মান্দি ডি কস্তা, ঢাকা
ঢাকার কাজীপাড়ায় একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন ছয় শিক্ষার্থী। তাঁদের পাঁচজন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং অন্যজন একটি টেকনিক্যাল কলেজে পড়ছেন। সম্প্রতি তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চারজনই ইদানীং ‘ফ্রি ফায়ার’ খেলেন দিনে গড়ে দুই-তিন ঘণ্টা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কোভিড মহামারির সময় থেকে দুই বছর দৈনিক ১২-১৩ ঘণ্টা খেলতাম। একটানা বসে খেলতে খেলতে মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে গেছে। খেলার সময় মাইনাস হলে মাথা গরম হয়ে যায়। একবার রাগ করে রুমের দুইটা চেয়ার ভেঙে ফেলছি। এই খেলায় প্রচুর সময় নষ্ট হয়, উত্তেজনা আর নেশাও তৈরি হয়।’
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ওয়াইফাই ও টেলিটক সিমে ডাটা অন করে আমরা গেম দুটি এখনো খেলতে পারি। অন্য সিম দিয়ে খেলা যায় না। সে ক্ষেত্রে ভিপিএন ব্যবহার করতে হয়।’
ঢাকার বাসাবো এলাকায় একটি মেসে থাকা উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘২০২২ সালের এপ্রিলে ফ্রি ফায়ার খেলতে গিয়ে মেজাজ খারাপ করে ১৮ হাজার টাকার মোবাইলটি আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেলেছি। অশ্লীল গালাগাল ছাড়া গেমটা খেলা যায় না। খেলার ইভেন্ট ডায়মন্ড কিনতে ৭ হাজার টাকার বেশি খরচ করেছি। আমাদের মেসে আরও চারজন ফ্রি ফায়ারের সঙ্গে পাবজিও খেলে।’
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, অষ্টম শ্রেণি থেকে উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা এই গেমে বেশি আসক্ত। স্মার্ট ফোন পেলে অষ্টম শ্রেণির নিচের অনেক শিক্ষার্থীও এই গেমে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। ৫-১৫ ঘণ্টা পর্যন্ত খেলে শিক্ষার্থীরা। গেমের কনটেন্ট কিনতে বিকাশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা পর্যন্তও খরচ করে কেউ কেউ। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠলে অনেকেই খেলা কমিয়ে দেয়।
দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব বিবেচনায় ২০২১ সালে উচ্চ আদালত পাবজি ও ফ্রি ফায়ার গেম বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) প্রথম দিকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার কথা জানালেও তা এখন অবাধে চলছে।
সহলভ্য কি না জানেন না
বিষয়টি সম্পর্কে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ফ্রি ফায়ার, পাবজি তো বন্ধ আছে। তবে কেউ কেউ ভিপিএন দিয়ে হয়তো চালিয়ে থাকতে পারে। অ্যাপ দুটির সহজলভ্যতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি গুগল প্লেতে পাওয়া যায় তাহলে বন্ধ করার ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
বিটিআরসির সচিব মো. নুরুল হাফিজ বলেন, ‘ব্যান্ডউইথের কিছু সমস্যার কারণে গেমগুলো আবারও চলছে। তবে এটি বন্ধ করার জন্য আমাদের টিম কাজ শুরু করেছে।’ গুগল প্লে থেকে অ্যাপ দুটি ডাউনলোড করা যায় বলে জানালে তিনি বলেন, ‘লিংক পাঠান, অফিস আওয়ারে গিয়ে এটি বন্ধ করার ব্যবস্থা করব।’ তবে তাঁকে লিংক পাঠানোর পরও তা বন্ধ হয়নি।
সাইবার পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান বলেন, ‘ফ্রি ফায়ার, পাবজিসহ অনলাইন গেমের কনটেন্ট কেনার ক্ষেত্রে বিকাশসহ অন্যান্য মাধ্যমে লেনদেন সম্পূর্ণ অবৈধ। এ ধরনের লেনদেনের চক্রকে আমরা ধরেছি। সাইবার পুলিশ বিষয়টি মনিটরিং করছে।’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মাহমুদা নাজনিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকার বা বিটিআরসি চাইলে আমরা সহায়তা দেব। বিভাগের পক্ষ থেকে বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের নিয়ে একটি কমিটি করে দিতে পারি। ভিপিএনসহ অন্য বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে বিশেষজ্ঞ কমিটি তাদের সব ধরনের কারিগরি সহায়তা দেবে।’
তিন পরামর্শ মনোবিজ্ঞানীর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ধরনের গেমগুলোতে মানসিক উত্তেজনা তৈরি হয়। ফলে তারা অল্পতেই সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে। আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে র্যাগিং, বুলিং, কিলিং দেখছি, তা এ ধরনের গেমের ট্রান্সফরমেশন। এর ফল হিসেবে একটি সহিংস প্রজন্ম ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গেছে।’
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য তিনটি পরামর্শ দেন এই মনোবিজ্ঞানী। পরামর্শগুলো হলো সন্তানদের প্রতি বাবা-মায়ের যত্নশীল হওয়া, রাষ্ট্রীয়ভাবে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ তৈরি ও মাঠ ছাড়া কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনুমোদন না দেওয়া এবং ক্ষতিকর গেমগুলোর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধূরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই গেমগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য ক্ষতিকর বলেই আদালত নিষিদ্ধ করেছেন। এরপরও কীভাবে এগুলো চালু থাকছে, সেটা আমার বোধগম্য না। আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষের গাফিলতি আছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার।’
ঢাকার কাজীপাড়ায় একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন ছয় শিক্ষার্থী। তাঁদের পাঁচজন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং অন্যজন একটি টেকনিক্যাল কলেজে পড়ছেন। সম্প্রতি তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চারজনই ইদানীং ‘ফ্রি ফায়ার’ খেলেন দিনে গড়ে দুই-তিন ঘণ্টা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কোভিড মহামারির সময় থেকে দুই বছর দৈনিক ১২-১৩ ঘণ্টা খেলতাম। একটানা বসে খেলতে খেলতে মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে গেছে। খেলার সময় মাইনাস হলে মাথা গরম হয়ে যায়। একবার রাগ করে রুমের দুইটা চেয়ার ভেঙে ফেলছি। এই খেলায় প্রচুর সময় নষ্ট হয়, উত্তেজনা আর নেশাও তৈরি হয়।’
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ওয়াইফাই ও টেলিটক সিমে ডাটা অন করে আমরা গেম দুটি এখনো খেলতে পারি। অন্য সিম দিয়ে খেলা যায় না। সে ক্ষেত্রে ভিপিএন ব্যবহার করতে হয়।’
ঢাকার বাসাবো এলাকায় একটি মেসে থাকা উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘২০২২ সালের এপ্রিলে ফ্রি ফায়ার খেলতে গিয়ে মেজাজ খারাপ করে ১৮ হাজার টাকার মোবাইলটি আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেলেছি। অশ্লীল গালাগাল ছাড়া গেমটা খেলা যায় না। খেলার ইভেন্ট ডায়মন্ড কিনতে ৭ হাজার টাকার বেশি খরচ করেছি। আমাদের মেসে আরও চারজন ফ্রি ফায়ারের সঙ্গে পাবজিও খেলে।’
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, অষ্টম শ্রেণি থেকে উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা এই গেমে বেশি আসক্ত। স্মার্ট ফোন পেলে অষ্টম শ্রেণির নিচের অনেক শিক্ষার্থীও এই গেমে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। ৫-১৫ ঘণ্টা পর্যন্ত খেলে শিক্ষার্থীরা। গেমের কনটেন্ট কিনতে বিকাশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা পর্যন্তও খরচ করে কেউ কেউ। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠলে অনেকেই খেলা কমিয়ে দেয়।
দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব বিবেচনায় ২০২১ সালে উচ্চ আদালত পাবজি ও ফ্রি ফায়ার গেম বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) প্রথম দিকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার কথা জানালেও তা এখন অবাধে চলছে।
সহলভ্য কি না জানেন না
বিষয়টি সম্পর্কে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ফ্রি ফায়ার, পাবজি তো বন্ধ আছে। তবে কেউ কেউ ভিপিএন দিয়ে হয়তো চালিয়ে থাকতে পারে। অ্যাপ দুটির সহজলভ্যতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি গুগল প্লেতে পাওয়া যায় তাহলে বন্ধ করার ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
বিটিআরসির সচিব মো. নুরুল হাফিজ বলেন, ‘ব্যান্ডউইথের কিছু সমস্যার কারণে গেমগুলো আবারও চলছে। তবে এটি বন্ধ করার জন্য আমাদের টিম কাজ শুরু করেছে।’ গুগল প্লে থেকে অ্যাপ দুটি ডাউনলোড করা যায় বলে জানালে তিনি বলেন, ‘লিংক পাঠান, অফিস আওয়ারে গিয়ে এটি বন্ধ করার ব্যবস্থা করব।’ তবে তাঁকে লিংক পাঠানোর পরও তা বন্ধ হয়নি।
সাইবার পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান বলেন, ‘ফ্রি ফায়ার, পাবজিসহ অনলাইন গেমের কনটেন্ট কেনার ক্ষেত্রে বিকাশসহ অন্যান্য মাধ্যমে লেনদেন সম্পূর্ণ অবৈধ। এ ধরনের লেনদেনের চক্রকে আমরা ধরেছি। সাইবার পুলিশ বিষয়টি মনিটরিং করছে।’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মাহমুদা নাজনিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকার বা বিটিআরসি চাইলে আমরা সহায়তা দেব। বিভাগের পক্ষ থেকে বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের নিয়ে একটি কমিটি করে দিতে পারি। ভিপিএনসহ অন্য বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে বিশেষজ্ঞ কমিটি তাদের সব ধরনের কারিগরি সহায়তা দেবে।’
তিন পরামর্শ মনোবিজ্ঞানীর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ধরনের গেমগুলোতে মানসিক উত্তেজনা তৈরি হয়। ফলে তারা অল্পতেই সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে। আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে র্যাগিং, বুলিং, কিলিং দেখছি, তা এ ধরনের গেমের ট্রান্সফরমেশন। এর ফল হিসেবে একটি সহিংস প্রজন্ম ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গেছে।’
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য তিনটি পরামর্শ দেন এই মনোবিজ্ঞানী। পরামর্শগুলো হলো সন্তানদের প্রতি বাবা-মায়ের যত্নশীল হওয়া, রাষ্ট্রীয়ভাবে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ তৈরি ও মাঠ ছাড়া কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনুমোদন না দেওয়া এবং ক্ষতিকর গেমগুলোর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধূরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই গেমগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য ক্ষতিকর বলেই আদালত নিষিদ্ধ করেছেন। এরপরও কীভাবে এগুলো চালু থাকছে, সেটা আমার বোধগম্য না। আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষের গাফিলতি আছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার।’
পর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে‘বঙ্গবন্ধু’ পদবি বিলীন হবে না। হতে পারে না। যেমনটি ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের পদবি বিলীন হয়নি। ইতিহাসে এসব পদবি অম্লান ও অক্ষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের
২ দিন আগে