Ajker Patrika

লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ, ব্যবসায় কোপ

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২২, ১৪: ০৪
লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ, ব্যবসায় কোপ

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে বিদ্যুৎবিভ্রাটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে ঈদের ব্যবসা, ছোট-বড় কারখানার উৎপাদন ও চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। হিমাগারে রাখা পণ্যের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

লোডশেডিংয়ে ক্ষুব্ধ জনগণের কারণে বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ও নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশি সহায়তা চেয়েছে জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

সমিতির আক্কেলপুর জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, তাদের আওতায় আক্কেলপুরে ৩০ হাজার ও জামালগঞ্জ উপকেন্দ্রের মাধ্যমে ১৬ হাজার পরিবারকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে হচ্ছে। এর মধ্য ৩০ হাজার পরিবারের রাতে বিদ্যুতের চাহিদা থাকে সাড়ে ৮ মেগাওয়াট। দিনের বেলায় চাহিদা থাকে সাড়ে ৬ মেগাওয়াট। বর্তমানে চাহিদার তুলনায় আক্কেলপুর উপকেন্দ্রে বিদ্যুতের ঘাটতি হচ্ছে রাতের বেলা ৪ মেগাওয়াট এবং দিনের বেলায় ২ মেগাওয়াট।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলায় দুটি হিমাগার, ১১টি পোলট্রি খামার ও ছোট-বড় কারখানার প্রায় ২ হাজার উদ্যোক্তা রয়েছেন। এসব সম্পূর্ণ বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল। ঘন ঘন বিদ্যুৎবিভ্রাটের কারণে এগুলো বিপাকে পড়েছে।

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে পোশাক ব্যবসায়ীদের পণ্য বিক্রি করতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ক্রেতারা দিনের বেলা গরমে দোকানের ভেতরে আসতে চাইছেন না। এ ছাড়া কৃষক যাঁরা কৃষিপণ্য হিমাগারে রেখেছেন, তাঁরাও পণ্য নিয়ে শঙ্কায় আছেন। কারণ ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে হিমাগারের যন্ত্রগুলো দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ থাকছে। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের পণ্য উৎপাদনও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

উপজেলা সদরের কলেজ বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী ফেরদৌস আকন্দ বলেন, ঈদ মৌসুমে সারা দিন দোকান খোলা রাখতে হয়। সকালবেলা কিছু ক্রেতা এলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কমে যাচ্ছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ না থাকায় ক্রেতারা আসছেন না।

একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আতিক হোসেন বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন না থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা অনেক রোগী তাঁর প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে আসেন। কিন্তু সময়মতো বিদ্যুৎ না পাওয়ায় রোগী ও স্বজনদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পোলট্রি ফিড মিলের মালিক সোহাগ হোসেন বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে এক দিনের মুরগির বাচ্চা ও খাদ্য উৎপাদনে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। ঘন ঘন বিদ্যুৎ বন্ধ থাকায় জেনারেটর চালাতে হচ্ছে। এতে খরচ বেড়ে যাচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন সাথি আকতার নামের এক নারী বলেন, এমনিতেই দিনে-রাতে গরম, তার মধ্যে কিছুক্ষণ পরপর বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। গরমে সুস্থ হওয়ার চেয়ে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন তিনি। মেসার্স গোপীনাথপুর হিমাগার লিমিটেডের হিসাবরক্ষক আসাদুল ইসলাম বলেন, বারবার লোডশেডিংয়ের কারণে হিমাগারে রাখা আলু নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই সঙ্গে হিমাগারের যন্ত্রগুলো বারবার চালুর ফলে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আক্কেলপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মোহা. আব্দুর রহমান বলেন, গ্যাসের উৎপাদন ঘাটতি এবং জ্বালানিস্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এতে সারা দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হলে আবার বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক হবে। তাই তিনি সবাইকে ধৈর্য ধরতে এবং বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে আহ্বান জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত