তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা ওফিরোজ আহমেদ, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)
দেশে বিভিন্ন নৌরুটে বর্তমানে যানবাহন পারাপার করছে ৫৩টি ফেরি। এর মধ্যে ২৬টির আয়ুষ্কাল শেষ হয়েছে অনেক আগে। বাকি ২৭টির মধ্যে ৬টির বয়স হয়েছে ২০ থেকে ৩০ বছর করে। আর সব মিলিয়ে ফিটনেস সনদ নেই ৪৭টি ফেরির।
এই হলো দেশের ফেরিগুলোর হালহকিকত। কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রয়োজনের তুলনায় ফেরির স্বল্পতা আছে। তাই বাধ্য হয়ে চালানো হচ্ছে এমন ভাঙাচোরা ফেরি। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, সরকারি সংস্থার তত্ত্বাবধানে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ফিটনেস সনদ ছাড়া বছরের পর বছর কীভাবে চলছে এসব ফেরি?
অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল অধ্যাদেশ (১৯৭৬) অনুযায়ী, দেশের নৌপথে কোনো নৌযান ৪০ বছর পর্যন্ত চলাচল করতে পারে। শুরুতে নিবন্ধনের সময় মেয়াদ ধরা হয় ৩০ বছর। এরপর বিশেষ জরিপ করে চলাচলের উপযোগী পাওয়া গেলে ৫ বছর করে দুই দফায় ১০ বছর মেয়াদ বাড়ানো যায়। তবে বর্ধিত এ মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আর কোনোভাবেই তা চালানো যাবে না।
মেয়াদোত্তীর্ণ পুরোনো ফেরি কেন চালানো হচ্ছে, জানতে চাইলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম জানান, প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত ফেরি নেই। তাই ইচ্ছা করলেই পুরোনো ফেরি বাতিল করা সম্ভব হয় না। মেরামত করে চালানো হয় পুরোনো এসব ফেরি।
আমানতের বয়স ৪০-এর বেশি
গত বুধবার মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে উল্টে যাওয়া শাহ আমানত ফেরির মেয়াদও শেষ হয়েছে দুই বছর আগে। পাশাপাশি ফিটনেস সনদও ছিল না ফেরিটির। সর্বশেষ গত ১ জুলাই ডকিং থেকে নামানো হয় ফেরিটি। এর আগে গত বর্ষা মৌসুমে পদ্মা সেতুর পিলারে যে চারটি ফেরি ধাক্কা দিয়েছিল, তার একটিরও ছিল না ফিটনেস সনদ।
শাহ আমানত ফেরি দুর্ঘটনার বিষয়টি তদন্ত করবে সংসদীয় কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানকে আহ্বায়ক করে একটি সাব-কমিটি গঠন হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে চলে মোট ২০টি ফেরি। এর মধ্যে ৬টি ফেরি ইউটিলিটি, ২টি ফেরি কে টাইপের ও ১২টি রো রো ফেরি। এর মধ্যে পাটুরিয়া ঘাটে ডুবে যাওয়া রো রো ফেরি শাহ আমানতের বয়স ৪০ বছরের বেশি। একই বয়সী আরও একটি রো রো ফেরি এই ঘাটে চলে, রুহুল আমিন। বাকি ফেরিগুলোর বয়স ৮ বছর থেকে শুরু করে ৩০ বছরের মধ্যে।
প্রতিটা রো রো ফেরি গড়ে প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০, ইউটিলিটি ফেরিতে ১৫০ থেকে ২০০ এবং কে টাইপের ফেরি ১৭০ থেকে ২২০টি ছোট-বড় যানবাহন পারাপার করে থাকে।
বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথ ব্যবহার করে প্রতিদিন প্রায় ৭ হাজার যানবাহন পারাপার হয়ে থাকে। এর মধ্যে বাস আছে ১ হাজার ৪০০, ট্রাক ২ হাজার ৬০০ এবং বাকি ৩ হাজার প্রাইভেট কারসহ অন্যান্য ছোট গাড়ি। এসব যান এবং গাড়ি ছাড়া প্রতিদিন হাজার দশেক মানুষ পারাপার হয়ে থাকে।
মেয়াদোত্তীর্ণ ফেরি দিয়ে যান পারাপার কেন হয়, জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসি পরিচালক (বাণিজ্য) এস এম আশিকুজ্জামান গতকাল বলেন, ‘মেয়াদোত্তীর্ণ বলে কোনো বিষয় নেই। পাঁচ-ছয় বছরের ফেরিগুলোও যেমন মাঝেমধ্যেই সমস্যা হয়, তেমনি ৪০ বছরের ফেরিগুলোরও তেমন সমস্যা হয়। সমস্যা হলেই বিআইডব্লিউটিএর চিফ ইঞ্জিনিয়ার এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন এবং সমস্যার সমাধান করেন। সমস্যা হলে তো সবকিছু নতুন করেই মেরামত করা হয়, তাহলে সেটির যত বয়সই হোক না কেন, তা তো আবার নতুনের মতোই হয়ে যায়।’
দুই দিনে উদ্ধার ১০টি যানবাহন
আমাদের শিবালয় (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজ ‘হামজা’র সাহায্যে নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গত দুই দিনে নয়টি ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে। এখনো পাঁচটি ট্রাক ও তিনটি মোটরসাইকেল তোলা যায়নি। উদ্ধার কমিটির প্রধান বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক ফজলুর রহমান জানান, উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া ডুবুরি দলের সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করছেন। বাকি যানবাহনগুলো উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া ফায়ার সার্ভিস, ঢাকা বিভাগের ইন্সপেক্টর মোকারম হোসেন জানান, উদ্ধারকারী জাহাজ ‘হামজা’ দিয়ে ডুবে যাওয়া ফেরি পানি থেকে তোলা সম্ভব নয়। কারণ ডুবে থাকা ফেরির বিভিন্ন প্রকোষ্ঠে পলি জমে আরও ভারী হওয়ায় হামজা তা টেনে তুলতে পারবে না। এ জন্য উদ্ধারকারী আরেক জাহাজ ‘প্রত্যয়’ আনা হচ্ছে। প্রত্যয় ও হামজার যৌথ প্রচেষ্টায় হয়তো ফেরিটি তোলা যেতে পারে। না হলে ফেরির ভারী অংশ কেটে তুলতে হবে।
জেনেশুনে কেন ঝুঁকি?
বিআইডব্লিউটিএর সূত্র জানায়, দেশের ছয়টি রুটে বছরের পর বছর এসব ফেরি দিয়েই চলছে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার। মেয়াদোত্তীর্ণ ফেরির ব্যাপারে কয়েক মাস পরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠায় বিআইডব্লিউটিসি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব ফেরি বাতিল করে নতুন ফেরি কেনার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বরং পুরোনো ফেরিগুলোর মেয়াদ বাড়িয়ে চালানোর চেষ্টা করা হয়ে থাকে।
নৌপথে যাত্রী নিরাপত্তার নিষয়ে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশিষ কুমার দে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিসি জেনেশুনে পুরোনো এসব ফেরি চালিয়ে যাচ্ছে। একটি সরকারি সংস্থা এ ধরনের কাজ কীভাবে করছে? এতে যাত্রী নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে যাচ্ছে।’
তবে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান এ এস এম আলী কবীর বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিসি শখ করে মেয়াদোত্তীর্ণ ফেরি চালায় না, অনেকটা বাধ্য হয়েই চালায়। এটা একটা অবহেলিত খাত। যথেষ্ট বরাদ্দ দেওয়া হয় না। অনেকেই বলেন নতুন নতুন ব্রিজ হচ্ছে ফেরির দরকার নেই, এটি আসলে ভুল কথা। ফেরির দরকার থাকবেই। তাই যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে বিআইডব্লিউটিএর নতুন ফেরি কেনা দরকার।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নৌযান ও নৌযন্ত্র কৌশল বিভাগের অধ্যাপক মীর তারিক আলী বলেন, ‘বর্তমানে বেশির ভাগ ফেরির মেয়াদ শেষ। এত দিন কেন এসব ফেরি নৌপথে চলছে তার জন্য দায়ী বিআইডব্লিউটিসি ও নৌপরিবহন অধিদপ্তর। যাত্রীদের নিরাপত্তায় অবিলম্বে মেয়াদোত্তীর্ণ ফেরির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।’ তিনি জানান, নৌযানের নিরাপত্তার জন্য রেজিস্ট্রেশন ও সার্ভে করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএর ফেরিগুলোর নিয়মিত সার্ভে করা হয় না এবং থাকে না ফিটনেস সনদ। তাই ফেরি দুর্ঘটনা ঘটে। ফিটনেস সনদ নেওয়া হলে ফেরিতে কী কী সমস্যা আছে, তা আগেই ধরা পড়ে।
দেশে বিভিন্ন নৌরুটে বর্তমানে যানবাহন পারাপার করছে ৫৩টি ফেরি। এর মধ্যে ২৬টির আয়ুষ্কাল শেষ হয়েছে অনেক আগে। বাকি ২৭টির মধ্যে ৬টির বয়স হয়েছে ২০ থেকে ৩০ বছর করে। আর সব মিলিয়ে ফিটনেস সনদ নেই ৪৭টি ফেরির।
এই হলো দেশের ফেরিগুলোর হালহকিকত। কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রয়োজনের তুলনায় ফেরির স্বল্পতা আছে। তাই বাধ্য হয়ে চালানো হচ্ছে এমন ভাঙাচোরা ফেরি। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, সরকারি সংস্থার তত্ত্বাবধানে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ফিটনেস সনদ ছাড়া বছরের পর বছর কীভাবে চলছে এসব ফেরি?
অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল অধ্যাদেশ (১৯৭৬) অনুযায়ী, দেশের নৌপথে কোনো নৌযান ৪০ বছর পর্যন্ত চলাচল করতে পারে। শুরুতে নিবন্ধনের সময় মেয়াদ ধরা হয় ৩০ বছর। এরপর বিশেষ জরিপ করে চলাচলের উপযোগী পাওয়া গেলে ৫ বছর করে দুই দফায় ১০ বছর মেয়াদ বাড়ানো যায়। তবে বর্ধিত এ মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আর কোনোভাবেই তা চালানো যাবে না।
মেয়াদোত্তীর্ণ পুরোনো ফেরি কেন চালানো হচ্ছে, জানতে চাইলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম জানান, প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত ফেরি নেই। তাই ইচ্ছা করলেই পুরোনো ফেরি বাতিল করা সম্ভব হয় না। মেরামত করে চালানো হয় পুরোনো এসব ফেরি।
আমানতের বয়স ৪০-এর বেশি
গত বুধবার মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে উল্টে যাওয়া শাহ আমানত ফেরির মেয়াদও শেষ হয়েছে দুই বছর আগে। পাশাপাশি ফিটনেস সনদও ছিল না ফেরিটির। সর্বশেষ গত ১ জুলাই ডকিং থেকে নামানো হয় ফেরিটি। এর আগে গত বর্ষা মৌসুমে পদ্মা সেতুর পিলারে যে চারটি ফেরি ধাক্কা দিয়েছিল, তার একটিরও ছিল না ফিটনেস সনদ।
শাহ আমানত ফেরি দুর্ঘটনার বিষয়টি তদন্ত করবে সংসদীয় কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানকে আহ্বায়ক করে একটি সাব-কমিটি গঠন হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে চলে মোট ২০টি ফেরি। এর মধ্যে ৬টি ফেরি ইউটিলিটি, ২টি ফেরি কে টাইপের ও ১২টি রো রো ফেরি। এর মধ্যে পাটুরিয়া ঘাটে ডুবে যাওয়া রো রো ফেরি শাহ আমানতের বয়স ৪০ বছরের বেশি। একই বয়সী আরও একটি রো রো ফেরি এই ঘাটে চলে, রুহুল আমিন। বাকি ফেরিগুলোর বয়স ৮ বছর থেকে শুরু করে ৩০ বছরের মধ্যে।
প্রতিটা রো রো ফেরি গড়ে প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০, ইউটিলিটি ফেরিতে ১৫০ থেকে ২০০ এবং কে টাইপের ফেরি ১৭০ থেকে ২২০টি ছোট-বড় যানবাহন পারাপার করে থাকে।
বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথ ব্যবহার করে প্রতিদিন প্রায় ৭ হাজার যানবাহন পারাপার হয়ে থাকে। এর মধ্যে বাস আছে ১ হাজার ৪০০, ট্রাক ২ হাজার ৬০০ এবং বাকি ৩ হাজার প্রাইভেট কারসহ অন্যান্য ছোট গাড়ি। এসব যান এবং গাড়ি ছাড়া প্রতিদিন হাজার দশেক মানুষ পারাপার হয়ে থাকে।
মেয়াদোত্তীর্ণ ফেরি দিয়ে যান পারাপার কেন হয়, জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসি পরিচালক (বাণিজ্য) এস এম আশিকুজ্জামান গতকাল বলেন, ‘মেয়াদোত্তীর্ণ বলে কোনো বিষয় নেই। পাঁচ-ছয় বছরের ফেরিগুলোও যেমন মাঝেমধ্যেই সমস্যা হয়, তেমনি ৪০ বছরের ফেরিগুলোরও তেমন সমস্যা হয়। সমস্যা হলেই বিআইডব্লিউটিএর চিফ ইঞ্জিনিয়ার এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন এবং সমস্যার সমাধান করেন। সমস্যা হলে তো সবকিছু নতুন করেই মেরামত করা হয়, তাহলে সেটির যত বয়সই হোক না কেন, তা তো আবার নতুনের মতোই হয়ে যায়।’
দুই দিনে উদ্ধার ১০টি যানবাহন
আমাদের শিবালয় (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজ ‘হামজা’র সাহায্যে নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গত দুই দিনে নয়টি ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে। এখনো পাঁচটি ট্রাক ও তিনটি মোটরসাইকেল তোলা যায়নি। উদ্ধার কমিটির প্রধান বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক ফজলুর রহমান জানান, উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া ডুবুরি দলের সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করছেন। বাকি যানবাহনগুলো উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া ফায়ার সার্ভিস, ঢাকা বিভাগের ইন্সপেক্টর মোকারম হোসেন জানান, উদ্ধারকারী জাহাজ ‘হামজা’ দিয়ে ডুবে যাওয়া ফেরি পানি থেকে তোলা সম্ভব নয়। কারণ ডুবে থাকা ফেরির বিভিন্ন প্রকোষ্ঠে পলি জমে আরও ভারী হওয়ায় হামজা তা টেনে তুলতে পারবে না। এ জন্য উদ্ধারকারী আরেক জাহাজ ‘প্রত্যয়’ আনা হচ্ছে। প্রত্যয় ও হামজার যৌথ প্রচেষ্টায় হয়তো ফেরিটি তোলা যেতে পারে। না হলে ফেরির ভারী অংশ কেটে তুলতে হবে।
জেনেশুনে কেন ঝুঁকি?
বিআইডব্লিউটিএর সূত্র জানায়, দেশের ছয়টি রুটে বছরের পর বছর এসব ফেরি দিয়েই চলছে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার। মেয়াদোত্তীর্ণ ফেরির ব্যাপারে কয়েক মাস পরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠায় বিআইডব্লিউটিসি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব ফেরি বাতিল করে নতুন ফেরি কেনার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বরং পুরোনো ফেরিগুলোর মেয়াদ বাড়িয়ে চালানোর চেষ্টা করা হয়ে থাকে।
নৌপথে যাত্রী নিরাপত্তার নিষয়ে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশিষ কুমার দে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিসি জেনেশুনে পুরোনো এসব ফেরি চালিয়ে যাচ্ছে। একটি সরকারি সংস্থা এ ধরনের কাজ কীভাবে করছে? এতে যাত্রী নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে যাচ্ছে।’
তবে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান এ এস এম আলী কবীর বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিসি শখ করে মেয়াদোত্তীর্ণ ফেরি চালায় না, অনেকটা বাধ্য হয়েই চালায়। এটা একটা অবহেলিত খাত। যথেষ্ট বরাদ্দ দেওয়া হয় না। অনেকেই বলেন নতুন নতুন ব্রিজ হচ্ছে ফেরির দরকার নেই, এটি আসলে ভুল কথা। ফেরির দরকার থাকবেই। তাই যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে বিআইডব্লিউটিএর নতুন ফেরি কেনা দরকার।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নৌযান ও নৌযন্ত্র কৌশল বিভাগের অধ্যাপক মীর তারিক আলী বলেন, ‘বর্তমানে বেশির ভাগ ফেরির মেয়াদ শেষ। এত দিন কেন এসব ফেরি নৌপথে চলছে তার জন্য দায়ী বিআইডব্লিউটিসি ও নৌপরিবহন অধিদপ্তর। যাত্রীদের নিরাপত্তায় অবিলম্বে মেয়াদোত্তীর্ণ ফেরির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।’ তিনি জানান, নৌযানের নিরাপত্তার জন্য রেজিস্ট্রেশন ও সার্ভে করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএর ফেরিগুলোর নিয়মিত সার্ভে করা হয় না এবং থাকে না ফিটনেস সনদ। তাই ফেরি দুর্ঘটনা ঘটে। ফিটনেস সনদ নেওয়া হলে ফেরিতে কী কী সমস্যা আছে, তা আগেই ধরা পড়ে।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে