Ajker Patrika

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস, থেমে নেই স্কুলের জায়গা দখল

মোহাম্মদ উজ্জ্বল, মহম্মদপুর (মাগুরা)
ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস, থেমে নেই স্কুলের জায়গা দখল

বিদ্যালয়টির বারান্দার পিলার ও ছাদের পলেস্তারা খসে রড বের হয়ে পড়েছে। শ্রেণিকক্ষের দেয়ালেও ফাটল। এরই মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে শিশু শিক্ষার্থীরা। এতে বিদ্যালয়ে সন্তানদের পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকেন অভিভাবকেরা। অনেকে ছেলে-মেয়েদের অন্য স্কুলে ভর্তি করাচ্ছেন।

অন্যদিকে স্কুল ভবনের জায়গা দখল নিতে পূর্ব পাশে একের পর এক দোকানঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। দিন যাচ্ছে আর স্কুলের জমি সংকুচিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বলা হচ্ছে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার দীঘা ইউনিয়নের নাগড়া বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কথা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আয়ুব আলী ফকির জানান, স্কুলভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ক্লাসে ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি কম। অনেকে বিদ্যালয় ছেড়ে যাচ্ছে। এতে চরমভাবে লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে। আর সীমানা জটিলতায় স্কুলের সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা হয়নি। এমন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা। এই ভবন ধসে পড়ে প্রাণহানিসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কায় আতঙ্কে রয়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৮ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯১ সালে একতলা পাকা ভবনটি নির্মাণ করা হয়। শিশুশ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রী আছে ৮১ জন। কিন্তু স্কুলভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় প্রায় প্রতি মাসেই শিক্ষার্থীরা অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবনের প্রয়োজন। ২৫টির মধ্যে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন। তার একটি ৮৬ নম্বর নাগড়া বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, ভবনের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে বড় বড় ফাটল। ছাদের পলেস্তারা খসে রড বের হয়ে গেছে। বারান্দার পিলারের রড বের হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলে ছাদ বেয়ে পানি পড়ে। শ্রেণিকক্ষের সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে জরাজীর্ণ ও পরিত্যক্ত ক্লাসরুমে চলছে পাঠদান। আবার স্কুলভবন ঘেঁষে পূর্বপাশে দোকানঘর তোলা হচ্ছে। 
এই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতি, চৈতি সাহা ও রহিমা বলে, ‘আমাদের ক্লাস করতে ভয় লাগে। কিন্তু স্যাররা ক্লাস করতে বলে, তাই ক্লাস করি। কখন ছাদ ভেঙে পড়ে বলা মুশকিল।’

নাগড়া বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আয়ুব আলী ফকির বলেন, ‘দিন-দিন ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি কমতে শুরু করেছে। আমি এসে ১৫০ জনের মতো ছাত্র-ছাত্রী পেয়েছি। এখন কমে ৮১ জন আছে। এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বাধ্য হয়ে পাঠদান করাতে হচ্ছে। শ্রেণিকক্ষে গেলে ভবনের ফাটলের দিকে 
চোখ পড়লে কক্ষে আর বসতে মন চায় না। ভয় লাগে, কখন না জানি ছাদ ধসে পড়ে।’

প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, ‘বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে ৮-১০টি দোকান নির্মাণাধীন ছিল। এখন কাজ বন্ধ। এভাবে জায়গা দখল হলে একসময় স্কুলের জায়গাই থাকবে না।’ 
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘উপজেলার ২৫টি বিদ্যালয়ের নামের তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তবে নাগড়া বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত