তরমুজখেতে ফল ধরেনি লোকসান শতকোটি টাকা

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২২, ০৭: ৩২
আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২২, ০৯: ৪৮

মাঠ ছেয়ে আছে তরমুজগাছে। ফুটেছে ফুল, কিন্তু ধরেনি ফল। বরগুনার তালতলী উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে তরমুজের ফলন হয়নি। এতে শতকোটি টাকা লোকসানের আশঙ্কা করছেন চাষিরা। দ্রুত কৃষি বিভাগকে গাছের এমন সমস্যা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

আমতলী কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আঠারোগাছিয়া, হলদিয়া, সদর, চাওড়া, কুকুয়া ও গুলিশাখালী ইউনিয়নে এ বছর ২ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। চাষিদের নিরলস পরিশ্রমে তরমুজগাছ ভালো হয়েছে। গাছে ফুলও ফুটেছে, কিন্তু ফল ধরেনি। এতে কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। গাছে ফলন না ধরায় শতকোটি টাকা লোকসান হবে বলে দাবি কৃষকদের। উপজেলার অন্তত ৭০ শতাংশ তরমুজখেতের এমন অবস্থা বলে দাবি করেন চাষিরা। গাছে ফলন না আসায় উপজেলার কয়েক হাজার চাষি নিঃস্ব হয়ে যাবেন বলে জানান তাঁরা।

তরমুজচাষি আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে গাছের এমন বিপর্যয় হয়েছে। তা ছাড়া যাঁরা আগে তরমুজের বীজ বপন করেছেন, তাঁদের এমন অবস্থা হয়নি। কিন্তু যাঁরা বীজ পরে বপন করেছেন, তাঁদেরই গাছের প্রচুর ফুল ধরেছে, কিন্তু ফল ধরেনি।

গতকাল মঙ্গলবার চাওড়া ইউনিয়নের পাতাকাটা, চন্দ্রা, হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ রাওঘা, কুকুয়ার কৃষ্ণনগর, আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী, গুলিশাখালী ও টেপুড়া গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, মাঠভরা তরমুজগাছ। গাছে প্রচুর ফুল ধরেছে, কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও গাছে ফল ধরেনি।

পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের বাহাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘ধার-দেনা করে এ বছর ২৬ একর জমিতে তরমুজের চাষ করেছি। গাছে প্রচুর ফুল দেখে আশা করেছিলাম, এ বছর বাম্পার ফলন হবে। কিন্তু তরমুজচাষিদের সেই আশায় গুড়ে বালি। প্রচুর ফুল হলেও ফল হচ্ছে না।’

একই গ্রামের সোহেল রানা বলেন, খেতজুড়ে তরমুজগাছে প্রচুর ফুল ধরেছে, কিন্তু ফল ধরেনি। এতে কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ফল না হলে চাষিদের শতকোটি টাকার লোকসান হবে।

পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের কৃষক মজিবর হাওলাদার বলেন, ‘মোর সব শ্যাস অইয়্যা গ্যাছে। দুই লাখ টাহা ধার কইর‌্যা তরমুজ দিছি। সেই তরমুজ খ্যাতে ফুল অইছে, তরমুজ অয়নি।’

আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সি এম রেজাউল করিম বলেন, ‘মানসম্মত বীজের জাত রোপণ না করায় এই অবস্থা হতে পারে। বিষয়টি জেনে প্রতিকারে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত