Ajker Patrika

দালালের আনাগোনা নেই

মাদারীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২২, ১১: ১৬
দালালের আনাগোনা নেই

পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দক্ষিণা-পশ্চিমাঞ্চলের বাসিন্দারা আনন্দিত হলেও মাথায় হাত পড়েছে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাংলাবাজার ঘাটে সিরিয়াল বাণিজ্যে জড়িত ‘দালাল’ চক্রের। ঘাট এলাকায় প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত আড়াই শতাধিক দালাল বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। তবে ঘাটসংশ্লিষ্টদের দাবি, অনিয়ম হলে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হতো।

বাংলাবাজার ঘাটে সরেজমিন দেখা গেছে, কয়েক দিন ধরেই এ এলাকায় তেমন তোড়জোড় নেই। হাঁক-ডাক নেই যাত্রী ও পরিবহন পারাপারের। চিরচেনা ঘাটে ট্রাকের দীর্ঘ লাইনও চোখে পড়েনি। দীর্ঘ যানজটের কারণে ট্রাকচালক-শ্রমিকদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ নেই। এ সুযোগে যাঁরা প্রশাসনের সঙ্গে ম্যানেজ করে আগে পারাপারের টিকিট পাইয়ে দিতেন, সেই দালালশ্রেণির অসাধু লোকজনদেরও আনাগোনাও নেই। কয়েকটি দোকান শুধু খোলা। দোকানে ঝিমিয়ে রয়েছেন দোকানিরা।

কথা হয় বাংলাবাজার ফেরিঘাটের ২ নম্বর পন্টুনের পাশে চা-বিস্কুটের দোকানি আফতাব ব্যাপারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, মাসখানেক আগেও এ ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার হতো। টার্মিনালে শত শত ট্রাক আটকে থাকত। দালালেরা প্রশাসনের লোকজনের সহযোগিতায় সেসব ট্রাক আগে পার করিয়ে দিতেন। এতে চলত তাঁদের জীবিকা। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই তাঁরা ঘাটে থাকতেন। সুযোগ বুঝে কাজ করতেন। অনেক সময় ট্রাকচালক-শ্রমিকদের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটত। পরে পুলিশ এসে সমাধান করত। এখন আর তাঁদের দেখা নেই।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘এসব ঘাটে দুই-আড়াই শ দালাল দিন-রাত থাকতেন। পরিবহন, ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোটঘাট এলাকায় ঘুরঘুর করতেন। সুযোগ-সুবিধা তৈরি করে টাকা আয় করতেন। তবে পদ্মা সেতু হওয়ায় তাঁরা আর নেই। নেই কাজ-কর্ম। তাই বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতেন এলাকার প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি।’

একটি নির্ভরশীল সূত্রমতে, বাংলাবাজার ফেরিঘাট এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ফেরিতে যাত্রী পারাপারে টোল আদায়ের দায়িত্বে ছিলেন শিবচরের ইয়াকুব ব্যাপারী নামে এক ব্যক্তি। প্রতি ঈদ ও বিশেষ সময়ে তাঁর টাকা ওঠানোর দায়িত্বে ছিলেন শতাধিক কর্মী। তাঁরাই ঘাটে বিভিন্ন সময় টাকা আদায় করতেন। অনেক সময় যাত্রীর সঙ্গে মারামারি আর অসৌজন্যমূলক আচরণও করতেন ওইসব কর্মী। মূলত তাঁদের অধিকাংশই বিভিন্ন সময় ঘাট এলাকায় যানবাহন পারাপারের জন্য অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে ইয়াকুব ব্যাপারী সাংবাদিক পরিচয় শোনার পর কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘এখন আর ঘাটও নাই, কোনো লোকজনও ঘাটে থাকবে না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ‘দালাল’ বলেন, ‘আমরা ঘাটে কিছু লোক কাজ-কর্ম করে রোজগার করতাম। এখন আর সেই সুযোগ নাই। সেতু হয়ে গেছে, তাই লোকজনও নেই। আমাদের আয়ও নেই। এ কারণে ব্যবসা শুরুর চেষ্টা করছি। দোকান বা ফেরি করে মালামাল বিক্রি করব। আর আমরা কোনো মানুষের কাছ থেকে জোর করে টাকা নিই নাই। উপকার করে টাকা কামাইছি।’

বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিবহন পরিদর্শক (টিআই) আশিকুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ কখনই সিরিয়াল বাণিজ্যের সঙ্গে ছিল না। স্থানীয় লোকজন ট্রাকচালকদের সঙ্গে কী করল-না করল, সেটা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। কোনো অনিয়মের অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। ঘাটের কার্যক্রম বন্ধ থাকলে মালবাহী ট্রাকও আসবে না, আর কোনো অনিয়মের সুযোগও থাকবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত