকাংশ সময়ই অস্থায়ী চাকরি করে গেছেন ক্যাটালিন, বছরে মাত্র ৬০ হাজার ডলার বেতনের, আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ভাবা হয়েছিল করোনার মহামারি থেকে শিক্ষা নিয়ে বিজ্ঞান গবেষণায় বরাদ্দ বিশ্বের ধনী দেশগুলো অনেকাংশে বাড়িয়ে দেবে; বিশেষ করে চিকিৎসা আর শরীরবিজ্ঞানে। কিন্তু এমনটা হয়নি।
২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গবেষণা বরাদ্দ ছিল ১৬৫ বিলিয়ন ডলার। মার্কিন বেসরকারি সংস্থা আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, এ বরাদ্দ ২০২০ সাল থেকে মাত্র ১ শতাংশ বেশি। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের নিজস্ব ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে আমেরিকার প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল ৭০৫ বিলিয়ন ডলারের মতো।
২০২০ সালে, গবেষণা খাতে যুক্তরাজ্য সরকারের বরাদ্দ ছিল ৩৬ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালে এই বরাদ্দ দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে। যদিও এর আগে ৩০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি ছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রতিরক্ষা খাতে যুক্তরাজ্যের বরাদ্দ ছিল ৬০ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার।
বিজ্ঞানের এই মহাযজ্ঞ দেখে আমরা কি আরও বেশি বিজ্ঞানমনস্ক হয়েছি? অসত্য, অর্ধসত্য, ভুল তথ্য এবং গুজব মহামারির আকারে ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে। অনেক ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক বা সংঘবদ্ধভাবে এই গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী এক জরিপে দেখা গেছে, অধিকাংশ ব্যবহারকারী সোশ্যাল মিডিয়াকে কোনো সংবাদের নির্ভরযোগ্য উৎস মনে করেন না; কিন্তু তারপরও তাঁরা নিয়মিত সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টে চোখ রাখেন।
ইন্টারনেটে তথ্যের অবাধ প্রবাহে নির্ভরযোগ্য তথ্য যেমন রয়েছে, সেই সঙ্গে রয়েছে ‘তথ্যবর্জ্য’। তথ্যবর্জ্যের এই প্রবাহ ছড়িয়ে পড়ছে গাণিতিক হারে। সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজবগুলো একবার দেখা শুরু করলেই অ্যালগরিদম একই ধরনের তথ্য বারবার সেই ব্যবহারকারীর সামনে নিয়ে আসতে শুরু করে। গুজবে বিশ্বাসকারীও নিজের বিশ্বাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য খুঁজে থাকেন। গুজব এবং অবৈজ্ঞানিক তথ্যে যাঁরা আস্থা রাখেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গেছে তাঁদের বন্ধু তালিকায়ও সমমনোভাবসম্পন্ন লোকের সংখ্যাই বেশি।
সঠিক তথ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অনেক মানুষ। দিনের পর দিন তাঁদের মনন গড়ে উঠছে অসত্য তথ্যের ওপর ভিত্তি করে। তাঁদের ভুল ধারণাগুলো শোধরানো হচ্ছে না। তৈরি হচ্ছে বিশ্বব্যাপী জ্ঞানের এক বড় ধরনের অসাম্য। অনেক ক্ষেত্রে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষগুলো তথ্য-অপুষ্টির শিকার হচ্ছেন। সব দেশেই। তথ্য-অপুষ্টির সঙ্গে আর্থসামাজিক পরিস্থিতির সম্পর্ক অনেক ক্ষেত্রে না-ও থাকতে পারে। টিকা নিয়ে অসত্য তথ্য প্রচারকারীদের একটি বড় অংশ উন্নত দেশের।
করোনা মহামারি থেকে আগামী দিনে মুক্তি পেলেও, অসত্য, অবৈজ্ঞানিক তথ্যের অবাধ প্রবাহের নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি। বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার প্রসার ঘটলেই অধিক সংখ্যায় বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ তৈরি সম্ভব হবে। তথ্যবর্জ্য কমিয়ে আনতে এবং তথ্যের অপুষ্টি দূর করতে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের পাশাপাশি সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগও জরুরি।
ড. সুব্রত বোস, প্রবাসী বাংলাদেশি এবং বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানির রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের নতুন রূপ ওমিক্রনের রেকর্ড সংক্রমণ শুরু হয়েছে। ব্রিটিশ গবেষকেরা বলছেন, ওমিক্রন করোনার আগের রূপ ডেলটা থেকে বেশি সংক্রামক হলেও অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী। ভ্যাকসিন নেওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির আশঙ্কা ডেলটা থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ কম। গত সপ্তাহে প্রকাশিত একাধিক গবেষণা বলছে, ওমিক্রন সৌভাগ্যক্রমে শ্বাসযন্ত্রে করোনার ডেলটা রূপের মতো ক্ষতি করতে পারছে না। এ কারণেই ভয়াবহতা ডেলটা থেকে অনেক কম। সংক্রমণ অনেকটাই শ্বাসতন্ত্রের ওপরের অংশ, অর্থাৎ নাক এবং গলাতেই সীমাবদ্ধ থাকছে। দুর্ভাগ্যক্রমে, শ্বাসতন্ত্রের ওপরের অংশে ভাইরাসের বংশবিস্তার অপেক্ষাকৃত সহজ। শ্বাসতন্ত্রের উপরিভাগে সংক্রমণের কারণেই ওমিক্রন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
ওমিক্রনের এই সংক্রমণের মধ্যেই আশার কথা শোনাচ্ছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং গবেষকেরা। এ বছরেই করোনাভাইরাসের প্রভাব কমে যেতে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন। বলা হচ্ছে, ‘হয়তো মহামারির শেষের শুরু’। অবশ্য এ জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং বিশ্বের সব দেশে ভ্যাকসিনের প্রয়োগ অব্যাহত রাখতে হবে। জনসংখ্যার অনুপাতে ভ্যাকসিনের সমবণ্টন অত্যন্ত জরুরি। ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের অধিকাংশ মানুষকে দ্রুত ভ্যাকসিনের আওতায় আনা দরকার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার সংক্রমণের হার দীর্ঘ সময়ের জন্য ১ শতাংশের নিচে নিয়ে আসা গেলেই আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে এর প্রভাব অনেকটাই কমে যাবে। সংক্রমণের হার ১ থাকার অর্থ হলো একজন সংক্রমিত ব্যক্তি থেকে ভাইরাসটি মাত্র আরেকজনকে সংক্রমণ করতে সক্ষম।
সংক্রমণের হার এখন বেশি হলেও বিজ্ঞানীরা আশাবাদী।
বিজ্ঞানের কল্যাণে বিশ্ব এখন ওমিক্রন বা তার থেকেও শক্তিশালী ভাইরাস মোকাবিলায় আগের থেকে অনেক বেশি অভিজ্ঞ। আমাদের হাতে রয়েছে একাধিক কার্যকরী ভ্যাকসিন, এন্টি-ভাইরাল এবং প্রদাহ-নিরাময়ী ওষুধ। ভাইরাসের নতুন রূপ শনাক্ত করার প্রযুক্তিও গত দুই বছরে বেশ অগ্রগতি লাভ করেছে। অত্যন্ত দ্রুততায় এখন আমরা ভাইরাসের নতুন রোগ শনাক্ত করতে সক্ষম। আর এ কারণেই দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রনের আবির্ভাবের পরপরই তা শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
ভ্যাকসিন তৈরিতে গড়ে সময় লাগে ১০-১৫ বছর। খরচ অধিকাংশ ক্ষেত্রে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি। ১০০টি পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন থেকে মাত্র ৬-৭টি ভ্যাকসিন কার্যকর হয়। ম্যালেরিয়ার জীবাণু শনাক্ত হয় ১৮৮০ সালে। কার্যকর ভ্যাকসিনের দেখা মিলেছে গত বছর।
চিকেন পক্সের প্রাদুর্ভাব হয় ১৯২১ সালে। ভ্যাকসিন আসে ১৯৮১ সালে। বিজ্ঞানের অগ্রগতির কল্যাণে এক নয়, একাধিক কোভিড ভ্যাকসিন তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।
যেকোনো নতুন ওষুধ বা ভ্যাকসিন তৈরির জন্য দরকার বছরের পর বছর নিরবচ্ছিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি বিজ্ঞান গবেষণা। এই গবেষণাগুলোয় সাফল্যের থেকে ব্যর্থতার পরিমাণ ঢের বেশি।
কোভিড-পূর্ববর্তী দুই দশকে বছরের পর বছর ধরে বিজ্ঞান গবেষণায় বরাদ্দ কমেছে। বিজ্ঞানীদের তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে গবেষণার বরাদ্দ পেতে হয়। একটি গবেষণা বরাদ্দের জন্য অসংখ্য আবেদন জমা পড়ে। অনেক বিজ্ঞানীর চাকরি অস্থায়ী। গবেষণা বরাদ্দ যত দিন, তত দিন চাকরি আছে। গবেষণা বরাদ্দ শেষ হলে চাকরি শেষ।
ক্যাটালিন কারিকোকে হয়তো অনেকেই চিনবেন না। ক্যাটালিনের গবেষণার জন্যই এমআরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোভিডের ভ্যাকসিন তৈরি সম্ভব হয়েছে। একাডেমিক ক্যারিয়ারের অধিকাংশ সময়ই অস্থায়ী চাকরি করে গেছেন ক্যাটালিন, বছরে মাত্র ৬০ হাজার ডলার বেতনের, আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ভাবা হয়েছিল করোনার মহামারি থেকে শিক্ষা নিয়ে বিজ্ঞান গবেষণায় বরাদ্দ বিশ্বের ধনী দেশগুলো অনেকাংশে বাড়িয়ে দেবে; বিশেষ করে চিকিৎসা আর শরীরবিজ্ঞানে। কিন্তু এমনটা হয়নি।
২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গবেষণা বরাদ্দ ছিল ১৬৫ বিলিয়ন ডলার। মার্কিন বেসরকারি সংস্থা আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, এ বরাদ্দ ২০২০ সাল থেকে মাত্র ১ শতাংশ বেশি। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের নিজস্ব ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে আমেরিকার প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল ৭০৫ বিলিয়ন ডলারের মতো।
২০২০ সালে, গবেষণা খাতে যুক্তরাজ্য সরকারের বরাদ্দ ছিল ৩৬ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালে এই বরাদ্দ দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে। যদিও এর আগে ৩০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি ছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রতিরক্ষা খাতে যুক্তরাজ্যের বরাদ্দ ছিল ৬০ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার।
বিজ্ঞানের এই মহাযজ্ঞ দেখে আমরা কি আরও বেশি বিজ্ঞানমনস্ক হয়েছি? অসত্য, অর্ধসত্য, ভুল তথ্য এবং গুজব মহামারির আকারে ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে। অনেক ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক বা সংঘবদ্ধভাবে এই গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী এক জরিপে দেখা গেছে, অধিকাংশ ব্যবহারকারী সোশ্যাল মিডিয়াকে কোনো সংবাদের নির্ভরযোগ্য উৎস মনে করেন না; কিন্তু তারপরও তাঁরা নিয়মিত সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টে চোখ রাখেন।
ইন্টারনেটে তথ্যের অবাধ প্রবাহে নির্ভরযোগ্য তথ্য যেমন রয়েছে, সেই সঙ্গে রয়েছে ‘তথ্যবর্জ্য’। তথ্যবর্জ্যের এই প্রবাহ ছড়িয়ে পড়ছে গাণিতিক হারে। সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজবগুলো একবার দেখা শুরু করলেই অ্যালগরিদম একই ধরনের তথ্য বারবার সেই ব্যবহারকারীর সামনে নিয়ে আসতে শুরু করে। গুজবে বিশ্বাসকারীও নিজের বিশ্বাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য খুঁজে থাকেন। গুজব এবং অবৈজ্ঞানিক তথ্যে যাঁরা আস্থা রাখেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গেছে তাঁদের বন্ধু তালিকায়ও সমমনোভাবসম্পন্ন লোকের সংখ্যাই বেশি।
সঠিক তথ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অনেক মানুষ। দিনের পর দিন তাঁদের মনন গড়ে উঠছে অসত্য তথ্যের ওপর ভিত্তি করে। তাঁদের ভুল ধারণাগুলো শোধরানো হচ্ছে না। তৈরি হচ্ছে বিশ্বব্যাপী জ্ঞানের এক বড় ধরনের অসাম্য। অনেক ক্ষেত্রে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষগুলো তথ্য-অপুষ্টির শিকার হচ্ছেন। সব দেশেই। তথ্য-অপুষ্টির সঙ্গে আর্থসামাজিক পরিস্থিতির সম্পর্ক অনেক ক্ষেত্রে না-ও থাকতে পারে। টিকা নিয়ে অসত্য তথ্য প্রচারকারীদের একটি বড় অংশ উন্নত দেশের।
করোনা মহামারি থেকে আগামী দিনে মুক্তি পেলেও, অসত্য, অবৈজ্ঞানিক তথ্যের অবাধ প্রবাহের নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি। বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার প্রসার ঘটলেই অধিক সংখ্যায় বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ তৈরি সম্ভব হবে। তথ্যবর্জ্য কমিয়ে আনতে এবং তথ্যের অপুষ্টি দূর করতে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের পাশাপাশি সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগও জরুরি।
ড. সুব্রত বোস, প্রবাসী বাংলাদেশি এবং বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানির রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে