রাহুল শর্মা ও রিমন রহমান রাজশাহী থেকে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ নতুন নয়। গত ৪০ বছরে অন্তত ১০ বার এ ধরনের বড় সংঘর্ষ হয়েছে। তবে এবারের ঘটনা কিছুটা ভিন্নমাত্রা পেয়েছে। কারণ, এর নেপথ্যে রয়েছে রাবি শাখা ছাত্রলীগের অন্তঃকোন্দল, নেতাদের মধ্যে বিভাজন ও নিয়োগ-বাণিজ্যের জন্য নেওয়া অর্থ বঞ্চিতদের ফেরত না দেওয়ায় ক্ষোভ।
গত দুই দিন (শনি ও রোববার) বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন স্থানীয় ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, ছাত্রলীগসহ একাধিক ছাত্রসংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। ১১ মার্চ ঘটনার সূত্রপাত হয় বাসের আসনে বসাকে কেন্দ্র করে। এর জেরে বাসচালক ও তাঁর সহকারীকে মারধর করেন রাবির কয়েকজন শিক্ষার্থী। এতে বাধা দেন বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন বিনোদপুরের ব্যবসায়ীরা। ধাওয়া দেন রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতিকে। সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীরা। আহত হন দুই শতাধিক শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী। পুড়িয়ে দেওয়া হয় দোকান, পুলিশ বক্স ও মোটরসাইকেল। মহাসড়ক আর রেললাইন অবরোধ করে আগুন দেন শিক্ষার্থীরা। লাঞ্ছিত হন তিন সাংবাদিক। ভাঙচুর করা হয় দুটি ক্যামেরা। এসব ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। তবে মামলার সব আসামি অজ্ঞাতনামা। গত শুক্রবার থেকে বিনোদপুর বাজারে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরতে শুরু করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার ওপর নিজ সংগঠনের একটি অংশ এবং স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে ক্ষুব্ধ। এর মূল কারণ নিয়োগ-বাণিজ্যের অর্থ। এ ছাড়া শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে রয়েছে হলের সিট-বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, জোর করে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়া, শিক্ষার্থী নির্যাতন এবং ক্যাম্পাসে একক আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগ।
রাবি ছাত্রলীগের একাধিক নেতা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহান তাঁর মেয়াদ শেষের আগের দিন (২০২১ সালের ৬ মে) বিভিন্ন পদে ১৩৮ জনকে নিয়োগ দেন। এতে ছাত্রলীগ সভাপতি কিবরিয়ার সুপারিশে ২০-২৫ জনের চাকরি হয়। তবে ১৫-২০ জনের চাকরি হয়নি। তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে পদ অনুযায়ী ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা নেন কিবরিয়া। চাকরি না হওয়া ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময় টাকা ফেরত চেয়েও পাননি। এতে তাঁরা ক্ষুব্ধ ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের ক্ষুব্ধ এক নেতা বলেন, ‘কিবরিয়া আমার চাকরি তাঁর বোনকে দিয়েছেন। এ রকম বঞ্চনার হাজারো গল্প আছে। আপনি কতগুলো শুনবেন? আমরা চাই কিবরিয়ার পতন হোক। এ জন্যই “বড় ঘটনা” ঘটাতে আমরা মাঠে ছিলাম।’
স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘নিজের ছেলের চাকরির জন্য কিবরিয়াকে টাকা দিয়েছিলাম। চাকরিও হয়নি, টাকাও পাইনি।’ ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, এ ছাড়া রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগেও কয়েকটি দল-উপদল আছে। তাঁদের কেউ কেউ ‘সুযোগের সদ্ব্যবহার’ করতে চেয়েছেন।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ওই দিন (১১ মার্চ) ছাত্রলীগ সভাপতি কিবরিয়াকে দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন স্থানীয় কিছু মানুষ। কয়েকজন চিৎকার করে বলেন, ‘টাকা নিলেও চাকরি দেয়নি কিবরিয়া, ওকে ধর।’ এরপরই কিবরিয়াকে ধাওয়া দেন স্থানীয়রা। ভাঙচুর করা হয় তাঁর মোটরসাইকেল।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি কিবরিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, চাকরির বিনিময়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এগুলো স্রেফ অপপ্রচার। ছাত্রলীগে কোনো গ্রুপিং নেই। সংঘর্ষ বড় আকার ধারণের ক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষের ইন্ধন থাকতে পারে।
আগুনে ঘি ঢেলেছে ছাত্রলীগের একাংশ
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ছাত্রলীগ সভাপতিকে ধাওয়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বড় আকার নেয়। এ সময় তাঁর পাশে যেমন ছাত্রলীগ ছিল, তেমনি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পক্ষেও রাবি শাখা ও মহানগর ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা ছিলেন। এ ছাড়া কিবরিয়ার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত একাধিক নেতার অতি উৎসাহী ভূমিকাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাখা ছাত্রলীগের একাধিক নেতা ও পদপ্রত্যাশী বলেন, বর্তমান কমিটি পাঁচ বছর আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। বারবার স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ধরনা দিলেও নতুন কমিটি হয়নি। কমিটি ঘোষণার একাধিক উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত ভেস্তে গেছে। তাই যেকোনো মূল্যে তাঁরা কমিটির বিলুপ্তি বা স্থগিত চান। পদপ্রত্যাশী একজন বলেন, সম্প্রতি নতুন কমিটি করতে জীবনবৃত্তান্ত নেওয়া হলেও কমিটি করা হয়নি। এ নিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ওপর ক্ষোভ থেকেই অনেকে ‘বড় ঘটনা’ ঘটিয়ে কমিটি বিলুপ্ত করাতে চেয়েছেন। এই অংশটিই সংঘর্ষ ব্যাপক করার আগুনে ঘি ঢেলেছে।
স্থানীয়দের পক্ষে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতা
খোঁজ নিয়ে ও ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন বিনোদপুর গেটের সামনে জড়ো হন, তখন বাইরে ব্যবসায়ীদের পক্ষেও ছিলেন একাধিক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা। কিবরিয়ার সঙ্গে তাঁদের বিরোধ দীর্ঘদিনের। তাঁদের একজন রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি অনিক মাহমুদ বনি। তিনি রাবির শিক্ষার্থী, বাড়ি বিনোদপুরেই। কিবরিয়া যখন সভাপতি হন, তখন ওই পদের প্রার্থী ছিলেন তিনি। এরপর থেকে দুজনের বিরোধের শুরু।
বিরোধের বিষয়টি স্বীকারও করেছেন বনি। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কিবরিয়া আমাকে যেকোনোভাবে বেকায়দায় ফেলতে চায়। এ কারণে সংঘর্ষের দিন বিনোদপুর বাজারে আমার মিষ্টির দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে।’
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র বলছে, বিনোদপুর গেটের পশ্চিম দিকে লোকজনের সঙ্গে ছিলেন বনি। আর গেটের পূর্ব প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীদের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপে নেতৃত্ব দেন নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ইয়ামিন আলী। তাঁর সঙ্গেও পুরোনো বিরোধ কিবরিয়ার।
বিষয়টি স্বীকার করে ইয়ামিন বলেন, ‘বিনোদপুর আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে। এই বাজারে হামলা স্থানীয় মানুষ হিসেবে আমরা মেনে নিতে পারি না। তাই বাধ্য হয়েই প্রতিরোধ করেছি।’
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে সবারই সহনশীল আচরণ করতে হবে। ইতিমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
আরও খবর পড়ুন:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ নতুন নয়। গত ৪০ বছরে অন্তত ১০ বার এ ধরনের বড় সংঘর্ষ হয়েছে। তবে এবারের ঘটনা কিছুটা ভিন্নমাত্রা পেয়েছে। কারণ, এর নেপথ্যে রয়েছে রাবি শাখা ছাত্রলীগের অন্তঃকোন্দল, নেতাদের মধ্যে বিভাজন ও নিয়োগ-বাণিজ্যের জন্য নেওয়া অর্থ বঞ্চিতদের ফেরত না দেওয়ায় ক্ষোভ।
গত দুই দিন (শনি ও রোববার) বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন স্থানীয় ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, ছাত্রলীগসহ একাধিক ছাত্রসংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। ১১ মার্চ ঘটনার সূত্রপাত হয় বাসের আসনে বসাকে কেন্দ্র করে। এর জেরে বাসচালক ও তাঁর সহকারীকে মারধর করেন রাবির কয়েকজন শিক্ষার্থী। এতে বাধা দেন বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন বিনোদপুরের ব্যবসায়ীরা। ধাওয়া দেন রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতিকে। সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীরা। আহত হন দুই শতাধিক শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী। পুড়িয়ে দেওয়া হয় দোকান, পুলিশ বক্স ও মোটরসাইকেল। মহাসড়ক আর রেললাইন অবরোধ করে আগুন দেন শিক্ষার্থীরা। লাঞ্ছিত হন তিন সাংবাদিক। ভাঙচুর করা হয় দুটি ক্যামেরা। এসব ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। তবে মামলার সব আসামি অজ্ঞাতনামা। গত শুক্রবার থেকে বিনোদপুর বাজারে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরতে শুরু করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার ওপর নিজ সংগঠনের একটি অংশ এবং স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে ক্ষুব্ধ। এর মূল কারণ নিয়োগ-বাণিজ্যের অর্থ। এ ছাড়া শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে রয়েছে হলের সিট-বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, জোর করে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়া, শিক্ষার্থী নির্যাতন এবং ক্যাম্পাসে একক আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগ।
রাবি ছাত্রলীগের একাধিক নেতা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহান তাঁর মেয়াদ শেষের আগের দিন (২০২১ সালের ৬ মে) বিভিন্ন পদে ১৩৮ জনকে নিয়োগ দেন। এতে ছাত্রলীগ সভাপতি কিবরিয়ার সুপারিশে ২০-২৫ জনের চাকরি হয়। তবে ১৫-২০ জনের চাকরি হয়নি। তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে পদ অনুযায়ী ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা নেন কিবরিয়া। চাকরি না হওয়া ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময় টাকা ফেরত চেয়েও পাননি। এতে তাঁরা ক্ষুব্ধ ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের ক্ষুব্ধ এক নেতা বলেন, ‘কিবরিয়া আমার চাকরি তাঁর বোনকে দিয়েছেন। এ রকম বঞ্চনার হাজারো গল্প আছে। আপনি কতগুলো শুনবেন? আমরা চাই কিবরিয়ার পতন হোক। এ জন্যই “বড় ঘটনা” ঘটাতে আমরা মাঠে ছিলাম।’
স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘নিজের ছেলের চাকরির জন্য কিবরিয়াকে টাকা দিয়েছিলাম। চাকরিও হয়নি, টাকাও পাইনি।’ ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, এ ছাড়া রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগেও কয়েকটি দল-উপদল আছে। তাঁদের কেউ কেউ ‘সুযোগের সদ্ব্যবহার’ করতে চেয়েছেন।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ওই দিন (১১ মার্চ) ছাত্রলীগ সভাপতি কিবরিয়াকে দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন স্থানীয় কিছু মানুষ। কয়েকজন চিৎকার করে বলেন, ‘টাকা নিলেও চাকরি দেয়নি কিবরিয়া, ওকে ধর।’ এরপরই কিবরিয়াকে ধাওয়া দেন স্থানীয়রা। ভাঙচুর করা হয় তাঁর মোটরসাইকেল।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি কিবরিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, চাকরির বিনিময়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এগুলো স্রেফ অপপ্রচার। ছাত্রলীগে কোনো গ্রুপিং নেই। সংঘর্ষ বড় আকার ধারণের ক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষের ইন্ধন থাকতে পারে।
আগুনে ঘি ঢেলেছে ছাত্রলীগের একাংশ
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ছাত্রলীগ সভাপতিকে ধাওয়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বড় আকার নেয়। এ সময় তাঁর পাশে যেমন ছাত্রলীগ ছিল, তেমনি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পক্ষেও রাবি শাখা ও মহানগর ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা ছিলেন। এ ছাড়া কিবরিয়ার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত একাধিক নেতার অতি উৎসাহী ভূমিকাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাখা ছাত্রলীগের একাধিক নেতা ও পদপ্রত্যাশী বলেন, বর্তমান কমিটি পাঁচ বছর আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। বারবার স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ধরনা দিলেও নতুন কমিটি হয়নি। কমিটি ঘোষণার একাধিক উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত ভেস্তে গেছে। তাই যেকোনো মূল্যে তাঁরা কমিটির বিলুপ্তি বা স্থগিত চান। পদপ্রত্যাশী একজন বলেন, সম্প্রতি নতুন কমিটি করতে জীবনবৃত্তান্ত নেওয়া হলেও কমিটি করা হয়নি। এ নিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ওপর ক্ষোভ থেকেই অনেকে ‘বড় ঘটনা’ ঘটিয়ে কমিটি বিলুপ্ত করাতে চেয়েছেন। এই অংশটিই সংঘর্ষ ব্যাপক করার আগুনে ঘি ঢেলেছে।
স্থানীয়দের পক্ষে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতা
খোঁজ নিয়ে ও ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন বিনোদপুর গেটের সামনে জড়ো হন, তখন বাইরে ব্যবসায়ীদের পক্ষেও ছিলেন একাধিক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা। কিবরিয়ার সঙ্গে তাঁদের বিরোধ দীর্ঘদিনের। তাঁদের একজন রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি অনিক মাহমুদ বনি। তিনি রাবির শিক্ষার্থী, বাড়ি বিনোদপুরেই। কিবরিয়া যখন সভাপতি হন, তখন ওই পদের প্রার্থী ছিলেন তিনি। এরপর থেকে দুজনের বিরোধের শুরু।
বিরোধের বিষয়টি স্বীকারও করেছেন বনি। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কিবরিয়া আমাকে যেকোনোভাবে বেকায়দায় ফেলতে চায়। এ কারণে সংঘর্ষের দিন বিনোদপুর বাজারে আমার মিষ্টির দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে।’
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র বলছে, বিনোদপুর গেটের পশ্চিম দিকে লোকজনের সঙ্গে ছিলেন বনি। আর গেটের পূর্ব প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীদের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপে নেতৃত্ব দেন নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ইয়ামিন আলী। তাঁর সঙ্গেও পুরোনো বিরোধ কিবরিয়ার।
বিষয়টি স্বীকার করে ইয়ামিন বলেন, ‘বিনোদপুর আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে। এই বাজারে হামলা স্থানীয় মানুষ হিসেবে আমরা মেনে নিতে পারি না। তাই বাধ্য হয়েই প্রতিরোধ করেছি।’
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে সবারই সহনশীল আচরণ করতে হবে। ইতিমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
আরও খবর পড়ুন:
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে