বাবলু মোস্তাফিজ, ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া)
১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার চণ্ডীপুর গ্রামে পণ্ডিত পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ১৪ জন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন আরও চারজন।
জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের শুরুর ১৭ দিন হানাদার মুক্ত ছিল কুষ্টিয়া জেলা। জেলা শহর পতনের ফলে তা পুনরায় দখলের জন্য পাকিস্তানি বাহিনী যেন মরিয়া হয়ে ওঠে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পাকশী পাড়ে জড়ো হতে থাকে। প্রতিরোধ করতে ভেড়ামারায় বাঙালি ইপিআর, পুলিশ, আনসার, যুবক ও কিশোরের সমন্বিত দল অবস্থান নেয়। গুটিকয়েক মেশিনগান, এলএমজি, ৩০৩ রাইফেল ও কিছু চাইনিজ রাইফেল নিয়ে শক্ত পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তাঁরা। এপারের গ্রামের মুক্তিকামী মানুষ বিভিন্নভাবে তাঁদের সহযোগিতা করেন।
১৫ এপ্রিল প্রতিরোধ বাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। আধুনিক অস্ত্রের মুখে সামান্য গোলাবারুদ নিয়ে টিকতে না পেরে প্রতিরোধ বাহিনী হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ফ্রন্ট ছেড়ে একটি শক্ত ফ্রন্ট তৈরির জন্য পিছু হটেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পার হয়ে ভেড়ামারায় উপস্থিত হয়। এ খবরে চণ্ডীপুর গ্রামের পণ্ডিত পরিবার বাদে ভেড়ামারা ও আশপাশের গ্রাম থেকে লোকজন নিরাপদ দূরত্বে চলে যায়।
পণ্ডিত পরিবার সূত্রে জানা গেছে, চণ্ডীপুরে ফতেহ আলী পণ্ডিত পরিবারের বসবাস। ফতেহ আলী ব্রিটিশ আমলে শিক্ষক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে সফিউদ্দীন তাঁর দশম শ্রেণি পড়ুয়া ভাতিজা সদরুল ইসলামকে নিয়ে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের যুদ্ধে যোগদান করেন। গ্রামের অধিকাংশ লোকজন নিরাপদে চলে গেলেও পরিবারের দুজন সদস্য যুদ্ধে থাকায় তাঁদের জন্য অপেক্ষায় ছিল পণ্ডিত পরিবার। তাঁরা ফিরলে ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় নিরাপদ দূরত্বে চলে যাওয়ার জন্য চন্দনা নদীর তীরে এসে উপস্থিত হন। কিন্তু সেদিন সন্ধ্যায় চন্দনা নদী পার হতে না পেরে পর দিনের অপেক্ষায় ছিলেন। এদিকে, ফতেহ আলী পণ্ডিতের মেয়ে ও মীর জালালের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা সাজেদা বেগমের প্রসব বেদনা উঠে।
এ অবস্থায় পাকিস্তানি বাহিনী এগিয়ে আসছে। এ অবস্থায় চণ্ডীপুরের চন্দনা নদীর পাড়ে অনীল সরকারের বাড়ির পাশে একটি ঝোপের আড়ালে বড় একটি গর্তে সবাই আশ্রয় নেন। ভোরের দিকে সাইকেলে আক্তারুজ্জামান বাবলু (১৮) পাকিস্তানি বাহিনীর অবস্থান দেখতে যান। পাকিস্তানি সেনারা বাবলুকে দেখে ফেলে পিছু নেয়। একপর্যায়ে ঝোপঝাড় তল্লাশি করে গর্তের কাছে এসে হাজির হয়। খুঁজে পেয়ে তারা ব্রাশ ফায়ার চালায়। মুহূর্তের মধ্যে ১৪টি তাজা প্রাণ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। জানা গেছে, পণ্ডিত বাড়ির ওই দলে ২০ থেকে ২২ জন ছিলেন। এর মধ্যে ১৪ জন শহীদ ও চারজন গুলিবিদ্ধ হন। বাকিরা লাশের নিচে চাপা পড়ে বেঁচে যান।
নিহতদের পণ্ডিত পরিবারের সদস্যরা অনীল সরকারের জমিতে ব্রাশফায়ার স্থলেই কোনো রকম গর্ত খুঁড়ে গণকবর দিয়ে রাখেন। দেশ স্বাধীন হলে ১৪ শহীদের গণকবরটি ওই স্থান থেকে তুলে এনে পণ্ডিত পরিবারের পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পণ্ডিত পরিবারের সব শহীদের জন্য নিজের স্বাক্ষরিত শোক বার্তা পাঠান। এ ছাড়াও দুই হাজার টাকার চেক দেন।
শহীদ পরিবারের গুলিবিদ্ধ সদস্য আমীর খসরু বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হলে ১০ মাস পর গণকবরটি ওই স্থান থেকে তুলে এনে পণ্ডিত পরিবারের পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল গণকবরটি। গত বছর চণ্ডীপুর গণহত্যায় শহীদদের স্মৃতিতে নির্মিত হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধ।’
১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার চণ্ডীপুর গ্রামে পণ্ডিত পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ১৪ জন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন আরও চারজন।
জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের শুরুর ১৭ দিন হানাদার মুক্ত ছিল কুষ্টিয়া জেলা। জেলা শহর পতনের ফলে তা পুনরায় দখলের জন্য পাকিস্তানি বাহিনী যেন মরিয়া হয়ে ওঠে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পাকশী পাড়ে জড়ো হতে থাকে। প্রতিরোধ করতে ভেড়ামারায় বাঙালি ইপিআর, পুলিশ, আনসার, যুবক ও কিশোরের সমন্বিত দল অবস্থান নেয়। গুটিকয়েক মেশিনগান, এলএমজি, ৩০৩ রাইফেল ও কিছু চাইনিজ রাইফেল নিয়ে শক্ত পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তাঁরা। এপারের গ্রামের মুক্তিকামী মানুষ বিভিন্নভাবে তাঁদের সহযোগিতা করেন।
১৫ এপ্রিল প্রতিরোধ বাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। আধুনিক অস্ত্রের মুখে সামান্য গোলাবারুদ নিয়ে টিকতে না পেরে প্রতিরোধ বাহিনী হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ফ্রন্ট ছেড়ে একটি শক্ত ফ্রন্ট তৈরির জন্য পিছু হটেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পার হয়ে ভেড়ামারায় উপস্থিত হয়। এ খবরে চণ্ডীপুর গ্রামের পণ্ডিত পরিবার বাদে ভেড়ামারা ও আশপাশের গ্রাম থেকে লোকজন নিরাপদ দূরত্বে চলে যায়।
পণ্ডিত পরিবার সূত্রে জানা গেছে, চণ্ডীপুরে ফতেহ আলী পণ্ডিত পরিবারের বসবাস। ফতেহ আলী ব্রিটিশ আমলে শিক্ষক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে সফিউদ্দীন তাঁর দশম শ্রেণি পড়ুয়া ভাতিজা সদরুল ইসলামকে নিয়ে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের যুদ্ধে যোগদান করেন। গ্রামের অধিকাংশ লোকজন নিরাপদে চলে গেলেও পরিবারের দুজন সদস্য যুদ্ধে থাকায় তাঁদের জন্য অপেক্ষায় ছিল পণ্ডিত পরিবার। তাঁরা ফিরলে ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় নিরাপদ দূরত্বে চলে যাওয়ার জন্য চন্দনা নদীর তীরে এসে উপস্থিত হন। কিন্তু সেদিন সন্ধ্যায় চন্দনা নদী পার হতে না পেরে পর দিনের অপেক্ষায় ছিলেন। এদিকে, ফতেহ আলী পণ্ডিতের মেয়ে ও মীর জালালের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা সাজেদা বেগমের প্রসব বেদনা উঠে।
এ অবস্থায় পাকিস্তানি বাহিনী এগিয়ে আসছে। এ অবস্থায় চণ্ডীপুরের চন্দনা নদীর পাড়ে অনীল সরকারের বাড়ির পাশে একটি ঝোপের আড়ালে বড় একটি গর্তে সবাই আশ্রয় নেন। ভোরের দিকে সাইকেলে আক্তারুজ্জামান বাবলু (১৮) পাকিস্তানি বাহিনীর অবস্থান দেখতে যান। পাকিস্তানি সেনারা বাবলুকে দেখে ফেলে পিছু নেয়। একপর্যায়ে ঝোপঝাড় তল্লাশি করে গর্তের কাছে এসে হাজির হয়। খুঁজে পেয়ে তারা ব্রাশ ফায়ার চালায়। মুহূর্তের মধ্যে ১৪টি তাজা প্রাণ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। জানা গেছে, পণ্ডিত বাড়ির ওই দলে ২০ থেকে ২২ জন ছিলেন। এর মধ্যে ১৪ জন শহীদ ও চারজন গুলিবিদ্ধ হন। বাকিরা লাশের নিচে চাপা পড়ে বেঁচে যান।
নিহতদের পণ্ডিত পরিবারের সদস্যরা অনীল সরকারের জমিতে ব্রাশফায়ার স্থলেই কোনো রকম গর্ত খুঁড়ে গণকবর দিয়ে রাখেন। দেশ স্বাধীন হলে ১৪ শহীদের গণকবরটি ওই স্থান থেকে তুলে এনে পণ্ডিত পরিবারের পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পণ্ডিত পরিবারের সব শহীদের জন্য নিজের স্বাক্ষরিত শোক বার্তা পাঠান। এ ছাড়াও দুই হাজার টাকার চেক দেন।
শহীদ পরিবারের গুলিবিদ্ধ সদস্য আমীর খসরু বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হলে ১০ মাস পর গণকবরটি ওই স্থান থেকে তুলে এনে পণ্ডিত পরিবারের পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল গণকবরটি। গত বছর চণ্ডীপুর গণহত্যায় শহীদদের স্মৃতিতে নির্মিত হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধ।’
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে