জাল জন্মনিবন্ধনে স্কুলে আবেদন, ভর্তি বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর ২০২২, ১২: ১৪

শিশুদের সরকারি স্কুলে ভর্তির লটারিতে নাম উঠানোর জন্য জালিয়াতি করার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন অভিভাবকের বিরুদ্ধে। নাম-ঠিকানা একই থাকলেও জন্মনিবন্ধন নম্বর জালিয়াতি করে তাঁরা একাধিক আবেদন জমা দিয়েছেন সন্তানের জন্য।

এভাবে আবেদন করা রাজশাহীর কয়েকজন একাধিক স্কুলে ভর্তির সুযোগ পেলে বিষয়টি ধরা পড়ে।

ভর্তি-সংক্রান্ত কমিটির সভায় এ শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। তারা অন্য কোনো সরকারি স্কুলে ভর্তির সুযোগ পাবে না।

গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভর্তি-সংক্রান্ত কমিটির সভা হয়। জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল এতে সভাপতিত্ব করেন। সভা সূত্রে জানা গেছে, সরকারি বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) লটারি করে। এতে কারিগরি সহায়তা দেয় টেলিটক। গত ৬ ডিসেম্বর অনলাইনে লটারিতে ভর্তির আবেদনের শেষ তারিখ ছিল। ১২ ডিসেম্বর লটারির ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

এরপর রাজশাহীর সাতটি সরকারি বিদ্যালয়ের মধ্যে চারটির ফলাফলে দেখা যায়, একজন শিক্ষার্থীর নাম একাধিকবার এসেছে। কোনো শিক্ষার্থীর প্রভাতি শাখাতেও আছে আবার দিবা শাখাতেও আছে। আবার একজন শিক্ষার্থীর নাম তিনবার পর্যন্ত এসেছে। ভর্তি-সংক্রান্ত কমিটি বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখতে পায়, যে শিক্ষার্থীদের নাম ফলাফলে একাধিকবার এসেছে তাদের নাম, বাবার ও মায়ের নাম একই থাকলেও জন্মনিবন্ধন নম্বরের কয়েকটি ডিজিট আলাদা।

ভর্তি মেধা তালিকায় দেখা যায়, রাজশাহী প্রমথনাথ সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে একটি বাচ্চার নাম প্রভাতি এবং দিবা-দুই শাখাতেই এসেছে। দেখা গেছে  জন্মনিবন্ধন নম্বর দুটি। শেষে চারটি ডিজিট একই, শুধু চার ডিজিটের আগের তিনটি ডিজিট পাল্টে দেওয়া হয়েছে।

একইভাবে রাজশাহী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ফলাফলে একজন শিক্ষার্থীর একইভাবে জন্মনিবন্ধন পরিবর্তন করে তিনবার ও রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলে দুইবার এসেছে নাম।

ভর্তি কমিটির সদস্য রাজশাহী সরকারি প্রমথনাথ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তৌহিদ আরা বলেন, সভায় তিনি উপস্থিত ছিলেন। যাদের একাধিকবার নাম এসেছে তাদের ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু চিন্তার বিষয় হচ্ছে কীভাবে জন্মনিবন্ধন নম্বর জাল হচ্ছে, সেটি।

যোগাযোগ করা হলে এক অভিভাবক বলেন, তাঁর বাচ্চার ভর্তি নিশ্চিত করার জন্য একাধিকবার আবেদন করেছেন। তাঁর দাবি, এর আগে এই পদ্ধতি অবলম্বন করে আরও অনেকে ভর্তি হয়েছে। অভিভাবক মিলন ভট্টাচার্য বলেন, তাঁর বাচ্চার নাম দুইবার এসেছে কি না তিনি জানেন না। তিনি দাবি করেছেন, তিনি একবার আবেদন করেছেন।

ভর্তি কমিটির সভাপতি ও রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে এই শিক্ষার্থীর অভিভাবকেরা একাধিক জন্মনিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করে একাধিকবার আবেদন করেছিলেন। লটারিতেও তাঁদের বাচ্চার নাম একাধিকবার এসেছে। ভর্তি-সংক্রান্ত কমিটির সভায় তাদের ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। তারা কোনো সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে না। এ ছাড়া লটারিতে যারা ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছে তাদের সবার নিবন্ধন নম্বর যাচাই করা হবে। জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের ভর্তিও বাতিল করা হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত