চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজে দেরি, ভোগান্তিতে নগরবাসী

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২২, ০৭: ১৬
আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২২, ০৮: ৫১

চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণপ্রকল্পের কাজ চলছে। এ কারণে নগরীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকাসহ বন্দর, কাস্টম হাউস এলাকার মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হলে ব্যবসায়ীদের এই দুর্ভোগ পোহাতে হতো না। ব্যবসায়ীদের দাবি, দ্রুততম সময়ে যেন প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয়।

এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ছোট-বড় প্রায় ৫০ হাজার যানবাহন চলাচল করে। শুধু যানজটের কবলে প্রতিদিন গড়ে এক শ্রমঘণ্টা সময় নষ্ট হয় ইপিজেডের কারখানাগুলোতে।

আগ্রাবাদ এলাকার ব্যবসায়ী মেসার্স তাকি এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. তোফাজ্জল হোসাইন বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়িক কারণে প্রতিদিন আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকার বিভিন্ন ব্যাংকে, শিপিং এজেন্ট, বন্দর ও কাস্টমসে একাধিকবার যাতায়াত করি। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজের কারণে আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় যানজটে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ধুলাবালিতে একাকার। এতে সাধারণ মানুষের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উন্নয়নকাজের কারণে নগরীর দেওয়ানহাট থেকে কাস্টম পর্যন্ত, চৌমুহনী, আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকা, ৩ নম্বর ফকিরহাট, নিমতলা পর্যন্ত মানুষের বেশি কষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া সল্টগোলা ক্রসিং, ইপিজেড, বন্দরটিলা, স্টিল মিল, কাঠগড়, পতেঙ্গা, সি বিচ রোড এলাকার ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত।

বর্তমানে দুবাইয়ে অবস্থান করা চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উন্নয়নকাজের জন্য কিছুটা দুর্ভোগ হবে কিন্তু এর মাত্রা এতটা হবে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় ব্যবসায়ীদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। তাই দ্রুত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ করা উচিত।’

চট্টগ্রাম নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র আগ্রাবাদ ব্যাংক পাড়া, চট্টগ্রাম বন্দর, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, বিএসসি, বিপিসি, প্রায় সব শিপিং এজেন্ট অফিস, চট্টগ্রাম ইপিজেড, কর্ণফুলী ইপিজেড, ছয়টি বেসরকারি অফডকসহ রয়েছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। চট্টগ্রাম ইপিজেড এবং কর্ণফুলী ইপিজেডে প্রায় ৪ লাখ শ্রমিক কাজ করে।

চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ বাদামতলি বিসিক মার্কেটের ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন বলেন, ‘সড়কের পাশে আমাদের ব্যবসা। বালুর কারণে পোশাক নষ্ট হয়ে যায়। ক্রেতারাও দাঁড়াতে চায় না। পেটের দায়ে নিরুপায় হয়ে এমন ধুলোবালির মধ্যেও ক্রেতার আশায় বসে থাকতে হয়। এভাবে ব্যবসা পরিচালনা করা কঠিন হচ্ছে।’

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরিচালক সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। মানুষের দুর্ভোগ যাতে না হয়, সে বিষয়ে আমরা খেয়াল রাখি। ধুলাবালি রোধে প্রতিদিন পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করি। ইতিমধ্যে প্রকল্পের কাজ প্রায় ৭০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৩ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।’

তবে এখন যে গন্তব্যে পৌঁছাতে আড়াই ঘণ্টা লাগছে, প্রকল্পের কাজ শেষ হলে সেখানে পৌঁছাতে সময় লাগবে ১৫ থেকে ২০ মিনিট।

সিডিএ সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেক সভায় ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকার এই প্রকল্প অনুমোদন পায়। সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই প্রকল্পের কাজ ৩ বছরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত