বন্যা আসছে

সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৪, ০৭: ২৫
আপডেট : ২১ জুন ২০২৪, ০৭: ২৬

দেশের পাঁচটি জেলা পানিতে ভাসছে। আরও ছয়টি জেলা ঝুঁকিতে। তার মানে, বন্যা আসছে। বন্যা আসা মানেই মানুষের কষ্ট, ফসল নষ্ট, গবাদিপশুর ক্লেশ, দুর্ভোগের নেই শেষ। যদিও বন্যা, ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদের দেশে নতুন কোনো বিষয় নয়। প্রায় প্রতিবছর, বছরের বিশেষ বিশেষ সময়ে কোনো না কোনো অঞ্চলে কোনো না কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়ে থাকে। দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের মানুষের অভিজ্ঞতা ও নৈপুণ্য রয়েছে। 

বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, টানা বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে দ্রুত বাড়ছে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, করতোয়া, কুশিয়ারা, সোমেশ্বরীসহ দেশের প্রধান নদ-নদীর পানি। এরই মধ্যে সিলেট, সুনামগঞ্জসহ পাঁচ জেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ১৪ লাখ মানুষ। ঝুঁকিতে আছে রংপুর, গাইবান্ধা, শেরপুর, নেত্রকোনাসহ উত্তরাঞ্চলের ছয়টি জেলা। এসব জেলার কয়েকটিতে এরই মধ্যে নদীভাঙন শুরু হয়েছে। 

সিলেট সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, সিলেট নগরের ৪২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৮টিতে ৮০ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত। জেলার ১৩টি উপজেলার ১০৬টি ইউনিয়নের ১ হাজার ৫৪৮টি গ্রামের ৮ লাখ ২৫ হাজার ২৫৬ জন বন্যাকবলিত। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জেলার সব পর্যটনকেন্দ্র অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

সিলেটের গোয়াইনঘাটে সবচেয়ে বেশি মানুষ বন্যাকবলিত। এই উপজেলার সব সড়ক ডুবে যাওয়ায় জেলা শহরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। কোম্পানীগঞ্জে বঙ্গবন্ধু মহাসড়ক বাদে সব সড়ক ডুবে গেছে। 

সুনামগঞ্জে ১২টি উপজেলার মধ্যে ১০টি উপজেলার চারটি পৌরসভা ও ৭৪টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে জেলার ৭০ হাজার মানুষ। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, দোয়ারাবাজার ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা। পুরো জেলায় হাওর ও নিম্নাঞ্চল এখন জলমগ্ন। 

মৌলভীবাজারের সাতটি উপজেলার সব কটির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৩ লাখ মানুষ। মনু, ধলাই ও কুশিয়ারা নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

হবিগঞ্জ জেলার সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। নবীগঞ্জে কুশিয়ারার পানি বাঁধ উপচে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ১ লাখের বেশি মানুষ। জেলা প্রশাসন সূত্র বলেছে, নবীগঞ্জের প্রায় ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দুর্গত এলাকায় ১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। 

উত্তরাঞ্চলেও পানি বাড়ছে। যেসব এলাকায় বন্যার আশঙ্কা আছে, সেসব এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে। বন্যাকবলিত মানুষকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া, খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। ত্রাণসামগ্রী বরাদ্দ ও বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতি কঠোর হাতে দমন করতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সুযোগ নিয়ে অসৎ ব্যক্তিরা যেন লুটপাটে শরিক হতে না পারে, সে জন্য সাধারণ মানুষকেও সচেতন ও সংগঠিত থাকতে হবে। মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় যত্নবান থাকতে হবে। আগাম সতর্কতা ও বিপদ মোকাবিলার প্রস্তুতি থাকলে নিশ্চয়ই বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যাবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত