Ajker Patrika

স্মৃতিতে ওস্তাদ রশিদ খান

বিনোদন ডেস্ক
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ১২: ১৮
স্মৃতিতে ওস্তাদ রশিদ খান

গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বেলা ৩টা ৪৫ মিনিটে চলে গেলেন শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী ওস্তাদ রশিদ খান। শাস্ত্রীয় সংগীতের জগতে ওস্তাদ রশিদ খান জনপ্রিয় এক নাম। তিনি বেঙ্গল শাস্ত্রীয় সংগীত উৎসবে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের শ্রোতাদেরও গান শুনিয়ে মুগ্ধ করেছেন। শিল্পীর মৃত্যুতে সহশিল্পীদের স্মৃতিচারণা নিয়ে এই প্রতিবেদন

ও তো আমার হাতেই তৈরি
—অজয় চক্রবর্তী, সংগীতশিল্পী
আমি এখন কোনো রকম কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই। শব্দ হারিয়ে ফেলছি। ও তো আমার হাতেই তৈরি। চলে যাওয়ার বয়স তো এটা নয়। আজ সংগীতজগৎ এক গুণী শিল্পীকে হারাল। রশিদ খান আমার মনে কতটা জায়গা নিয়ে রয়েছে, তার ব্যাখ্যা আমি ভাষায় ব্যক্ত করতে পারব না। প্রথমে অসুস্থতার খবর পেলাম। তারপর শুনলাম, ভালো আছে। পরের দিনই এ রকম একটা দুঃসংবাদ! আমি আশা করিনি।

বাচ্চা ছেলের মতো আমার কাছে এলে কত কী বলত
—হৈমন্তী শুক্লা, সংগীতশিল্পী
আমার সঙ্গে ভীষণ হৃদয়ের সম্পর্ক ছিল। ও অত বড় পণ্ডিত মানুষ, আমিও কখনো ভাবতাম না, ও কখনো বলেনি। আমি যতটুকু গান গাইতাম, ও প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছে বারবার। খুব ভালোবাসত আমার গান শুনতে। অনেক বাংলা গান শুনেছে। আমার বাবার যে ক্লাসিক্যাল শিক্ষা ছিল, সেটা তাঁকে নাড়া দিয়েছে। কোথাও দেখা হলে বা এক গাড়িতে কোথাও গেলে, কত গল্প হতো। ও পান খেতে খুব ভালোবাসত। আমায় দেখলেই পান বানাতে শুরু করত। সব মনে পড়ছে। আমি কেনা জর্দা খেলে বারণ করত। বলত, দিদি তুমি এগুলো খাবে না। অন্য একটা এনে দিচ্ছি, সেটা খাও। প্রতিবছর ভাইফোঁটা নিতে আসত। শেষ বছর ভাইফোঁটা আর দিতে পারিনি। দুই বছর আগে সেই শেষ। বাচ্চা ছেলের মতো আমার কাছে এলে কত কী বলত। আমি কপালে চুমু খেতাম। কত আদর করতাম। যেখানেই থাকুক ও সুরলোকে থাকুক।

ওস্তাদ রশিদ খান (১৯৬৮-২০২৪) ছবি: বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সৌজন্যে রশিদ খানের ব্যবহার আমাকে থ করে দিয়েছিল
—শিলাজিৎ, সংগীতশিল্পী
এই শতাব্দীর একেবারে গোড়ার দিকে একটা অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। টুকটাক কথা হয়। এর বেশ কিছু বছর পর বিমানবন্দরের লাউঞ্জে আবার দেখা। ধরেই নিয়েছিলাম আমায় চিনতে পারবেন না। তিনি ততক্ষণে আমায় দেখে উঠে দাঁড়িয়েছেন। স্বভাবগতভাবে আমি পণ্ডিত লোকদের এড়িয়ে চলি। কিন্তু রশিদ খানের সেই ব্যবহার আমাকে থ করে দিয়েছিল। জানতে চাইলাম, আপনি আমায় চিনতে পারলেন? জবাবে বললেন, কয়েক বছর আগে আপনার সঙ্গে একই অনুষ্ঠানে গান করলাম, চিনব না কেন? মাঝেমধ্যেই গান শিখতে ইচ্ছা করে আমার। একবার রশিদের বাড়িতে গেলাম। ও আমার থেকে ছোট হলেও পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করি। আমায় গান শেখাতে অনুরোধ করি। তিনি সম্মতিও জানান। তবে সময়ের অভাবে রশিদ খানের কাছে গান শেখার ইচ্ছাটা পূরণ হলো না।

খুব আড্ডাবাজ আর ভালো মানুষ ছিলেন
—বাবুল সুপ্রিয়, সংগীতশিল্পী
১১ তারিখ পর্যন্ত মুম্বাইয়ে শিডিউল কাজ রয়েছে। কাজেই আমি ওকে দেখতে পাব না। খুব খারাপ লাগছে, কারণ, ওর সঙ্গে সম্পর্কটা খুব ব্যক্তিগত ছিল। কদিন আগেও আমরা তার বাড়িতে গিয়ে গান-বাজনা করেছি। খুব মজা করেছি সারা সন্ধ্যা। নিজের হাতে খাবার তৈরি করতে ভালোবাসতেন। কলকাতায় আসার পরে ওর সঙ্গে সম্পর্ক আরও গাঢ় হয়েছিল। খুব আড্ডাবাজ আর খুব ভালো মানুষ ছিলেন। কঠিন পরিশ্রমে নিজেকে তৈরি করেছিলেন। আফসোস রয়ে গেল, শরীর খারাপ হওয়ার পরে যদি দেখা করতে পারতাম। হয়তো বড় শিল্পীরা এমনই ক্ষণজন্মা হয়। ওর চলে যাওয়া সংগীতজগতের বিরাট ক্ষতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আমিনুল ইসলাম নন, শিক্ষা উপদেষ্টা হচ্ছেন অধ্যাপক আবরার

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোঁড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

উপদেষ্টা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

বসুন্ধরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে ২ বিদেশি নাগরিককে মারধর

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত