Ajker Patrika

মিজু-১ ধানে নিজুদের হাসি

সুব্রত কুমার, কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ)
আপডেট : ২৭ মে ২০২২, ১৪: ৫৬
মিজু-১ ধানে নিজুদের হাসি

অধিক ফলনের নতুন ধানের বীজ উদ্ভাবন করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন মিজানুর রহমান (মিজু) নামে এক কৃষক। তিনি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামের বাসিন্দা। নিজের উদ্ভাবিত ধান চাষ করে ভালো ফলন পেয়ে খুশি মিজু। ধানের বীজটি ‘মিজু-১’ ধান নামে দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার ইচ্ছে তাঁর।

‘মিজু-১’ ধান চাষ করা তালসার গ্রামের চাষি নজরুল ইসলাম (নজু), কাশেম আলী, নাছির উদ্দিন, খলিলুর রহমান বলেন, আমরা দুই বছর ধরে এ ধানের চাষ করে আসছি। এ ধান অন্যান্য ধানের থেকে একটু মোটা। তবে উৎপাদনে সবার থেকে বেশি। বাঁশমতি, কাজললতা বিঘায় উৎপাদন হয় ২৫ থেকে ৩০ মণ। আর এ ধান উৎপাদন হয় ৩৫ থেকে ৩৬ মণ। এ ছাড়া এই ধানের বিচালি তুলনামূলক অনেক বেশি লম্বা হয়।

তাঁরা আরও বলেন, এ ধানের বীজ সারা দেশে ছড়িয়ে গেলে এবং চাষ হলে দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। মানুষও চাষ করে অনেক বেশি লাভবান হবেন।

ধানের উদ্ভাবক মিজানুর রহমান মিজু বলেন, ‘আমার নিজের কোনো চাষযোগ্য জমি নাই। পরের জমি ভাগে বর্গা চাষ করি। ২০২০ সালের দিকে আমার চাষ করা ধানের জমিতে কিছু বিশেষ ধান দেখতে পাই। ওই সময় ভাবি, ধানগুলো আলাদা করে চাষ করব। আর বীজ উৎপাদন করব। এরপর ওই জমি থেকে ধান সংগ্রহ করে দেড় কেজি ধান পাই। পরে তা বীজ খোলায় ফেলে চারা তৈরি করে ৫ কাঠা জমিতে চাষ করি। যা থেকে ২০২১ সালে ধান হয় ৯ মণ।’

মিজানুর রহমান বলেন, ‘এক মণ চাল বানিয়ে দেখি ভাতের স্বাদ কেমন? খারাপ হলে তো চাষিদের দেওয়া যাবে না। ওই বছর বাকি ধান স্থানীয় ৫০ থেকে ৬০ জন চাষির কাছে বিক্রি করি। যারা এ বছর চাষ করেছেন এবং ভালো ফলন পেয়ে লাভবানও হয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর ৪ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। বিঘায় ৩৬ মণ করে ধান হয়েছে।’ তিনি জানান, গত বছর ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলেও এ বছর ৫০ টাকা কেজি দরে করছেন।

মিজু বলেন, ‘আমি চাই, এ ধানের বীজ সারা দেশে মিজু-১ ধান নামে ছড়িয়ে পড়ুক। মানুষ ভালো ফলন পেয়ে লাভবান হোক এবং দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করুক।’ তিনি সহায়তা পেতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ চান।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাসিন আলী বলেন, ‘এটাকে ধানের বীজ সিলেকশন বলা হয়। বীজের উদ্ভাবক হতে গেলে, সেটা ন্যাশনাল ফিড বোর্ডের অনুমোদন থাকতে হবে। বীজের ব্যাপারটা আমি জানি। তবে আমি যাইনি। অফিসার আব্দুল্লা আল মামুন গিয়েছিলেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই চাষি দাবি করছেন বিঘায় ৩৫ মণ ফলন হচ্ছে। তবে আমরা ওনার কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে চাষ করলে বুঝতে পারব, আসলে কতটা ফলন হচ্ছে। এটা চাষি পর্যায় দিতে হলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বোর্ডের অনুমতি লাগবে। এ ছাড়া স্থানীয়রা যদি কেউ ওই চাষির কাছ থেকে বীজ নিয়ে চাষ করতে চান, তাহলে করতে পারেন।’ উপজেলায় কত বিঘায় এ ধান চাষ হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার জানা মতে তিনি একা চাষ করেছেন। আর কেউ করেছেন কি না, আমার জানা নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত