দিনরাত বালু উত্তোলন, অভিযানেও থামছে না

আনোয়ার সাদাৎ ইমরান, টাঙ্গাইল
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৪, ১০: ০৪
আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৪, ১১: ২১

টাঙ্গাইলে দিনের পাশাপাশি রাতেও খননযন্ত্র দিয়ে দেদার বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌর এলাকায় পৌলী নদী এবং ভূঞাপুর উপজেলায় যমুনা নদীতে বালুখেকোদের এই অপতৎপরতা চলছে। স্থানীয় প্রশাসন মাঝেমধ্যে অভিযান চালালেও তাঁদের থামানো যাচ্ছে না। ফলে সামনের বর্ষা মৌসুমে ব্যাপক ভাঙনের আশঙ্কা করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলেঙ্গা পৌর এলাকা দিয়ে বয়ে চলা পৌলী নদীর বিভিন্ন স্থানে চর জেগে উঠেছে। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বটতলা এলাকায় রাতের আঁধারে একাধিক খননযন্ত্র (ভেকু) দিয়ে বালু উত্তোলন করে ট্রাকযোগে পাচার করছেন। বেপরোয়া গতিতে চলা বালুবাহী ট্রাকের ধুলায় স্থানীয় বাসিন্দারা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়েছে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাস্তা। 

এলেঙ্গা পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ নূর-এ আলম সিদ্দিকী পৌর এলাকার সড়ক রক্ষার জন্য বালুবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ করতে জেলা প্রশাসকের কাছে দাবি জানিয়েছেন। মেয়র বলেন, ‘রাতের আঁধারে পৌলী নদী থেকে শত শত ট্রাক মাটি কেটে বিক্রি করা হয়। ওই ভারী ট্রাকগুলো চলাচলের কারণে এলেঙ্গা পৌরসভার সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বালুবাহী ট্রাক বন্ধে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা নেব।’

অপরদিকে ভূঞাপুরের অর্জুনা ইউনিয়নের জগৎপুরা, কুঠিবয়ড়া, দক্ষিণ জগৎপুরা ও নলীন এলাকায় আবাদি জমি ও যমুনা নদীর ১০টি জায়গা থেকে রাতদিন বালু কাটা হচ্ছে। চর কাটার মহোৎসব বেশি চলে রাতে। শুধু তাই নয়, নলীন থেকে কুঠিবয়ড়া পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ ঘেঁষে কাটা হচ্ছে বালু। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা পালাক্রমে প্রতিদিন শত শত ট্রাক বালু কেটে বিক্রি করছেন। 

অর্জুনা এলাকার মোফাজ্জল হোসেন সরকার বলেন, অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ভূঞাপুর-তারাকান্দি বাঁধ হুমকিতে পড়েছে। এ ছাড়া সড়কের পাড় কেটে ট্রাক চলাচলের রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। জগৎপুরার মঞ্জুর আশরাফ জমাদ্দার বলেন, জোরপূর্বক যমুনা নদীর চর কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। কেউ যদি জমি দিতে না চায় তাহলে তাঁর জমি জোর করে কাটা হয়।
অর্জুনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল আলম খান মাহবুব বলেন, ‘যাঁরা নদীর চর কেটে বিক্রি করছেন তাঁরা প্রভাবশালী। বিষয়টি বন্ধে বা বার উপজেলা মিটিংয়ে কথা বলেছি কিন্তু বন্ধ হচ্ছে না।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন জানান, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানো হয়। অভিযান হলে বালু উত্তোলন বন্ধ হয় কিন্তু পরে আবার চালু হয়।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদুর রহমান বলেন, প্রশাসনের অগোচরে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হয়। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত