Ajker Patrika

দশ টাকা খরচেই অস্ত্রোপচার

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২২, ১৫: ২৯
দশ টাকা খরচেই অস্ত্রোপচার

সরকারি হাসপাতালে স্ত্রীকে মাত্র ১০ টাকায় সিজার (অস্ত্রোপচার) করানো যাবে, এমনটা কখনো কল্পনাও করেননি ইয়াসিন আলী। স্ত্রীর গর্ভাবস্থার ৯ মাস হলে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়ে খরচের কথা শুনে অনেকটা চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। এরপর জানতে পারেন কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ টাকায় সিজার করানোর খবর।

খবর পেয়ে গত সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিন টাকার টিকিট কেটে ও ৭ টাকায় গাইনি বিভাগে ভর্তি করেন তাঁর স্ত্রী জান্নাত আরাকে। ভোরে হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর জন্ম নেয় ফুটফুটে এক ছেলে।

বর্তমানে স্ত্রী ও ছেলে দুজনেই সুস্থ আছেন বলে আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন ইয়াসিন আলী। ইয়াসিন কলারোয়া উপজেলার ৭ নম্বর চন্দনপুর ইউনিয়নের হিজলদি গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে।

সরেজমিনে হাসপাতাল পরিদর্শনে জানা যায়, কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে অ্যানেসথেসিয়া সার্জনের ঘাটতি ছিল। নতুন করে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ৮ জন সহকারী সার্জন (বিসিএস স্বাস্থ্য) যোগদান করেন। ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে এখন ১৩ জন এমবিবিএস চিকিৎসক রয়েছেন। হাসপাতালে নারী-পুরুষ ও শিশুদের জন্য পৃথক ৪টি কক্ষে রয়েছে স্বাস্থ্যসম্মত বেড। পর্যাপ্ত অক্সিজেন ব্যবস্থার সঙ্গে রয়েছে সার্বক্ষণিক চিকিৎসক ও নার্স।

এর মাঝে নতুন করে সরকারি হাসপাতালে চালু হয়েছে সব ধরনের অপারেশন ব্যবস্থার পাশাপাশি সিজারিয়ান অপারেশনও। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান এমন পরিবর্তন হওয়াকে উপজেলাবাসীর জন্য অনেকটা আশার আলো বলছে উপজেলার সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার জিয়াউর রহমান বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসক না থাকার কারণে দীর্ঘদিন জরুরি ও সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ ছিল। কিন্তু হাসপাতালে এখন ১৩ জন এমবিবিএস ডাক্তার রয়েছে। এখন উপজেলার সাধারণ মানুষ হাসপাতালের সরকারি খরচ স্বল্প মূল্যের ৩ টাকার টিকিট কেটে ও ৭ টাকায় ভর্তি হয়ে নিয়মিত সকল ধরনের জরুরি ও সিজারিয়ান অপারেশন করতে পারবে। এ জন্য তিনি উপজেলাবাসীকে হাসপাতালে এসে এমবিবিএস ডাক্তারের চিকিৎসা সেবা পরামর্শ গ্রহণের আহ্বান করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার শফিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে সাধারণ মানুষ এখন থেকে নিয়মিত জরুরি চিকিৎসা সেবাসহ জরুরি ও সিজারিয়ান অপারেশন সরকারি খরচে হতে পারবে। গত সোমবার ভোরে উপজেলার হিজলদি গ্রামের ইয়াসিন আলী তাঁর স্ত্রীকে সরকারি খরচে হাসপাতাল থেকে সিজার করিয়েছেন। এ ছাড়া আমিন উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি হার্নিয়ার অপারেশন হয়েছে।

শফিকুল আরও বলেন, বেসরকারি ক্লিনিকে সিজার হতে গেলে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হয় সেখানে সরকারি হাসপাতালে মাত্র ১০ টাকায় সিজার ও জরুরি অপারেশন করানো হচ্ছে। পাশাপাশি বিনা মূল্যে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য উপজেলার সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চিকিৎসাসেবা নেওয়ার আহ্বান করেন।

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন হোসাইন সাখাওয়াত বলেন, হাসপাতালে চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসক না থাকলে সেবা বিঘ্নিত হয়। তবে সম্প্রতি কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮ জন স্বাস্থ্য ও অ্যানেসথেসিয়া সার্জারি ডাক্তার যোগদান করেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২ বছর এসব চিকিৎসকগণ সেবা দেবেন। হাসপাতালে এসে সাধারণ মানুষ সুষ্ঠুভাবে চিকিৎসাসেবা পাক এটাই আমাদের চাওয়া।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালালের দৌরাত্ম্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হাসপাতাল চত্বর দালালমুক্ত রাখার চেষ্টা করা হয়। হাসপাতালে যদি কোনো দালাল দৌরাত্ম্যের প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত