নদের তীরের মাটি লুট ভাঙনের আশঙ্কা

মির্জাপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০৬: ৪৭
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ০৫

মির্জাপুর উপজেলায় ঝিনাই নদের তীর থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। ট্রাকে করে এ মাটি সরবরাহ করা হয় অন্যত্র। অপরিকল্পিতভাবে মাটি কাটার ফলে দেখা দিয়েছে ভাঙনের শঙ্কা। এতে নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি।

সরেজমিন দেখা গেছে, ফতেপুর ইউনিয়নের থলপাড়া গ্রামের বৈলানপুর এলাকার একাধিক স্থান থেকে ঝিনাই নদের তীরের মাটি কাটছে প্রভাবশালী একটি মহল। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে লুটের এই মহোৎসব। দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন লাখ টাকার মাটি কেটে নিলেও যেন দেখার কেউ নেই। এভাবে নদীর তীরের মাটি কেটে নেওয়ায় ইতিমধ্যে থলপাড়া এলাকার ফসলি জমি, হাটবাজার, পাকা রাস্তা এবং অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

জানা গেছে, বৈলানপুর গ্রামের হকি মিয়ার ছেলে আমিনুর রহমান ও ছাউয়ালী গ্রামের আফসার মিয়া এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনটি ট্রাকে করে কাটা মাটি বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। লোকাল এক ট্রাক মাটি ২২০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। ফতেপুর গ্রামের রফিক ও কড়াইলের পাপন এবং ছাউয়ালী গ্রামের আফছার উদ্দিন এই অবৈধ মাটি কাটায় জড়িত বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। একইভাবে ছেউটি ও পারদিঘি এলাকায়ও নদীর তীর কেটে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, শুষ্ক মৌসুমে এভাবে তীর কেটে মাটি বিক্রি করায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নদীর গতিপথ পাল্টে যায়। এতে নতুন এলাকা ভাঙনকবলিত হয়।

বৈলাইপুর গ্রামের বাসিন্দা সেলিম মিয়া জানান, শুষ্ক মৌসুমে নদীর তীরকাটা ও বর্ষা মৌসুমে নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙন হচ্ছে। এই ভাঙনে তিনি বাড়ি হারা হয়েছেন বলেও জানান।

ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজম খান বলেন, নদী ও নদী তীরের মাটি কেটে বিক্রি করা এখন এই এলাকার মানুষের পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেক অন্যায় কাজেরই বাধা দিতে পারেন না তিনি। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের আরও সক্রিয় হওয়া উচিত।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আমিনুর রহমান বলেন, ওই জমি তাঁর রেকর্ড করা সম্প্রতি। কয়েক বছর আগে ভেঙে নদীতে চলে গেছে। এখন জেগে ওঠায় সেখান থেকে মাটি কাটছেন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জুবায়ের হোসেন বলেন, মাটি চুরি ঠেকাতে রাত-দিন অভিযান পরিচালনা করে জেল-জরিমানা করা হচ্ছে। ঝিনাই নদীর বৈলানপুর, ছেউটি ও পারদিঘি এলাকায় খোঁজ নিয়ে লুটেরাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত