Ajker Patrika

আদানির বিদ্যুৎ বাণিজ্যিক নাকি পরীক্ষামূলক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আদানির বিদ্যুৎ বাণিজ্যিক নাকি পরীক্ষামূলক

ভারতের আলোচিত আদানি গ্রুপ ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় নির্মিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ দেওয়ার দাবি করেছে। তবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) বলছে, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে এখনো বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়নি। এখন তাদের থেকে বিদ্যুৎ নেওয়া হচ্ছে পরীক্ষামূলকভাবে।

গত শুক্রবার আদানি গ্রুপ ভারতের বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (বিএসই) এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ অব ইন্ডিয়া লিমিটেড (এনএসই) কাছে পাঠানো চিঠিতে দাবি করেছে আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৬ এপ্রিল বাংলাদেশে বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ দেওয়া শুরু করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান গতকাল শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি জানি না, আদানি এই দাবিটা কোথা থেকে এবং কিসের ভিত্তিতে করেছে। বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে এখনো কিছু প্রক্রিয়া বাকি আছে।’

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের এক উচ্চপর্যায়ের সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানায়, কয়লার দাম ও ভ্যাট, ট্যাক্স নিয়ে বাংলাদেশের কিছু আপত্তি এখনো সুরাহা হয়নি। ফলে সরকার এখনো কমার্শিয়াল অপারেশন ডেট (সিওডি) ঘোষণা করেনি।

স্টক এক্সচেঞ্জে আদানি পাওয়ার লিমিটেডের সেক্রেটারি দীপক এস পাণ্ডের স্বাক্ষর করা চিঠিতে বলা হয়, ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় অবস্থিত প্রতিটি ৮০০ মেগাওয়াট করে দুই ইউনিটের আলট্রা সুপারক্রিটিক্যাল কেন্দ্রটি বাণিজ্যিক উৎপাদনের অনুমতি পেয়েছে। এই অনুমতির পর প্রথম ইউনিট ৮০০ মেগাওয়াট উৎপাদনসক্ষমতা থেকে নিট ৭৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ৬ এপ্রিল থেকে দেওয়া শুরু করেছে।

দ্বিতীয় ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদনও শিগগির শুরু হবে জানিয়ে চিঠিতে আরও বলা হয়, আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) অনুসারে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ২৫ বছর বিদ্যুৎ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে।

আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে সিপিডিবির সদস্য (উৎপাদন) এস এম ওয়াজেদ আলী সরদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ আসছে। তবে আমরা এখনো বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করেনি। বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করার জন্য যে কমার্শিয়াল অপারেশন ডেট জারি করতে হয়, সেটা এখনো করা হয়নি।’

তবে ওয়াজেদ আলী বলেন, ‘আমরা এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ গ্রহণ করছি। এই বিদ্যুৎ আসাকে বাণিজ্যিক উৎপাদন বলা যায় না।’

গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাণিজ্যিক উৎপাদনের ঘোষণা বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়াল উদ্বোধন করার কথা ছিল। এর আগে গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসার কথা ছিল। গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরকালে আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকারের পর এই ব্যাপারে টুইটও করেছিলেন।

বাণিজ্যিক উৎপাদন কেন শুরু হচ্ছে না এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিপিডিবির সদস্য ওয়াজেদ আলী সরদার আরও বলেন, ‘এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে কিছু সমস্যা আছে। এই জন্য বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হচ্ছে না।’

বিপিডিবির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কয়লার দাম, ক্যাপাসিটি চার্জ নিয়ে আমাদের আপত্তি আছে। তা ছাড়া এই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে ভারত সরকারের কাছ থেকে কর ও ভ্যাটে ছাড় পেয়েছে আদানি। কর ও ভ্যাটে ছাড় পাওয়ায় ক্যাপাসিটি ও মোটা দাগে বিদ্যুতের ইউনিটপ্রতি খরচ কমে আসার কথা। এই কর ছাড়ের সুবিধা আদানি বাংলাদেশকে দিতে চাচ্ছে না। এ বিষয়গুলো এখনো সুরাহা না হওয়ায় বাংলাদেশে এখনো কমার্শিয়াল অপারেশন ডেটের (সিওডি) জন্য তারিখ নির্ধারণ করতে দেরি করছে।’

কবে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এখন বলা যাচ্ছে না। যখন বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে তখন জানতে পারবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত