পানিশূন্য খাল, চৌচির খেত

হারুনুর রশিদ, রায়পুরা
প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২২, ০৮: ১৮
আপডেট : ১০ মার্চ ২০২২, ১৫: ৩৩

নরসিংদীর রায়পুরার চর আড়ালিয়া ইউনিয়নের কাটাখাল দুই যুগেও খনন করা হয়নি। এতে ক্রমাগত পলি জমে পানির প্রবাহ কমে গেছে খালটির। এতে এই খালের পানির ওপর নির্ভরশীল এ অঞ্চলের চাষিদের চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। চলতি বোরো মৌসুমে কাটাখালের পানির ওপর নির্ভর করেই ৫০০ একর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। এখন শুষ্ক মৌসুমে খালে তেমন পানি নেই। তাই অনেক ধানখেত শুকিয়ে গেছে। অনেক ধানি জমি শুকিয়ে পাতায় হলুদ রং দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, সেচের পানির অভাবে ক্ষতির শঙ্কা করছেন এখানকার বেশির ভাগ কৃষক। এই সমস্যা সমাধানে তিন কিলোমিটার অংশ দ্রুত খননের মাধ্যমে খালটির পানির প্রবাহ সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হোক। অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, খালটি খননের প্রস্তাব অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন হলেই দ্রুত খালটি খনন করা হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, খালে পানি নেই বললেই চলে। এই এলাকার বেশির ভাগ মানুষ কৃষির সঙ্গে জড়িত। সেচের পানির জন্য কাটাখালের পানির ওপর নির্ভরশীল তাঁরা। কিন্তু খালটিতে পলিমাটি জমে পানির প্রবাহ কমে গেছে।

স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় চর আড়ালিয়ার ২০০ কৃষক কাটাখালের পানি দিয়ে চাষাবাদ করতেন। তাঁদের ৫০০ একর জমির জন্য ৮টি সেচ পাম্প বসানো হয়েছে। এসব পাম্প যথেষ্ট নয়। এদিকে খালে পানি না থাকায় ধানখেতের মাটি ফেটে চৌচির হচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে পলি জমে কাটাখাল এখন অস্তিত্বসংকটে। দুই যুগেও খাল খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি প্রশাসনের পক্ষ থেকে। এতে ফসল উৎপাদন ব্যাহতসহ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কায় আছেন তাঁরা।

স্থানীয় কৃষক নাসির উদ্দিন, শাহ আলম, নোয়াব মিয়া ও আক্তার মিয়া বলেন, কাটাখালের পানির ওপর নির্ভর করেই ৫০০ একর জমিতে বোরো চাষ করা হয়। শুষ্ক মৌসুমে খালে তেমন পানি নেই। ফলে ধানখেত শুকিয়ে গেছে। পাতায় হলুদ রং দেখা দিয়েছে। খালটির তিন কিলোমিটার অংশ দ্রুত খননের দাবি জানান তাঁরা।

চর আড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান সরকার বলেন, এই জনপদের বেশির ভাগ মানুষ কৃষির সঙ্গে জড়িত। সেচের পানির জন্য কাটাখালের ওপর নির্ভরশীল তাঁরা। কিন্তু খালটিতে পলিমাটি জমে পানির প্রবাহ কমে গেছে। এতে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। দুই যুগেও খালটি খনন করা হয়নি। কৃষকদের দুর্ভোগ লাঘবে কাটাখাল খনন এখন সময়ের দাবি।

রায়পুরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নাব্য কমে যাওয়ায় কাটাখালের পানির প্রবাহ কমে গেছে। এতে ফসল উৎপাদন কমবে। ফলে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। খালটি খনন করা প্রয়োজন।

এ নিয়ে জানতে চাইলে নরসিংদী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) শাহাবউদ্দিন আহমেদ বলেন, ৬৪ জেলার খাল খনন প্রোগ্রামের মধ্যে কাটাখালটি রয়েছে। এর দুই কিলোমিটার অংশ খনন প্রস্তাবনায় আছে। ইতিমধ্যে প্রথম ধাপে অনেক খাল খননের অনুমোদন পেয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে অনুমোদনের অপেক্ষায় এই কাটাখাল। অনুমোদন পেলেই দ্রুত খালটির খননকাজ শুরু হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত