ভোলার বোরহানউদ্দিনে বেড়েছে চুরির ঘটনা। চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে গ্রামের লোকজনকে অচেতন করে লুট করা হচ্ছে গয়না, টাকা ও দোকানের মালামাল। চুরি ঠেকাতে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গরু চুরি ঠেকাতে গোয়ালঘরে ঘুমাচ্ছেন অনেকে। পুলিশ জানিয়েছে, চোর ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার পক্ষিয়া, সাচড়া, বড়মানিকা, টগবী, হাসাননগর ইউনিয়ন এবং পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় চোরের উপদ্রবে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। অনেকেই চুরির ভয়ে রাত জাগছেন।

জানা গেছে, জুনের শুরু থেকে এ পর্যন্ত পক্ষিয়া ইউনিয়নের ব্যাপারীবাড়ি এলাকা, চকিদারবাড়ি এলাকা, হাওলাদারবাড়ি এলাকা ও ভোলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এলাকায় ৫টি চুরির ঘটনা ঘটে।

ওহিদ হাওলাদার (৬০) নামে এক ব্যক্তি জানান, কয়েক দিন আগে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে বাড়ির সবাইকে অচেতন করে চোরেরা। পরে বাড়ির মালামাল লুট করা হয়। সকালে প্রতিবেশীরা অচেতন অবস্থায় তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

মুন্সিবাড়ি এলাকার সুরমা জানান, গত শুক্রবার তাঁদের বাড়িতে হানা দেয় চোরেরা। কিন্তু রাতে পাহারা দেওয়ায় চুরি করতে পারেনি। চোরের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির লোকজন চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। ফলে চোরেরা পালাতে বাধ্য হয়।

বোরহানউদ্দিন পৌরসভা বাজারের মজিদ মুন্সি জানান, তাঁর মুদি দোকানের সিসি ক্যামেরা কালো পলিথিনে ঢেকে দেয় চোরচক্রের সদস্যরা। তারা বোরকা পরা ছিল। পরে দোকানের মালামাল চুরি করা হয়।

টগবী ইউনিয়নের রুবেল হাওলাদার বলেন, চেতনানাশক ছিটিয়ে বাড়ির মানুষকে অচেতন করে গয়না ও টাকা লুট করা হচ্ছে। এদিকে মানিকা ইউনিয়ন ও পক্ষিয়া ইউনিয়নে গরু চুরির ঘটনা ঘটছে অহরহ। ফলে অনেকেই বাধ্য হয়ে গোয়াল ঘরে রাত কাটাচ্ছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদারকি ও টহলের অভাবে চুরির ঘটনা ঘটছে।

এ বিষয়ে পক্ষিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সরদার বলেন, লোকজনকে অচেতন করে চুরির ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। এতে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। চুরির বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় তুলে ধরা হবে।

মানিকা ইউপির চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দার বলেন, গরু চুরির বিষয়টি উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় তুলে ধরা হয়েছে। বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীন ফকির বলেন, বিভিন্ন এলাকায় বাড়িতে খাবারের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে লোকজনকে অচেতন করে চুরির খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে থানার পক্ষ থেকে মাইকিং করে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হবে। এ ছাড়া অভিযান চালিয়ে চোরচক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।