রাহুল শর্মা, ঢাকা
শিক্ষা খাতে নিরীক্ষা কার্যক্রম গতিশীল করতে এবং দীর্ঘদিনের ‘বদনাম’ ঘোচাতে বানানো হয়েছিল সফটওয়্যার। কিন্তু অবৈধ সুবিধার সুযোগ বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় নানা অজুহাতে সফটওয়্যারের ব্যবহার বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ উঠেছে একশ্রেণির কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে সফটওয়্যার কোম্পানির সঙ্গে সার্ভিসসংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদও। এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) ভেস্তে যেতে বসেছে বদনাম ঘোচানোর উদ্যোগ। বিষয়টি কর্মকর্তাদের কাছে ‘সফটওয়্যার কেলেঙ্কারি’ নামে পরিচিতি পেয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শনকালে অবৈধ আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ আছে ডিআইএর নিরীক্ষা দলের বিরুদ্ধে। মূলত এ বদনাম ঘোচাতে সফটওয়্যারের মাধ্যমে নিরীক্ষা পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রভাবশালী কয়েক কর্মকর্তার অসহযোগিতা ও কূটচালে প্রশংসনীয় এ উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে। ফলে গচ্চা যাবে সফটওয়্যার তৈরি বাবদ খরচ হওয়া অর্ধকোটি টাকাও।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সফটওয়্যার তৈরির সময়ই সার্ভারের ডেটা স্টোরেজ ক্যাপাসিটি বা তথ্য সংরক্ষণ ক্ষমতার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া দরকার ছিল। ডিআইএর একাধিক সাবেক কর্মকর্তা অবশ্য জানান, তথ্য সংরক্ষণের জায়গার বিষয়টি তৎকালীন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হলেও তা আমলে নেয়নি। এতে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিরীক্ষার পরই পূর্ণ হয়ে যায় সার্ভারের স্টোরেজ ক্যাপাসিটি। ফলে ওই সফটওয়্যারের মাধ্যমে আর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। সার্ভিসসংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় এখন সফটওয়্যারে কোনো ত্রুটি দেখা দিলে সহযোগিতা পাবে না ডিআইএ। এতে সফটওয়্যার ব্যবহারের নতুন উদ্যোগও বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
ডিআইএ পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ্ মো. আজমতগীর অবশ্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কারিগরি ত্রুটির কারণে কিছুদিন সফটওয়্যারটি ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি, এটা সত্য।আশা করছি, শিগগির আবার সফটওয়্যারটির ব্যবহার শুরু হবে। এ ছাড়া উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন (ফোরআইআর টেকনোলজি) নতুন একটি সফটওয়্যার তৈরিরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।এতে পুরোপুরি ডিজিটাল হবে ডিআইএ।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার দায়িত্ব গ্রহণের আগেই সফটওয়্যারটি কেনার টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আমি দায়িত্ব নিয়ে সফটওয়্যারটির সব ধরনের ত্রুটির সমাধান করেছি। কিছুদিন আগে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ক্লাউড সার্ভিসে সফটওয়্যারটির হোস্টিং এবং ডেটা সংরক্ষণের অনুমতি পেয়েছি। আশা করছি, এখন সফটওয়্যারটি ব্যবহারে আর সমস্যা হবে না।’
সফটওয়্যারে অবৈধ সুবিধা বন্ধ
ঢাকার একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানপ্রধানের সঙ্গে কথা বলে নিরীক্ষার সময় অবৈধ আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে তাঁদের কেউই নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। তাঁদের ভাষ্য, সরেজমিন গিয়ে নিরীক্ষার সময় ডিআইএ কর্মকর্তারা নানা অজুহাতে অবৈধ আর্থিক সুবিধা দাবি করেন। কিন্তু সফটওয়্যারের মাধ্যমে নিরীক্ষা শুরু হলে তাঁরা অজুহাত দেখাতে পারেননি। এতে অবৈধ সুবিধা চাওয়াও বন্ধ হয়ে যায়।
জানা যায়, সফটওয়্যারটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল যাতে নিরীক্ষার নামে ঘুষবাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। নিয়ম অনুযায়ী, নিরীক্ষার আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা প্রয়োজনীয় তথ্য ইনপুট দিতেন। আর নিরীক্ষার সময় প্রাপ্ত তথ্য তখনই ইনপুট দিত নিরীক্ষা দল। এতে কম সময়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হয়ে যেত নিরীক্ষা প্রতিবেদন। পরবর্তী সময়ে প্রতিবেদনে কোনো তথ্য পরিবর্তন করা সম্ভব হতো না। এতে নিরীক্ষা দলের কারসাজির সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া সফটওয়্যারটির মাধ্যমে শিক্ষা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা চাইলেই অনলাইনে নিরীক্ষা কার্যক্রম তদারকি করতে পারেন।
নিরীক্ষার নামে দুর্নীতির অভিযোগ সাবেক সচিবের
ডিআইএ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুনীতির অভিযোগ পুরোনো। গত বছরের ২৬ মে তখনকার শিক্ষাসচিব আবু বকর ছিদ্দীক বলেছিলেন, ‘বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আর্থিক এবং প্রশাসনিক অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য উদ্ঘাটনের দায়িত্ব পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ)। মূলত এ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির পঙ্কিলে নিমজ্জিত হওয়ার অভিযোগ করেছে দুনীতি দমন কমিশন (দুদক)।’ এর আগে ঘুষ নেওয়ার সময় এক পরিদর্শককে হাতেনাতে আটকও করেছিল দুদক।
ডিআইএ পরিচালক অবশ্য বলেন, অবৈধ আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়। ডিআইএর মূল কাজ হলো স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দপ্তর বা সংস্থায় পরিদর্শন ও নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা। পরিদর্শন শেষে প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা তুলে ধরার পাশাপাশি ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করা হয়। এর ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অর্ধকোটি টাকায় সফটওয়্যার
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিরীক্ষা কার্যক্রম ডিজিটাল করার অংশ হিসেবে অটোমেশন সফটওয়্যার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ২০১৭ সালে। সফটওয়্যারটির নাম ডেভেলপমেন্ট অব ওয়েব বেইজ অটোমেশন সিস্টেম ফর দি এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড ডিরেক্টরেট অব ইন্সপেকশন অ্যান্ড অডিট। দরপত্র প্রক্রিয়া ও অন্যান্য প্রশাসনিক কার্যক্রম শেষে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর কার্যাদেশ পায় আইটি প্রতিষ্ঠান ইথিক্স অ্যাডভান্স টেকনোলজি লিমিটেড। এতে ব্যয় ধরা হয় ৪৭ লাখ টাকার বেশি।
নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, প্রথম দুই বছর ছিল সফটওয়্যার প্রস্তুতি ও উন্নয়নের কাল। পরবর্তী তিন বছর সহায়তাকাল। অর্থাৎ এই সময়ে সফটওয়্যার ব্যবহারে কোনো সমস্যা দেখা দিলে ডিআইএকে সহায়তা করবে আইটি প্রতিষ্ঠান। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। নিয়ম অনুযায়ী, এখন সফটওয়্যার ব্যবহারে কোনো প্রতিবন্ধকতা দেখা দিলে সহযোগিতা পাবে না ডিআইএ।
নিরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত একাধিক কর্মকর্তার মতে, এখন আবার সফটওয়্যারটির মাধ্যমে নিরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা কাজে আসবে না। কারণ নানা অজুহাতে অসাধু কর্মকর্তারা এর ব্যবহার বাধাগ্রস্ত করবেন। আর সফটওয়্যার কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ না থাকায় সমস্যা দেখা দিলে প্রয়োজনীয় সহায়তাও দেবে না তারা।
আর সমস্যা না হওয়ার আশা
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (নিরীক্ষা ও আইন) মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কিছুদিন আগে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ক্লাউড সার্ভিসে সফটওয়্যারটির হোস্টিং ও ডেটা সংরক্ষণের বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, সফটওয়্যারটি ব্যবহারে এখন আর সমস্যা হবে না।’
আগেই সার্ভারের জায়গা যাচাই করা উচিত ছিল
সফটওয়্যার তৈরির সময়ই ডাটা সংরক্ষণ সার্ভারের জায়গা যাচাই করা উচিত ছিল বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, সফটওয়্যার তৈরির সময় তথ্য সংরক্ষণের সার্ভারে কী পরিমাণ জায়গা লাগবে তা নিরূপণ করা উচিত ছিল। এটা খুবই সাধারণ একটি বিষয়। কেন ডিআইএ সফটওয়্যার তৈরির সময় এ কাজটি করল না তা বোধ্যগম্য নয়।
শিক্ষা খাতে নিরীক্ষা কার্যক্রম গতিশীল করতে এবং দীর্ঘদিনের ‘বদনাম’ ঘোচাতে বানানো হয়েছিল সফটওয়্যার। কিন্তু অবৈধ সুবিধার সুযোগ বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় নানা অজুহাতে সফটওয়্যারের ব্যবহার বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ উঠেছে একশ্রেণির কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে সফটওয়্যার কোম্পানির সঙ্গে সার্ভিসসংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদও। এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) ভেস্তে যেতে বসেছে বদনাম ঘোচানোর উদ্যোগ। বিষয়টি কর্মকর্তাদের কাছে ‘সফটওয়্যার কেলেঙ্কারি’ নামে পরিচিতি পেয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শনকালে অবৈধ আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ আছে ডিআইএর নিরীক্ষা দলের বিরুদ্ধে। মূলত এ বদনাম ঘোচাতে সফটওয়্যারের মাধ্যমে নিরীক্ষা পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রভাবশালী কয়েক কর্মকর্তার অসহযোগিতা ও কূটচালে প্রশংসনীয় এ উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে। ফলে গচ্চা যাবে সফটওয়্যার তৈরি বাবদ খরচ হওয়া অর্ধকোটি টাকাও।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সফটওয়্যার তৈরির সময়ই সার্ভারের ডেটা স্টোরেজ ক্যাপাসিটি বা তথ্য সংরক্ষণ ক্ষমতার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া দরকার ছিল। ডিআইএর একাধিক সাবেক কর্মকর্তা অবশ্য জানান, তথ্য সংরক্ষণের জায়গার বিষয়টি তৎকালীন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হলেও তা আমলে নেয়নি। এতে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিরীক্ষার পরই পূর্ণ হয়ে যায় সার্ভারের স্টোরেজ ক্যাপাসিটি। ফলে ওই সফটওয়্যারের মাধ্যমে আর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। সার্ভিসসংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় এখন সফটওয়্যারে কোনো ত্রুটি দেখা দিলে সহযোগিতা পাবে না ডিআইএ। এতে সফটওয়্যার ব্যবহারের নতুন উদ্যোগও বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
ডিআইএ পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ্ মো. আজমতগীর অবশ্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কারিগরি ত্রুটির কারণে কিছুদিন সফটওয়্যারটি ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি, এটা সত্য।আশা করছি, শিগগির আবার সফটওয়্যারটির ব্যবহার শুরু হবে। এ ছাড়া উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন (ফোরআইআর টেকনোলজি) নতুন একটি সফটওয়্যার তৈরিরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।এতে পুরোপুরি ডিজিটাল হবে ডিআইএ।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার দায়িত্ব গ্রহণের আগেই সফটওয়্যারটি কেনার টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আমি দায়িত্ব নিয়ে সফটওয়্যারটির সব ধরনের ত্রুটির সমাধান করেছি। কিছুদিন আগে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ক্লাউড সার্ভিসে সফটওয়্যারটির হোস্টিং এবং ডেটা সংরক্ষণের অনুমতি পেয়েছি। আশা করছি, এখন সফটওয়্যারটি ব্যবহারে আর সমস্যা হবে না।’
সফটওয়্যারে অবৈধ সুবিধা বন্ধ
ঢাকার একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানপ্রধানের সঙ্গে কথা বলে নিরীক্ষার সময় অবৈধ আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে তাঁদের কেউই নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। তাঁদের ভাষ্য, সরেজমিন গিয়ে নিরীক্ষার সময় ডিআইএ কর্মকর্তারা নানা অজুহাতে অবৈধ আর্থিক সুবিধা দাবি করেন। কিন্তু সফটওয়্যারের মাধ্যমে নিরীক্ষা শুরু হলে তাঁরা অজুহাত দেখাতে পারেননি। এতে অবৈধ সুবিধা চাওয়াও বন্ধ হয়ে যায়।
জানা যায়, সফটওয়্যারটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল যাতে নিরীক্ষার নামে ঘুষবাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। নিয়ম অনুযায়ী, নিরীক্ষার আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা প্রয়োজনীয় তথ্য ইনপুট দিতেন। আর নিরীক্ষার সময় প্রাপ্ত তথ্য তখনই ইনপুট দিত নিরীক্ষা দল। এতে কম সময়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হয়ে যেত নিরীক্ষা প্রতিবেদন। পরবর্তী সময়ে প্রতিবেদনে কোনো তথ্য পরিবর্তন করা সম্ভব হতো না। এতে নিরীক্ষা দলের কারসাজির সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া সফটওয়্যারটির মাধ্যমে শিক্ষা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা চাইলেই অনলাইনে নিরীক্ষা কার্যক্রম তদারকি করতে পারেন।
নিরীক্ষার নামে দুর্নীতির অভিযোগ সাবেক সচিবের
ডিআইএ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুনীতির অভিযোগ পুরোনো। গত বছরের ২৬ মে তখনকার শিক্ষাসচিব আবু বকর ছিদ্দীক বলেছিলেন, ‘বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আর্থিক এবং প্রশাসনিক অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য উদ্ঘাটনের দায়িত্ব পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ)। মূলত এ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির পঙ্কিলে নিমজ্জিত হওয়ার অভিযোগ করেছে দুনীতি দমন কমিশন (দুদক)।’ এর আগে ঘুষ নেওয়ার সময় এক পরিদর্শককে হাতেনাতে আটকও করেছিল দুদক।
ডিআইএ পরিচালক অবশ্য বলেন, অবৈধ আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়। ডিআইএর মূল কাজ হলো স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দপ্তর বা সংস্থায় পরিদর্শন ও নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা। পরিদর্শন শেষে প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা তুলে ধরার পাশাপাশি ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করা হয়। এর ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অর্ধকোটি টাকায় সফটওয়্যার
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিরীক্ষা কার্যক্রম ডিজিটাল করার অংশ হিসেবে অটোমেশন সফটওয়্যার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ২০১৭ সালে। সফটওয়্যারটির নাম ডেভেলপমেন্ট অব ওয়েব বেইজ অটোমেশন সিস্টেম ফর দি এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড ডিরেক্টরেট অব ইন্সপেকশন অ্যান্ড অডিট। দরপত্র প্রক্রিয়া ও অন্যান্য প্রশাসনিক কার্যক্রম শেষে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর কার্যাদেশ পায় আইটি প্রতিষ্ঠান ইথিক্স অ্যাডভান্স টেকনোলজি লিমিটেড। এতে ব্যয় ধরা হয় ৪৭ লাখ টাকার বেশি।
নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, প্রথম দুই বছর ছিল সফটওয়্যার প্রস্তুতি ও উন্নয়নের কাল। পরবর্তী তিন বছর সহায়তাকাল। অর্থাৎ এই সময়ে সফটওয়্যার ব্যবহারে কোনো সমস্যা দেখা দিলে ডিআইএকে সহায়তা করবে আইটি প্রতিষ্ঠান। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। নিয়ম অনুযায়ী, এখন সফটওয়্যার ব্যবহারে কোনো প্রতিবন্ধকতা দেখা দিলে সহযোগিতা পাবে না ডিআইএ।
নিরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত একাধিক কর্মকর্তার মতে, এখন আবার সফটওয়্যারটির মাধ্যমে নিরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা কাজে আসবে না। কারণ নানা অজুহাতে অসাধু কর্মকর্তারা এর ব্যবহার বাধাগ্রস্ত করবেন। আর সফটওয়্যার কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ না থাকায় সমস্যা দেখা দিলে প্রয়োজনীয় সহায়তাও দেবে না তারা।
আর সমস্যা না হওয়ার আশা
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (নিরীক্ষা ও আইন) মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কিছুদিন আগে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ক্লাউড সার্ভিসে সফটওয়্যারটির হোস্টিং ও ডেটা সংরক্ষণের বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, সফটওয়্যারটি ব্যবহারে এখন আর সমস্যা হবে না।’
আগেই সার্ভারের জায়গা যাচাই করা উচিত ছিল
সফটওয়্যার তৈরির সময়ই ডাটা সংরক্ষণ সার্ভারের জায়গা যাচাই করা উচিত ছিল বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, সফটওয়্যার তৈরির সময় তথ্য সংরক্ষণের সার্ভারে কী পরিমাণ জায়গা লাগবে তা নিরূপণ করা উচিত ছিল। এটা খুবই সাধারণ একটি বিষয়। কেন ডিআইএ সফটওয়্যার তৈরির সময় এ কাজটি করল না তা বোধ্যগম্য নয়।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে