Ajker Patrika

প্রশাসনের কড়া বার্তা

বরিশাল প্রতিনিধি
প্রশাসনের কড়া বার্তা

বরিশালের হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জের ৮টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ১৫ জুন ভোট। ওই নির্বাচনে কেন্দ্রে ভোটার ছাড়া বহিরাগত কেউ থাকতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেেন বিভাগীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। তাঁরা সব প্রার্থীর উপস্থিতিতে কড়া বার্তা দিয়ে তাঁরা বলেছেন, ভোটে অনিয়ম হতে দেওয়া হবে না।

গতকাল বুধবার আচরণবিধি ও আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের জবাবে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা এমন কড়া বার্তা দেন। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন উল আহসান। এ নির্বাচনে দুই উপজেলার বিভিন্ন ইউপিতে চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থী ৩৬৮ জন।

মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা মিলনায়তনে দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন রেঞ্জ ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান, র‍্যাব-৮ এর অধিনায়ক মো. জামিল হাসান, বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মাদ নূরুল ইসলাম, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুন্নবী, হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বকুল চন্দ কবিরাজসহ হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জের প্রার্থীরা।

আইনশৃঙ্খলা সভায় উপস্থিত জয়নগর ইউপির আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চশমা প্রতীকের প্রার্থী মনির হোসেন হাওলাদার তাঁর ওপর হামলা, ব্যানার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ করেছেন নৌকার প্রার্থী সেকেন্দার আলী আবু জাফরের বিরুদ্ধে। সেকেন্দার আলী আবু জাফরও পাল্টা অভিযোগ করেছেন। প্রার্থীদের এন্তার অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের বিপরীতে প্রশাসনের কর্মকর্তারা নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার ব্যাপারে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। বিশেষ করে র‍্যাব-৮ এর অধিনায়কের বক্তব্যে প্রার্থীরা নির্বাচন কতটা কঠিন হবে বুঝে গেছেন।

গোবিন্দপুর ইউপির বিদ্রোহী প্রার্থী মহিউদ্দিন তালুকদার বলেন, তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেছেন, নৌকার প্রার্থীর লোকজন ‘আমাকে এজেন্ট দিতে দেবে না, ভোট দিতে হবে না, এমন নানা হুমকি দিচ্ছে। নৌকার অনুসারীরা তাঁর পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে।’ তবে র‍্যাবের কর্মকর্তা সভায় তাঁকে বলছেন কোনো অনিয়ম হতে দেবেন না। ভোটে বিজিবি, কোস্টগার্ডও থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

হিজলার গৌরবদী ইউপিতে নৌকার প্রার্থী নজরুল ইসলাম মিলন জানান, তিনি বলেছেন নির্বাচনের আগে জমি নিয়ে মারামারি হলেও ইস্যু হয়ে যায়। কেউ কেউ মাঠে না থেকেও মিথ্যা অভিযোগ দেন। এসবের দ্রুত সমাধান হওয়া দরকার। জেলা প্রশাসক অবশ্য বলেছেন, কোনো প্রার্থী যদি প্রচারে নামতে না পারেন, মাঠে উঠতে না পারেন; এতটা ভয় থাকলে নির্বাচনে আসছেন কেন।

সভাসূত্রে জানা গেছে, প্রার্থীদের একটাই শঙ্কা ছিল—ভোট সুষ্ঠু হবে কি না। সংঘাতপূর্ণ এ অঞ্চলের ভোটে এর আগে নানা অনিয়মের কথাও তুলে ধরেছেন কোনো কোনো প্রার্থী। এ জন্য রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ভোট আহ্বানও করেছেন তাঁরা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুন্নবী আজকের পত্রিকাকে জানান, তাঁরা ভোটের প্রথম থেকেই প্রার্থীদের সতর্ক করেছেন। গতকালের সভায় প্রার্থীদের অসংখ্য অভিযোগ শুনেছেন তাঁরা। পরে শতভাগ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের বার্তা দিয়ে গেছেন বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা। তাঁদের বক্তব্য অনুযায়ী ১৫ জুনের ভোটে কোনো ধরনের পেশিশক্তির ব্যবহার হতে দেওয়া হবে না।

উল্লেখ্য, মেহেন্দীগঞ্জে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য প্রার্থী ২৮৮ এবং হিজলায় ৮০ জন। মোট ৩৬৮ প্রার্থীর মধ্যে এই দুই উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী ৩৪।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত