যে গাছের কাঠে চায়ের বাক্স বানানো হয়

চয়ন বিকাশ ভদ্র
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৩, ০৮: ৪৭

চায়ের বাক্স বানানো হয় কোন কাঠ দিয়ে? কিংবা পাহাড়ের মানুষেরা পিঠে যে ঝুড়ি বহন করেন, সে ঝুড়ি রশি দিয়ে বাঁধা থাকে কপালের সঙ্গে। সেই রশি কিসে তৈরি? বলে রাখি যে এই গাছের বাকল থেকে একধরনের আঁশ পাওয়া যায়, সেই আঁশ দিয়ে একসময় স্থানীয়ভাবে কাপড়ও বুনন করা হতো। না, অত চিন্তা করে ঘাম ঝরানোর প্রয়োজন নেই। বলে দিই, গাছটির নাম উদাল।

এই উদ্ভিদ মগ ও মারমাদের কাছে ফিউ বান, গারোদের কাছে উমাক এবং ম্রোদের কাছে নামসিং নামে পরিচিত। আর ইংরেজিতে এটি হেয়ারি স্টেরকুলিয়া বা এলিফ্যান্ট রোপ ট্রি নামে পরিচিত। ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্রতীরের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন পার্কে দাঁড়িয়ে আছে একটি উদালগাছ। ফুলে ফুলে ভরে আছে গাছ, ঝুলে আছে পুষ্পমঞ্জরি। সব পাতা ঝরে গেছে। ফুলের শোভায় যে কেউ বিমোহিত হবে। উদালগাছের বাদামি রঙের কাঠ সাধারণত নরম ও হালকা হয়। শুনলে অবাক হবেন, এই গাছের কাঠ দিয়ে চায়ের বাক্স বানানো হয়।

শুধু সৌন্দর্য কিংবা ব্যবহার উপযোগিতাই নয়, ঔষধি গুণে ভরপুর উদালগাছ। এর বাকলের শরবত খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে। ফুলের বৃন্ত ছেঁচে পানির সঙ্গে চিনি দিয়ে শরবত করে খেলে প্রস্রাবের সমস্যা ও বাতের ব্যথা দূর হয়। বীজ আগুনে পুড়ে বা ভেজে খাওয়া যায়। এর স্বাদ বাদামের মতো।

চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিশেষ করে বান্দরবান ও কক্সবাজারের মিশ্র চিরসবুজ বনে এবং গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলের পাতাঝরা শালবনের স্যাঁতসেঁতে জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে জন্মানো উদালগাছ দেখা যায়। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-৪ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত