Ajker Patrika

গরু চুরির আতঙ্কে গ্রামে গ্রামে রাত জেগে পাহারা

গরু চুরির আতঙ্কে গ্রামে গ্রামে রাত জেগে পাহারা

যশোরের ঝিকরগাছায় গরু চুরি থামছে না। গত ছয় মাসে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষকের অন্তত অর্ধশত গরু চুরি হয়েছে। উপজেলার গ্রামে গ্রামে কৃষকেরা এখন গরু চুরির আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছেন।

সর্বশেষ গত শনিবার রাতে উপজেলার কীত্তিপুর গ্রামের আলমগীর হোসেনের গরু চুরি হয়। এর আগে ২৫ জুলাই রাতে পাশের গ্রাম মল্লিকপুরের আব্বাস আলীর তিনটি গরু চুরির ঘটনা ঘটে। 
এসব চুরি ঠেকাতে গ্রামবাসী রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। আবার গরু চুরি ঠেকাতে সামর্থ্যবান কৃষকেরা গোয়ালঘরের আশপাশে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাও লাগিয়েছেন। সঙ্গে বিদ্যুতের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

শুধু মল্লিকপুর গ্রামের আলমগীর বা আব্বাস আলীর গরু চুরির ঘটনাই নয়, প্রায় রাতেই উপজেলার কোথাও না কোথাও ঘটছে এমন ঘটনা। এতে কৃষিকাজের প্রধান অনুষঙ্গ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন স্বল্প আয়ের কৃষকেরা। পরপর চুরির এসব ঘটনা ঘটতে থাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

গত শনিবার চুরি হওয়া গরুর মালিক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘গরুটি চুরি যাওয়ায় বিপদে পড়েছি। গরুটির বাজারমূল্য অন্তত ১ লাখ টাকা।’একই ঘটনার শিকার আব্বাস আলীর স্ত্রী সেলিনা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী অসুস্থ। কোনো কাজ করতে পারেন না। গরু-ছাগল আর হাঁস-মুরগি পালন করে আমার সংসার চলে। সেদিন আমরা বারান্দায় না ঘুমিয়ে ঘরে ঘুমাচ্ছিলাম। এ সুযোগে চোরেরা গোয়ালঘরের দেয়াল ভেঙে একটি গাভি আর দুটি এঁড়ে বাছুর চুরি করে নিয়ে যায়। গরুগুলোর মূল্য প্রায় ৩ লাখ টাকা। ঋণ নিয়ে আমরা গরুর খাবার কিনি। গরুগুলো হারিয়ে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি।’

গত বৃহস্পতিবার উপজেলার নবীবনগর বাসস্ট্যান্ড মোড়ে একটি চা-দোকানে গরু চুরির ঘটনা নিয়ে আতঙ্কের কথা বলছিলেন কৃষক গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, ‘মাস দেড়েক আগে আমার গোয়ালের তালা ভেঙে দুটি গরু চুরি করে নিয়ে গেছে চোরেরা। এখন নিজেদের গরু নিয়ে আমাদের এলাকার মানুষ শঙ্কিত। তাই রাত জেগে গরু পাহারা দিই।’

বামন আলী গ্রামের মিরাজ হোসেন মিঠু বলেন, ‘এলাকায় গরু চুরি বেড়ে যাওয়ায় রাত জেগে পাহারা দেন অনেকে। আমরা বাড়ি ও গোয়ালঘরের আশপাশে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসিয়েছি।’ 
গদখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী বলেন, ‘গরু চুরির বিষয়টি নিয়ে আমি থানার ওসির সঙ্গে কথা বলেছি। উপজেলা পরিষদের মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায়ও বিষয়টি উত্থাপন করেছি।’

গরু চুরির বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ভক্ত বলেন, ‘গরু চুরির অভিযোগে ইতিমধ্যে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে পাঁচ-ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। পুলিশ চোর নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত